| রবিবার, ০৮ মে ২০২২ | প্রিন্ট | 313 বার পঠিত
ব্যাংক-বীমা-অর্থনীতি: ইতিমধ্যে ইসলামি বীমা বিধিমালা’র একটি খসড়া প্রস্তুত করেছে আইডিআরএ। যেটি অংশীজনের মতামত গ্রহণ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এই বিধিমালায় ইসলামি বীমা ব্যবস্থার কোন বিষয়গুলোকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে? কবে নাগাদ এটি চূড়ান্ত হতে পারে?
ড. এম. মোশাররফ হোসেন: ইসলামি বীমা বিধিমালার এই খসড়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বীমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের যতটুকু করণীয় রয়েছে, তা মোটামুটি শেষ পর্যায়ে। এখন শুধুমাত্র স্টেকহোল্ডারদের (অংশীজন) সাথে সভা করে, তাদের মতামত নিয়ে এটি চূড়ান্ত করতে হবে। এখন শুধুমাত্র এই বিষয়টিই বাকী রয়েছে। এরপর আমরা এটি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিতে পারব। মন্ত্রণালয়ও কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। মন্ত্রণালয় এই বিধিমালার খসড়া ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে এবং সেখানেও স্টেকহোল্ডারদের মতামত নেয়ার জন্য সভা হবে। মতামত থাকলে সে আলোকে সংযোজন-বিয়োজন করা হবে। এরপর এটি লেজিসলেটিভে পাঠনো হবে। সেখানে অনুমোদিত হলে গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে। এখন যে পর্যায়ে আছে আশা করা যাচ্ছে যে, আগামী ছয়-সাত মাসের মধ্যে চূড়ান্ত একটি পর্যায়ে যাবে।
আরেকটি প্রশ্ন আপনি করেছেন যে, এই বিধিমালায় ইসলামি বীমা ব্যবস্থার কোন বিষয়গুলো আনা হয়েছে। মূলত ইসলামি অপারেশন অনেকগুলো কোম্পানিরই রয়েছে। বীমা আইন-২০১০ এর ৭ ধারায় ইসলামি শরীয়াহ অনুযায়ী পরিচালিত বীমা ব্যবসার সুযোগ দেয়া হয়েছে। যে কেউ চাইলে ওই আইনের অধীনে কার্যক্রম চালাতে পারে। কিন্তু এটির বিধি না থাকাতে কীভাবে অ্যাকাউন্টসটা হবে , কীভাবে লাইফগুলোর ভ্যালুয়েশন হবে, নন-লাইফগুলোর রিজার্ভ ফর রিস্ক কীভাবে রাখা হয়, কীভাবে রাখতে হবে, সলভেন্সিটা কী ধরনের হবে এসব বিষগুলো সুস্পষ্ট নয়। ইসলামি বীমার অনেকগুলো মডেল আছে। যেমন মুদারাবা মডেল, ওয়াকালাহ মডেল, হাইব্রিড মডেল। এ রকম নানা ধরনের মডেল আছে। ফান্ডও আছে। যেমন, মুদারাবা ফান্ড (পি আইএফ); তাকাফুল ফান্ড (তাবাররু); অপারেটর বা শেয়ারহোল্ডার ফান্ড; ফাউন্ডেশন ফান্ড। এই ফান্ডগুলো কীভাবে ভিন্নভাবে ম্যানেজ করা যায়, এসব বিষয়গুলোই বিধিমালাতে স্থান পেয়েছে।
ব্যাংক-বীমা-অর্থনীতি: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইসলামি বীমাকে জনপ্রিয় এবং শরীয়াহর আলোকে পরিপূর্ণভাবে গ্রহণযোগ্য করতে এই বিধিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কতটা জরুরি বলে মনে করেন?
ড. এম. মোশাররফ হোসেন: বাংলাদেশে ইসলামি বীমার সম্ভাবনা ব্যাপক। এটি হলে আশা করা যায়, ইসলামি ইন্স্যুরেন্স আরো বেগবান হবে। কোম্পানিগুলো তাদের দায়দায়িত্ব নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে সম্পন্ন করবে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে। ইসলামি বীমা বিধিমালার কারণে বাংলাদেশের বীমা খাত উন্নয়নের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।
ব্যাংক-বীমা-অর্থনীতি: ইসলামি বীমা বিধিমালা প্রণীত হওয়ার পরেও কোম্পানিগুলোকে শরীয়াহভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে নতুন কোনো বাধায় পড়তে হবে কি না?
ড. এম. মোশাররফ হোসেন: আমি মনে করছি না যে, ইসলামি বীমা বিধিমালা প্রণীত হওয়ার পরে বাংলাদেশে ইসলামি বীমা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোকে নতুন কোনো বাধায় পড়তে হবে। কারণ প্রায় ২২ বছর ধরে বাংলাদেশে ইসলামি বীমা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সুতরাং ইসলামি বীমা বিধিমালা হওয়ার পরে নতুন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার শঙ্কা নেই। বিধিমালা প্রণয়নের উদ্দেশ্য, মূলত আইনি কাঠামো দিয়ে বিষয়টিকে আরেকটু শক্তিশালী করা। দায়বদ্ধতার মধ্যে নিয়ে আসা। প্রতিপালনের প্রতি দায়বদ্ধ করা। দেখা গেছে বিধি না থাকলে যা পালন করা হতো না, তা হবে। যেমন, তাবাররু ফান্ড আলাদা করতেই হবে। এতদিন হয়তো এটি আলাদা ছিল না। লাইফফান্ডের ভেতরেই ছিলো। সুতরাং ইসলামি বীমা বিধমালায় কোনো সমস্যা হবে না বরং সুবিধা হবে।
ব্যাংক-বীমা-অর্থনীতিকে সাক্ষাৎকার দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ড. এম. মোশাররফ হোসেন: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
Posted ৬:৪০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৮ মে ২০২২
bankbimaarthonity.com | Sajeed