| ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ | ৩:০৪ অপরাহ্ণ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রীয় মালিকানার কোম্পানি ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদে বেসরকারি বিআরবি ক্যাবলসের চার প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। আদালতের নির্দেশে তাদেরকে পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এদের প্রত্যেকেই ইস্টার্ন ক্যাবলসের ৫ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করছেন। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
নতুন পরিচালকদের মধ্যে রয়েছেন খোদ বিআরবি ক্যাবলস ও বিআরবি গ্রুপের কর্ণধার মুজিবুর রহমান। অন্য তিনজন হচ্ছেন- বিআরবি ক্যাবলসের পরিচালক শামসুর রহমান, পরিচালক এমদাদুল হক হক এবং নির্বাহী পরিচালক মফিজুর রহমান।
অন্যদিকে ন্যুনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ না করায় ইস্টার্ন ক্যাবলসের পরিচালনা পর্ষদ থেকে বাদ পড়েছেন লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের প্রতিনিধি প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির উদ্দিন চৌধুরী ও পরিচালক মাহবুবুল আনাম। বাদপড়া অন্য দু’জনের একজন হচ্ছেন- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেকহোল্ডার বুলবুল সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহদুল হক বুলবুল। অন্যজন আফসার-উজ জামান।
নতুন পরিচালকদের মধ্যে মুজিবুর রহমান ইস্টার্ন ক্যাবলসের ১৩ দশমিক ৫৯ লাখ শেয়ার ধারণ করছেন, যা মোট শেয়ারের ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ। শামসুর রহমান ধার করছেন ২ দশমিক শুন্য ৪ শতাংশ শেয়ার (৪ লাখ ৮৮ হাজার শেয়ার), এমদাদুল হকের হাতে আছে ৫ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ার (সংখ্যায় ১২ লাখ ২৪ হাজার) এবং মফিজুর রহমানের হাতে আছে ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ শেয়ার ( ১১ লাখ ৯৬ হাজার)।
উল্লেখ, ইস্টার্ন ক্যালস লিমিটেড এবং বিআরবি ক্যাবলস লিমিটেড উভয়ে ইলেকট্রিক ক্যাবল বা বৈদ্যুতিক তার উৎপাদন করে থাকে। এক দশক আগেও ইস্টার্ন ক্যালস ছিল ক্যাবলসের বাজারে মার্কেট লিডার। কিন্তু বেসরকারি বিআরবি ক্যাবলসের বিস্ময়কর উত্থান এবং নিজেদের কোম্পানি পরিচালনায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, অনিয়ম, সিদ্ধান্ত গ্রহণে দীর্ঘসূত্রিতা ইত্যাদি কারণে শীর্ষ স্থান থেকে ছিটকে পড়ে তারা। শীর্ষস্থানটি দখর করে নেয় বিআরবি ক্যাবলস।
ইস্টার্ন ক্যাবলসের পরিচালনা পর্ষদে বিআরবি ক্যাবলসের প্রতিনিধির অন্তর্ভুক্তিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশা ও উদ্বেগ-দুটোই কাজ করছে। কারণ বাজারে কোম্পানি দুটি পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী। বিআরবি ক্যাবলসের প্রতিনিধিরা চাইলে ইস্টার্ন ক্যাবলসের পলিসি ও ব্যবস্থাপনাকে প্রভাবিত করে কোম্পানিটিকে আরও দুর্বল করে দিয়ে নিজেদের আধিপত্যকে আরও সুদৃঢ় করার চেষ্টা করতে পারে। আবার তারা যে কৌশল ও দক্ষতার মাধ্যমে বিআরবি’র জন্য অভাবিত সাফল্য আনতে সক্ষম হয়েছে, সেই কৌশল, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে ইস্টার্ন ক্যাবলসকেও নতুন সম্ভাবনার দিকে নিয়ে যেতে পারে। বাস্তবে কী ঘটবে তার জন্য বেশ কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে।
উল্লেখ, বিআরবি ক্যাবলসের আলোচিত চার পরিচালক ২০১৭ সালে পুঁজিবাজার থেকে ইস্টার্ন ক্যাবলসের প্রায় ৭০ লাখ শেয়ার কিনে নেন। পরবর্তীতে তারা কোম্পানির পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কোম্পানিকে চিঠি দেন। কিন্তু কোম্পানিটি এ বিষয়ে সাড়া না দিলে তারা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) শরনাপন্ন হন। অন্যদিকে শিল্প মন্ত্রণালয় তার অধীন ইস্টার্ন ক্যাবলসের পক্ষ নিয়ে বিএসইসিকে চিঠি দেয়, তারা যেন বিআরবি ক্যাবলসের চার পরিচালককে ইস্টার্ন ক্যাবলসের পরিচালক না হওয়ার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়। এমন অবস্থায বিষয়টি আদালতে গড়ায়। সম্প্রতি আদালত ইস্টার্ন ক্যাবলসকে ২ শতাংশের কম শেয়ারধারী পরিচালকদের সরিয়ে ৫ শতাংশ শেয়ারধারীদেরকে পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে বিআরবি ক্যাবলসের আলোচিত চার প্রতিনিধিকে ইস্টার্ন ক্যাবলসের পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ৩:০৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৭ জানুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed