ব্যাংক বীমা অর্থনীতি >>> | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি আলহাজ্ব টেক্সটাইল ও অগ্রণী ব্যাংকের এফডিআর-সংক্রান্ত মামলার রায়ের কপি অগ্রণী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছেছে। গতকাল তারা রায়ের কপি গ্রহণ করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলহাজ্ব টেক্সটাইলের সচিব মো. শওকত আলী। নিয়ম অনুযায়ী কপি গ্রহণ করার পর ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংককে আলহাজ্ব টেক্সটাইলের পাওয়া প্রায় ৫৬ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে।
গত ১৩ জানুয়ারি উচ্চ আদালতের বিচারপতি মো. মামনুন রহমান ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের বেঞ্চ গতকাল আলহাজ্বের পক্ষে রায় দেন। রায়ে বলা হয়, আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আলহাজ্ব টেক্সটাইল কর্তৃপক্ষকে ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। অর্থ পরিশোধ করে সাত দিনের মধ্যে বিষয়টি আদালতকে অবহিত করার জন্য অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর আগে অগ্রণী ব্যাংক ও আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস কর্তৃপক্ষের যৌথ সম্মতিতে পিনাকি অ্যান্ড কোম্পানিকে অডিটর নিয়োগ করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, অডিটর স্বাধীনভাবে অগ্রণী ব্যাংকের সুদহার নির্ধারণ করবে। অডিট কোম্পানি ব্যাংক কর্তৃক সুদহার-সংক্রান্ত সার্কুলার পর্যালোচনা করে নির্ধারণ করে যে, ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত অগ্রণী ব্যাংকের কাছে আলহাজ্ব টেক্সটাইলের পাওনা হয়েছে ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫৭৮ টাকা।
১৯৮৯ সালে এফডিআর করা অর্থ যথাসময়ে ফেরত না দেওয়ায় ব্যাংকটির বিরুদ্ধে মামলা করে আলহাজ্ব টেক্সটাইল। অগ্রণী ব্যাংকের ঈশ্বরদী ব্রাঞ্চের কাছে এ কোম্পানির মোট ৫২ কোটি ৫৬ লাখ ৯ হাজার ৩৭৫ টাকা দাবি ছিল। পাওনা টাকা আদায়ে আলহাজ্ব টেক্সটাইল আদালতের দ্বারস্থ হয়। আদালত কোম্পানির পক্ষে রায় প্রদান করেন এবং ব্যাংকটিকে বাকি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন। কিন্তু অগ্রণী ব্যাংক আদালতের নির্দেশ সম্পূর্ণ না মেনে আট কোটি ১১ লাখ ২৫ হাজার দুই টাকা কোম্পানিকে প্রদান করে। পরে বাকি টাকা পাওয়ার জন্য কোম্পানিটি পুনরায় আদালতের শরণাপন্ন হয়।
আলহাজ্ব টেক্সটাইল সরকারি প্রতিষ্ঠান বা বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশনের (বিটিএমসি) অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে কোম্পানিটিকে বেসরকারিকরণ করা হয়। এর ফলে দুই কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার ৮০৫ টাকা ঋণ হিসেবে আসে, যা কোম্পানিটিকে পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু দেখা যায়, এ ঋণ হয়েছিল বিটিএমসির সময়ে। তাই এ টাকা পরিশোধের জন্য সরকার, বিটিএমসি, বিটিএমএ এবং ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে কোম্পানি, বিটিএমসি ও ব্যাংকের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
চুক্তিমতে, ঋণ পরিশোধের জন্য স্পেশাল ফান্ড গঠন করা হয়। ফান্ডটির ক্যাশ ক্রেডিট কোম্পানির পক্ষ থেকে দেওয়া হবে এবং সুদ ব্যাংক থেকে পরিশোধ করা হয়। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে ফান্ডটিতে দুই কোটি ৯ লাখ টাকা জমা করা হয়। পরবর্তীকালে চুক্তি অনুযায়ী স্পেশাল ফান্ডটি ফিক্সড ডিপোজিটে রূপান্তর করা হয় এবং লিয়েন মার্ক করে অগ্রণী ব্যাংকের হিসাবে রাখা হয়।
২০০৮ সালের ৩১ মে বিটিএমসির ঋণ পরিশোধ সম্পন্ন হয়। আর এ ঋণ পরিশোধের পর হিসাবে মোট ২৪ কোটি ৯৫ লাখ ৪২ হাজার ১৭৮ টাকা অবশিষ্ট থাকে। ফিক্সড ডিপোজিটের এ টাকা থেকে ব্যাংক কোম্পানিকে পাঁচ কোটি সাত লাখ ৬৪ হাজার ৭৯১ টাকা পরিশোধে সম্মত হয়। তাই কোম্পানিটি এফডিআরে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয় এবং ২০০৯ সালে ব্যাংকের বিরুদ্ধে রিট করে।
২০১১ সালে আদালত সুদসহ এফডিআরের টাকা কোম্পানিকে পরিশোধের জন্য ব্যাংককে নির্দেশ দেন। এ আদেশের বিপরীতে ব্যাংক আপিল করে ২০১৪ সালে। আপিল বিভাগ থেকেও নির্দেশ আসে এক মাসের মধ্যে এফডিআরের টাকা কোম্পানিকে পরিশোধের জন্য। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলে কোম্পানি টাকা আদায়ে সাপ্লিমেন্টারি রুলের জন্য আবেদন করে। এতে বলা হয়, ১৯৮৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত এফডিআর হয়েছে ৫২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। কিন্তু ব্যাংক আট কোটি ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | |||||
৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ |
১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ |
১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ |
২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ |