বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

ঈদ বাজারে ৩০ হাজার কোটি টাকার কেনাকাটা

বিবিএনিউজ.নেট   |   শুক্রবার, ৩১ মে ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   663 বার পঠিত

ঈদ বাজারে ৩০ হাজার কোটি টাকার কেনাকাটা

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জমজমাট হয়ে উঠেছে রাজধানীর পোশাকের দোকানগুলো। ইতোমধ্যে ঈদকে রাঙিয়ে দিতে নিজের ও পরিবারের পছন্দের পোশাক কিনে নিয়েছেন অনেকেই। যারা এখনও কেনাকাটা শেষ করতে পারেননি, তারা পছন্দের পোশাকটি কিনতে ছুটছেন এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেটে। ফলে সকাল থেকে রাত অবধি ক্রেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠছে বিভিন্ন মার্কেট।

শুধু ঈদুল ফিতর নয়, যে কোনো উৎসবেই উৎসব প্রিয় বাঙালি মেতে ওঠেন নতুন পোশাক কেনাকাটায়। তবে অন্যান্য উৎসবের তুলনায় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পোশাক বিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি। অবশ্য নতুন পোশাক বিক্রির ধুম পড়ে যাওয়া রোজার মাস ধরে কতো টাকার পোশাক বিক্রি হয় তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই।

সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো অনুমান নির্ভর একটি ধারণা দিয়ে থাকেন। রোজার মাসব্যাপী পোশাক বিক্রি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এই ধারণা দেয়া হয়। ঈদ কেন্দ্রিক বিক্রি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, আমরা আশা করছি এবার ঈদ কেন্দ্রিক পোশাক বিক্রি হবে ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা।

এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, এবার ঈদ কেন্দ্রিক কী পরিমাণ বিক্রি হয়েছে, তার সঠিক তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তবে গত বছর ২৫ হাজার কোটি টাকার মতো বিক্রি হয়েছিল। এবার এখন পর্যন্ত বিক্রি পরিস্থিতি বেশ ভালো। ধারণা করা হচ্ছে, এবার বিক্রির পরিমাণ ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার কম হবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ উৎসব প্রিয়। আর যে কোনো উৎসবেরই কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে নতুন পোশাক। তাই উৎসব আসলেই নতুন পোশাকের বিক্রি বেড়ে যায়। সারা বছর বিক্রি হয় ২০ শতাংশের মতো, বাকি ৮০ শতাংশ বিক্রি বিভিন্ন উৎসব কেন্দ্র করে। আর উৎসব কেন্দ্রিক যে বিক্রি, তার সিংহভাগই হয় রোজার ঈদে।

তিনি আরও বলেন, মাসব্যাপী রোজা থাকার পর সবাই নতুন পোশাক পরে ঈদের আনন্দে মেতে ওঠেন। পৃথিবীর কোনো দেশে আমাদের মতো এতো উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ঈদ উদযাপন করা হয় না।

এদিকে বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদ বাজারের কেনাকাটার মূল আকর্ষণ হিসেবে নতুন পোশাক থাকলেও জুতা, লেডিস ব্যাগ, মানিব্যাগ, স্বর্ণালঙ্কার ও ইমিটেশন, প্রসাধনী, বেল্ট, ফার্নিচার, মোবাইল ফোন, টেলিভিশন, গাড়িসহ বিভিন্ন পণ্যের বিক্রির পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে যায়। এসব বিষয় হিসাবে নিলে ঈদ কেন্দ্রিক বিভিন্ন পণ্যের বিক্রির পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

রাজধানীতে যে কয়টি বড় পোশাকের মার্কেট আছে তার মধ্যে অন্যতম নিউ মার্কেট। নিম্ন, মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত সব শ্রেণি-পেশার মানুষ পছন্দের পোশাক কিনতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন এই মার্কেটে। মেয়েদের শাড়ি, থ্রি-পিস, টু-পিস, ওয়ান-পিস, থান কাপড়সহ সকল ধরনের ব্যবহার্য পণ্য আছে এখানে। ছেলেদের জন্যও লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, জামা, প্যান্ট, গেঞ্জিসহ সব পণ্য আছে।

নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মতে, এবার ঈদ কেন্দ্রিক মার্কেটিতে হাজার কোটি টাকার ওপরে পোশাক বিক্রি হয়েছে। এছাড়া বাসা-বাড়ির ব্যবহারের পণ্যের বিক্রির পরিমাণও বেশ ভালো। তবে ছেলেদের পোশাকের তুলনায় বরাবরের মতো মেয়েদের পোশাকের বিক্রির পরিমাণই বেশি।

মো. মিলন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, নিউ মার্কেটে সরাবছরই ক্রেতাদের ভিড় থাকে। তবে ঈদের সময় ক্রেতাদের ভিড় কয়েকগুণ বাড়ে। আমাদের ধারণা সরা বছর যা বিক্রি হয়, শুধু রোজার ঈদ কেন্দ্রিক তার সমান বিক্রি হয়। এবার রোজার ঈদ উপলক্ষে এখনেও পর্যন্ত যা বিক্রি হয়েছে, তাতে এই মার্কেটের সবাই মিলে আনুমানিক হাজার কোটি টাকার ওপরে বিক্রি করেছেন।

নিম্ন-মধ্যবিত্তদের পছন্দের আরেকটি স্থান রাজধানী সুপার মার্কেট। এই মার্কেটে নারী, পুরুষ ও শিশুদের পোশাক বিক্রি করেন শতাধিক ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোজার ঈদ কেন্দ্রিক এবার প্রত্যেক ব্যবসায়ী গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার পোশাক বিক্রি করেছেন। আর সব ব্যবসায়ীর বিক্রির পরিমাণ একত্র করলে এর পরিমাণ ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকা হবে।

মার্কেটটিতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছে মো. মাসুম। তিনি বলেন, এবার ঈদ উপলক্ষে বিক্রির পরিমাণ বেশ ভালো। আমরা আশা করছি, চাঁদ রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় থাকবে। অনেক ক্রেতা আছেন কিছুটা কম দামে পাওয়ার আশায় চাঁদ রাতে কেনেন। আমরাও বাড়তি বিক্রির আশায় চাঁদ রাতে দাম কিছুটা কম রাখি।

মাসুম বলেন, এবার গড়ে প্রতিদিন দেড় লাখ টাকার মতো বিক্রি করেছি। আমাদের আরেকটি দোকান আছে, ওটাতেও বিক্রির চিত্র এমনই। নারী-পুরুষ সবার পোশাকই বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে নারীদের পোশাক। শুধু এবার নয়, যে কোনো উৎসবেই নারীদের পোশাক সব থেকে বেশি বিক্রি হয়।

শুধু নিউ মার্কেট ও রাজধানী সুপার মার্কেট নয়, ঈদ উপলক্ষে গাউসিয়া, সদরঘাট, ইসলামপুর, গুলিস্থান, কারওয়ান বাজার, বসুন্ধরা, মালিবাগ, শান্তিনগর, মৌচাকসহ রাজধানীর প্রতিটি অঞ্চলের পোশাকের মার্কেটগুলো জমজমাট হয়ে উঠেছে। সকাল থেকে রাত অবধি বিরামহীন ক্রেতাদের সামলাচ্ছেন ব্যবসায়ী ও বিক্রয়কর্মীরা।

শান্তিনগরে অবস্থিত টুইন টাওয়ারের ব্যবসায়ী মো. রুহুল আমিন বলেন, এবার রোজার শুরুতে বিক্রি পরিস্থিতি খুব একটা ভালো ছিল না। তবে ১৫ রোজার পর থেকে বিক্রি বেশ ভালো হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত যা বিক্রি হয়েছে তাতে গড়ে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই লাখ টাকা বিক্রি করতে পেরিছি। শুধু আমি না, ঈদ উপলক্ষে এই মার্কেটের প্রত্যেক ব্যবসায়ী প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার পোশাক বিক্রি করেছে।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ২:৫৭ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ৩১ মে ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11497 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।