
বিবিএনিউজ.নেট | সোমবার, ০৩ জুন ২০১৯ | প্রিন্ট | 715 বার পঠিত
টাঙ্গাইলের বহু কৃষক ধান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এবার বোরো মৌসুমে উৎপাদন খরচের চেয়ে ধানের দাম কম হওয়ায়, কৃষকদের লোকসান গুনতে হয়েছে। হাতে টাকা না থাকায় ছেলেমেয়েদের জামা-কাপড়সহ প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে পারছেন না কৃষকরা। তাই টাঙ্গাইলের কৃষকদের ঘরে নেই ঈদের আনন্দ। হতাশা কাজ করছে কৃষক পরিবারের সন্তানদের মাঝে।
মির্জাপুরের তরফপুর গ্রামের কৃষক তারা মিয়া বলেন, ‘ধানের মূল্য কম এবং শ্রমিকের মূল্য বেশি থাকায়, এবার ধানের বিঘাপ্রতি (৩৩ শতাংশ) প্রায় সাড়ে ছয় হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। এত টাকা লোকসান হলে ঘরে ঈদের আনন্দ থাকবে কীভাবে? এক মণ ধান বিক্রি করে একটি লুঙ্গি ও পাঁচ মণ ধান বিক্রি করে মেয়ের জামা কিনতে হয়। এখনও ছেলে-মেয়ের নতুন জামা-কাপড় কিনে দিতে পারিনি। ২০ মণ ধান বিক্রি করলেও ঈদে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করা সম্ভব নয়।’
বাসাইল উপজেলার কলিয়া গ্রামের কৃষক কান্দু মিয়া বলেন, ‘দেড় মণ ধান বিক্রি করে একজন শ্রমিকের মূল্য দিতে হয়েছে। ধানে লোকসান হওয়ায়, ঈদ উপলক্ষে ছেলেমেয়েদের জন্য কিছুই কিনতে পরেনি।’
কান্দু মিয়ার এক মেয়ে ও তিন ছেলে রয়েছে। চার সন্তানই রাতকানাসহ শারীরিক প্রতিবন্ধী। পরিবারে অন্য কোনও উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকায়, ৫৫ বছর বয়সী কান্দু মিয়াকেই এখনও পরিবারের হাল ধরতে হচ্ছে।
সখীপুর উপজেলার শোলাপ্রতীমা গ্রামের কৃষক আয়নাল হক বলেন, ‘এবার চার বিঘা জমিতে ধান আবাদ করি। উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় লোকসান গুনতে হয়েছে। ২০ মণ ধান বিক্রি করে শ্রমিকের মজুরি দিয়েছি। এখন গোলায় অল্প কিছু ধান আছে। পরিবারের কোনও সদস্যকেই ঈদের জামা-কাপড় কিনে দিতে পারিনি। ধানের দাম বেশি থাকলে হয়তো আরও কিছু ধান বিক্রি করে তাদের নতুন জামা-কাপড় কিনে দিতে পারতাম।’
কৃষকদের দাবি, সরকার ধান কাটা ও মাড়াই করার জন্য এলাকায় যন্ত্র সরবরাহ করুক। সেইসঙ্গে ন্যায্য মূল্যে ধান কেনার ক্ষেত্রে সুদৃষ্টি দিক।
এবার টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় এক লাখ ৭১ হাজার ৭০২ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ হয়েছে বলে জেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে।
Posted ১১:২০ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৩ জুন ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed