মঙ্গলবার ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x
সোনালী লাইফের সাবেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

আমি আইডিআরএ’র চেয়ারম্যানের ষড়যন্ত্রের শিকার : গোলাম কুদ্দুস

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ২৮ জুলাই ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   124 বার পঠিত

আমি আইডিআরএ’র চেয়ারম্যানের ষড়যন্ত্রের শিকার : গোলাম কুদ্দুস

১৮৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ও তার স্ত্রী-সন্তান, জামাতাসহ প্রতিষ্ঠানটির ৮ পরিচালক-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ।
গত বৃহস্পতিবার কমিশনের সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত দণ্ডবিধি ১৮৬০ এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ধারা ৪(২) ও (৩) এর অধীনে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আখতারুল ইসলাম গণমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ছাড়াও আসামি করা হয়েছে মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মেয়ে ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া, তার ছেলে মোস্তফা কামরুস সোবহান, তার মেয়ে তাসনিয়া কামরুন অনিকা, তার স্ত্রী ফজলুতুন্নেসা, কোম্পানিটির পরিচালক শাফিয়া সোবহান চৌধুরী, পরিচালক নূর-ই-হাফজা ও সাবেক সিইও ও জামাতা মীর রাশেদ বিন আমানকে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, উল্লেখিত ব্যক্তিরা বেআইনিভাবে আর্থিক সুবিধা লাভের অভিপ্রায়ে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
দুদকের তদন্তে উঠে আসে, তারা প্রতারণা ও জালিয়াতি, মিথ্যা চুক্তিপত্র তৈরি এবং অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের সাথে জড়িত। এর মাধ্যমে তারা বিভিন্ন মেয়াদে বীমা কোম্পানিটির তহবিল থেকে অবৈধভাবে ১৮৭ কোটি ৮৪ লাখ ১৫ হাজার ৯৬৬ টাকা উত্তোলন করেন। এসব অর্থ তারা ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর এবং বিভিন্ন স্তরের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তিগত সম্পদে রূপান্তর করেন।
দুদক আলামত পর্যালোচনা করে এসব অপরাধের প্রাথমিক প্রমাণ পায় এবং আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা নথিভুক্ত করে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পেইড আপ ক্যাপিটাল বৃদ্ধির জন্য ২০১৮ সালে উদ্যোক্তা পরিচালকদের মধ্যে প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা দরে এক কোটি পাঁচ লাখ প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নেয়। কোম্পানির পরিচালক ও প্রথম চেয়ারম্যান আসামি নূর-ই-হাফজা, পরিচালক ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া, রুপালি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি পরিচালক শাফিয়া সোবহান চৌধুরী ও শেখ মোহাম্মদ ডানিয়েলের (মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের জামাতা) কাছ থেকে কোনো টাকা গ্রহণ না করেই তাঁদের নামে মোট ৯ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার ইস্যু করা হয়।

দুদকের মামলার প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, অবৈধভাবে প্রতারণার ও বিধি বহির্ভূতভাবে একই পরিবারের ৭ সদস্যকে কোম্পানির বোর্ড পরিচালক করা হয়। মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের জামাতা আসামি মীর রাশেদ বিন আমানকে কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগ দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করা হয় মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় আরও দেখা যায় যে, আসামি মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস সুপরিকল্পিতভাবে চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে ১৪১ কোটি ৫৬ লাখ ৯০ হাজার ৫০০ টাকা প্রদান, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস নিজে ও পরিবারের সদস্যদের নামে অবৈধভাবে বেতন হিসেবে দেখিয়ে মোট ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা, অন্যদিকে কোম্পানির টাকায় নিজেদের জন্য শেয়ার ইস্যু বাবদ ৯ কোটি ১৬ লাখ ৫০ টাকা, ইআরপি মেইনটেন্যান্স বাবদ ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৬৮ হাজার ৮১৭ টাকা, অবৈধভাবে বিলাসবহুল অডি কার ক্রয় বাবদ ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা, পরিবারের সদস্য অতিরিক্ত ডিভিডেন্ড প্রদান বাবদ ১ কোটি ৬০ লাখ ১০ হাজার ৭৫০ টাকা, বিদেশে নিজের চিকিৎসা, সন্তানের শিক্ষা, ভ্রমণ ব্যয় বাবদ ১ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার ৮০০ টাকা, গ্রুপ বিমা পলিসি থেকে অবৈধ কমিশন বাবদ ১৯ লাখ টাকা, আইপিও খরচের নামে অবৈধ ব্যয় বাবদ ৮ কোটি ২৬ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫৯ টাকা, অফিস ভাড়ার নামে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ড্রাগন আইটিকে প্রদান বাবদ ১১ কোটি ৯৪ লাখ ২০ টাকা, নিজ মালিকানাধীন পুরো ভবনের ইউটিলিটি বিল পরিশোধ বাবদ ১ কোটি ৭২ লাখ ৪২ হাজার ২২৩, নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ড্রাগন সোয়েটার ও স্পিনিং লিমিটেডের ট্যাক্স পরিশোধ বাবদ ১৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ১৮৭ কোটি ৮৪ লাখ ১৫ হাজার ৯৬৬ টাকা আত্মসাৎ করেন।

মামলার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আইনগতভাবে মোকাবিলা করার কথা জানিয়ে কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ব্যাংক বীমা অর্থনীতিকে বলেন, ‘আমি গভীর চক্রান্তের শিকার। ব্যক্তিগত আক্রোশে আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান আমাকে এবং আমার পরিবারকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। আর এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছেন কোম্পানির সাবেক সিইও মীর রাশেদ বিন আমান। তারা কোম্পানি থেকে আমাদের উৎখাত করে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের নিয়োগ দেওয়ার চক্রান্ত করছেন।

 

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৯:১৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৮ জুলাই ২০২৪

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।