নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৯ মে ২০২০ | ৯:৩৪ অপরাহ্ণ
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ব্যাংক কর্মকর্তাদের করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এপর্যন্ত কোভিড-১৯ পজেটিভ ব্যাংকারের সংখ্যা মোট ৫৫ জন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়বে।
জানা গেছে আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন সোনালী ব্যাংকের ৩০ কর্মকর্তা। এছাড়াও অগ্রণী ব্যাংকের ৩ জন, রূপালী ব্যাংকের ৩ জন বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের ১০ জন, সাউথইস্ট ব্যাংকের ৩ জন, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ১ জন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ২ জন, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ১ জন ও সিটি ব্যাংকের ২ জন। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৫৬ জন ব্যাংকার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে মৃত্যু বরণ করেছেন ৪ জন। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন সোনালী ব্যাংকের ১ জন, রূপালী ব্যাংকের ১ জন ও দি সিটি ব্যাংকের ২ কর্মকর্তা।
গত ১৭ মে রোবাবার সোনালী ব্যাংকের ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার (পিও) মাহবুব এলাহী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও সোনালী ব্যাংকের আরও ২৯ জন কর্মকর্তা করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া শাখার ৬ কর্মকর্তা, রংপুর বাজার শাখার ৭ জন, ঢাকার শিল্পভবন করপোরেট শাখার ১ জন, রমনা করপোরেট শাখার ২ জন, ওয়েজ আর্নার্স করপোরেট শাখার ২ জন, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও শাখার ১ জন, আড়াইহাজারের ধুপতারা শাখার ১ জন, নারায়ণগঞ্জের নবীগঞ্জ শাখার ১ জন, নিতাইগঞ্জ শাখার ১ জন, নারায়ণগঞ্জ করপোরেট শাখায় ২ জন, ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ প্রিন্সিপাল অফিসের ১ জন, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ শাখায় ৩ জন আক্রান্ত ও মাদারীপুর শাখার ১ জন রয়েছেন।
জানা যায়, ইসলামী ব্যাংক সৈয়দপুর শাখার ৪ কর্মকর্তা জ্বর, সর্দি ও গলাব্যথায় ভুগছিলেন। লক্ষণ দেখেই ২৯ এপ্রিল শাখাটি লকডাউন ঘোষণা করা হয়।
৩০ এপ্রিল তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হলে শনিবার রাতে তাদের ফল পজিটিভ আসে। শাখাটিতে পরে আরও ২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া লোকাল অফিসে ২ জন, রমনা শাখায় ১ জন ও সুনামগঞ্জে ১ জন কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে ইসলামী ব্যাংকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০ জন কর্মকর্তা।
অন্যদিকে সাউথইস্ট ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখার ১ জন ও রাজধানীর বংশাল শাখার ২ সিকিউরিটি গার্ড করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
অগ্রণী ব্যাংকের সাভার নবীনগর শাখার ১ জন এবং ওয়াসা ভবন শাখার ১ জন কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। একজন কর্মকর্তা প্রাথমিক পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ আসায় ৯ এপ্রিল থেকে লকডাউন করা হয় অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের নিচতলায় অবস্থিত প্রধান শাখা। তবে ১১ এপ্রিল প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ব্যাংকটি জানায়, চূড়ান্ত রিপোর্টে করোনা নেগেটিভ এসেছে ওই কর্মকর্তার। তাই লকডাউন প্রত্যাহার করে পুনরায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে প্রধান কার্যালয়ে।
বেসরকারি মার্কেন্টাইল ব্যাংকের রাজধানীর দারুসসালাম শাখার এক কর্মকর্তার কোভিড-১৯ পজিটিভ আসায় শাখাটির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী হোসেন প্রধানিয়া জানান, তাদের ব্যাংকের ২ জন শাখা ব্যবস্থাপক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বিকল্প কর্মকর্তা দিয়ে উভয় শাখা চালু রাখা হয়েছে।
৩ মে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)-এর নীলফামারীর ডিমলা ডাঙ্গারহাট শাখার ১ কর্মকর্তা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। এ কারণে শাখাটির লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এছাড়া দি সিটি ব্যাংকের আক্রান্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে মৃত্যু বরণ করেছেন ২ জন। তাদের একজন হলেন মুজতবা শাহরিয়ার এবং অন্যজন আবু সাঈদ।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলও। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সারাদেশে চলছে ছুটি। বন্ধ বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সব ধরনের গণপরিবহন। যদিও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পোশাক কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। এছাড়া গত ১০ মে থেকে শর্তসাপেক্ষে খুলে দেয়া হয়েছে দোকানপাট ও শপিংমলও।
বাংলাদেশ সময়: ৯:৩৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৯ মে ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan