মঙ্গলবার ২৫ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১১ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ৬ হাজার ৮শ কোটি টাকা

হেলাল সাজওয়াল   |   বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫   |   প্রিন্ট   |   190 বার পঠিত

ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ৬ হাজার ৮শ কোটি টাকা

বাংলাদেশ ব্যাংকের তারল্য সহায়তা পেয়েও নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করতে পারছে না বেসরকারি ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি। বর্তমানে ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি ৬ হাজার ৮শ ৭২ কোটি টাকা। এতে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ব্যাংকটি।

২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটির তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর এ ঘাটতির পরিমাণ ছিল মাত্র দেড় কোটি টাকা।
সেপ্টেম্বর ৩০ শেষে তৃতীয় প্রান্তিকে প্রভিশন প্রয়োজন ছিল ৭ হাজার ৬শ ৯৩ কোটি টাকা। ব্যাংকটি সেখানে মোট প্রভিশন রাখতে পেরেছে মাত্র ৮শ ২২ কোটি টাকা।

ব্যাংকগুলো তাদের নিয়মিত বা অশ্রেণিকৃত ঋণের বিপরীতে পরিচালন মুনাফার ০ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত, নিম্নমানের শ্রেণিকৃত ঋণের বিপরীতে ২০ শতাংশ এবং সন্দেহজনক শ্রেণিকৃত ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ প্রভিশন হিসেবে সরিয়ে রাখে। তবে মন্দ ও ক্ষতিকর শ্রেণিকৃত ঋণের বিপরীতে ব্যাংককে ১০০ শতাংশ অর্থ প্রভিশন হিসেবে আলাদা করে রাখতে হয়।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন ব্যাংকটি প্রভিশন ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে উচ্চ হারে ঋণ খেলাপির কারণে, এটি আমানতকারীদের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকার কারণে ব্যাংকটির মন্দ ঋণ গত বছর ব্যাপক হারে বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে ইউনিয়ন ব্যাংকের মন্দ ঋণ ১১ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ২১৮ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সমাপ্ত বছরে মন্দ ঋণের পরিমাণ ছিল ৯২৬ কোটি টাকা। গত জুনে ইউনিয়ন ব্যাংকের মোট ঋণ ছিল ২৭ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে এস আলম গ্রুপ ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ ১৭ হাজার ২২৯ কোটি টাকা, যা ব্যাংকটির মোট ঋণের ৬২ শতাংশ। গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকটির এমডিকে পাঠানো এক চিঠিতে জানানো হয়েছে, ‘ইউনিয়ন ব্যাংকে এস আলম গ্রুপের ঋণ প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। সেই হিসেবে মন্দ ঋণের পরিমাণ আরও বেশি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৪৩ বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ছিল এক লাখ ৪৯ হাজার ৮০৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ছিল ৮১ হাজার ৫৩৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এটি গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ইউনিয়ন ব্যাংকসহ ১১ ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ব্যাংকটিতে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল ব্যাংক খেকো এস আলম গ্রুপের। এখন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকটি গ্রাহকদের আমানতের টাকা ঠিকভাবে দিতে পারছে না। এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা আরও তিনটি ব্যাংকের চাইতেও ইউনিয়ন ব্যাংকের মন্দ ঋণ বেড়েছে ব্যাপক হারে।

২০২৩ সালের চেয়ে ২০২৪ সালে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১০ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের মন্দ ঋণ তিন হাজার ৫৭০ কোটি ৯১ লাখ টাকা বেড়ে তিন হাজার ৮১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা হয়েছে। এছাড়া এবি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ চার হাজার ১৭৬ কোটি টাকা বেড়ে ১০ হাজার ১১৬ কোটি টাকা হয়েছে। পক্ষান্তরে ইউনিয়ন ব্যাংকের মন্দ ঋণ ১১ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ২১৮ কোটি টাকা।

 

Facebook Comments Box
top-1

Posted ৮:৫৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।