বিবিএনিউজ.নেট | শনিবার, ২৯ জুন ২০১৯ | প্রিন্ট | 560 বার পঠিত
বিদ্যুৎ সংযোগে টিআইএন বাধ্যতামূলক না করা, সঞ্চয়পত্রে বর্ধিত উৎসেকর প্রত্যাহার, পুঁজিবাজারের রিটেইনড আর্নিংস ও রিজার্ভের ওপর কর প্রত্যাহারসহ কয়েকটি সংশোধনীর মাধ্যমে জাতীয় সংসদে অর্থবিল-২০১৯ পাস হচ্ছে আজ শনিবার।
সংসদে ও সংসদের বাইরে বাজেটের কয়েকটি বিষয়ে সংশোধনীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে অর্থমন্ত্রী শনিবার সংসদে এসব সংশোধনীর প্রস্তাব আনবেন বলে মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
রীতি অনুযায়ী অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করবেন এবং স্পিকার তা পাসের জন্য কণ্ঠভোট দেবেন। এ সময় সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়ে বিলটি পাস করবেন। সেইসঙ্গে অর্থমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাবেন।
গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট ও অর্থবিল-১৯ উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। তারপর সংসদে তা আলোচনা হয়। আর শনিবার অর্থবিলটি পাস হবে। এর পরদিন রোববার ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট সংসদে পাস হবে।
অর্থবিল সংশোধনীতে যেসব প্রস্তাব করতে পারেন অর্থমন্ত্রী
বিদ্যুৎ সংযোগে টিআইএন বাধ্যতামূলকের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হচ্ছে। নতুন সংযোগ নিতে ও পুরনো গ্রাহকদের বিদ্যুৎবিল দিতে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়েছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের নতুন বাজেটে। অর্থবিল অনুমোদনের সময় এ প্রস্তাব প্রত্যাহার করা হবে বলে জানা গেছে। এর আগে এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য গত ২৪ জুন একটি ডিও লেটার (আধা সরকারি) অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠান বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
ডিও লেটারে তিনি লিখেছেন, দেশের ৯৩ ভাগ জনগোষ্ঠী বিদ্যুৎসেবার আওতায় এসেছে। দেশে এখন ৩ কোটি ৩৪ লাখ বিদ্যুৎগ্রাহক। এর মধ্যে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) গ্রাহকসংখ্যা ২ কোটি ৬৪ লাখ। এ গ্রাহকদের বেশির ভাগই দরিদ্র। এদের পক্ষে টিআইএন করা কষ্টদায়ক ও অমানবিক।
২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎসেকর ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করা হয়েছে। এমনকি সংসদেও এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য বলা হয়েছে। তাই সরকার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর বর্ধিত উৎসেকর প্রত্যাহার করতে যাচ্ছে।
তবে এ নিয়ে এখনো দুটি চিন্তা রয়েছে। এর একটি হলো, বাজারে প্রচলিত সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের ওপর থেকে বর্ধিত কর প্রত্যাহার করা হবে। অপরটি হলো, শুধু পরিবারভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্রের ওপর তা প্রত্যাহার করা হবে। এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এ সিদ্ধান্তের ভার প্রধানমন্ত্রীর হাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে রিটেইনড আর্নিংস ও রিজার্ভ ৫০ শতাংশের বেশি হলে ১৫ শতাংশ কর ধার্য করার কথা বলা হয়। একই সঙ্গে বাজেটে স্টক ডিভিডেন্ডের পরিবর্তে ক্যাশ বা নগদ ডিভিডেন্ড প্রদানকে উৎসাহিত করতে স্টক ডিভিডেন্ড প্রদান করলে লভ্যাংশের ওপর ১৫ শতাংশ করারোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ সিদ্ধান্তগুলো প্রত্যাহার করা হতে পারে।
এ ছাড়া মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে অগ্রিম কর প্রত্যাহার করা হচ্ছে। নতুন ভ্যাট আইনে এবার অগ্রিম ব্যবসায় ভ্যাটের (এটিভি) পরিবর্তে ৫ শতাংশ আগাম কর (এটি) বসানো হয়েছে। অর্থাৎ মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে ৫ শতাংশ অগ্রিম কর দিতে হবে। এতে দেখা গেছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার পণ্যে এ আগাম কর বসেছে। ভ্যাট রিটার্ন দিয়ে এ আগাম করের টাকা ফেরত নিতে হবে। এ টাকা ফেরত পাওয়ার মধ্যবর্তী সময়ে ব্যাংকের সুদ গুনতে হবে ব্যবসায়ীকে।
ফলে আমদানি পর্যায়ে এসব যন্ত্রপাতি ও পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। আর এর সরাসরি প্রভাব পড়বে ভোক্তাদের ওপর। বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে আগামী অর্থবছরের বাজেট পাসের সময় তা পরিবর্তন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আগামীকাল অর্থবিল সংসদে পাস করার সময় এই পরিবর্তনগুলো করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
Posted ১২:৩৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৯ জুন ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed