বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একদিনে গ্রামীণফোনের শেয়ারহোল্ডাররা পেলেন সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা

বিবিএনিউজ.নেট   |   শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   432 বার পঠিত

একদিনে গ্রামীণফোনের শেয়ারহোল্ডাররা পেলেন সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা

গ্রামীণফোনের সঙ্গে পাওনা নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হবে অর্থমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পর বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার দামে বড় উত্থান হয়েছে। একদিন কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ওপর।

অথচ সরকারের সঙ্গে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ শুরুর পর গ্রামীণফোনের শেয়ার দামে বড় দরপতন হয়। পাওনা আদায়ে সরকার যত কঠোরের ইঙ্গিত দিতে থাক গ্রামীণফোনের শেয়ারের দাম তত পড়তে থাকে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সার্বিক শেয়ারবাজারে।

শেয়ারের ধারাবাহিক দরপতনের কবলে পড়ে গ্রামীণফোনের শেয়ারহোল্ডাররা হারান প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। তবে আলোচনার মাধ্যমে গ্রামীণফোনের সঙ্গে সব সমস্যা সমাধানের বিষয়ে সরকার ইঙ্গিত দেয়ায় কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে। এতে একদিনে কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা ফিরে পেয়েছেন সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ওপর।

টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) গ্রামীণফোনের কাছে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা পাওনা দাবির পর থেকেই শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির দাম কমতে থাকে।

বিটিআরসি গত ২ এপ্রিল গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা পাওনা দাবি করে চিঠি দেয়। এর মধ্যে বিটিআরসির পাওনা ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি ১ লাখ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পাওনা ৪ হাজার ৮৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।

বিটিআরসির পাওনার মধ্যে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সুদের পরিমাণ রয়েছে ৬ হাজার ১৯৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এসব পাওনা পরিশোধে গ্রামীণফোনকে প্রথমবারের মতো দেয়া চিঠিতে ১০ কার্যদিবস সময় দেয় বিটিআরসি। রিপ্লেসমেন্ট সিমের জন্য ট্যাক্স, টু’জি লাইসেন্স নবায়ন ফি ও ইন্টারেস্ট বাবদ এ টাকা দাবি করে বিটিআরসি, যা মূল্যায়ন করেছে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল।

বিটিআরসি থেকে পাওনা টাকা দাবি করে যেদিন গ্রামীণফোনকে চিঠি দেয়া হয় তার আগের কার্যদিবসে অর্থাৎ ১ এপ্রিল কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৪১৭ টাকা। বিটিআরসি থেকে পাওয়া দাবির দিন থেকেই গ্রামীণফোনের শেয়ারের দাম কমতে থাকে। অব্যাহত দরপতনের কারণে বুধবার লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৩০৮ টাকায়।

এ হিসাবে প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ১০৯ টাকা। গ্রামীণফোনের মোট শেয়ার সংখ্যা ১৩৫ কোটি ৩ লাখ ২২টি। অর্থাৎ অব্যাহত দরপতনে গ্রামীণফোনের শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে কমে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা।

এ পরিস্থিতিতে বুধবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া, বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাইকেল ফলিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণফোন একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, তারা তাদের কথা বলছে। আমরা আমাদের দাবি করেছি। আমরা যদি বিরোধে জড়িয়ে থাকি তবে অনেক সময় চলে যাবে। এটা তাদের ব্যবসাকে ক্ষতিগ্রস্ত এবং আমাদের রাজস্ব প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে। আমরা কয়েক দিন থেকেই আলাপ-আলোচনা করছিলাম। তাদের সঙ্গে একটা সমাধানে আসা উচিত। সমাধানটি একটি উইন উইন সিচুয়েশন থেকে হবে। আমরাও হারব না তারাও হারবে না।

অর্থমন্ত্রীর এ মন্তব্যের পর বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরুর পর পরই গ্রামীণফোনের শেয়ার দাম বাড়তে থাকে। দিনের লেনদেন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৬ টাকা ৯০ পয়সা বা ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। এতে কোম্পানির শেয়ারগুলোর দাম সম্মিলিতভাবে বেড়েছে ৩ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা।

শেয়ারবাজারের সব থেকে বড় মূলধনের প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের এমন দাম বাড়ার কারণে সার্বিক বাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যে কারণে বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৭৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হলেও সূচকের বড় পতন হয়নি। মূলত গ্রামীণফোনের দাম বাড়ায় বাজার বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, গ্রামীণফোন আমাদের শেয়ারবাজারে বড় প্রভাব ফেলে। বর্তমান শেয়ারবাজারে যে মন্দাভাব বিরাজ করছে তার পেছনে বিটিআরসি ও গ্রামীণফোনের দ্বন্দ্ব বড় ভূমিকা রেখেছে। গ্রামীণফোনের সঙ্গে সমস্যা সমাধানে সরকার আগে পদক্ষেপ নিলে শেয়ারবাজার এত ভুগতো না। তারপরও গ্রামীণফোনের সঙ্গে সরকার সমস্যা সমাধানের ইঙ্গিত দেয়ার পাশাপাশি সম্প্রতি যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে আশা করি শিগগিরই বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৮:৫০ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।