| বুধবার, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট | 8318 বার পঠিত
জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড তথ্য প্রযুক্তি খাতের একটি কোম্পানি। কোম্পানিটি সম্প্রতি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। আজ ৬ ফেব্রুয়ারী, বুধবার দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হবে। পাঠকদের জন্য কোম্পানিটির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরা হল। প্রতিবেদনটি তৈরিতে সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল লিমিটেডের আইপিও নোটস-এ দেওয়া পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষণের সহায়তা নেওয়া হয়েছে।
কোম্পানির পরিচিতি:
জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড যুক্তরাজ্যভিত্তিক বড় ব্যবসায়িক গ্রুপ ইপিই (IPE) এর একটি প্রতিষ্ঠান। এটি ২০১২ সালের মে মাসে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে। কোম্পানিটির মূল ব্যবসা হচ্ছে বিপিও (বিজনেস প্রসেসেস আউটসোর্সিং)। ডাটা এন্ট্রি, ডাটা প্রসেসিং, আইটি সাপোর্ট, সফটওয়্যার মেইটেনেন্স, কল সেন্টার সার্ভিস, ডিজিটাল কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি সেবা দিয়ে থাকে কোম্পানিটি।
Functional Bodybuilding by Marcus Filly azithromycin to buy online bodybuilding supplements – what you ought to know before you take them – predit.ru
গ্রিড অ্যান্ড রেড টেকনোলজিস লিমিটেড নামে জেনেক্সের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান আছে। গ্রিন অ্যান্ড রেড (জিএনআর) একটি স্বতন্ত্র কোম্পানি হিসেবে ২০০৯ সালে নিবন্ধিত হয়ে ব্যবসা শুরু করে। জেনেক্স ইনফোসিস ২০১৫ সালে গ্রিন অ্যান্ড রেডকে অধিগ্রহণ করে। গ্রিন অ্যান্ড রেডের মূল ব্যবসা হচ্ছে স্থানীয় ওয়েবসাইটগুলোতে বিজ্ঞাপন সরবরাহ করা, যা গুগল অ্যাডসেন্সের মতো করে ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত হয়। এছাড়াও কোম্পানিটি নেটওয়ার্ক সলিউশনস, সফটওয়্যার সলিউশনস, গ্রাফিক ডিজাইনসহ নানা ধরনের সেবা দিয়ে থাকে।
জেনেক্স ইনফোসিসের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন চৌধুরী ফজলে ইমাম। তিনি যুক্তরাজ্যভিত্তিক আইপিই গ্রুপের চেয়ারম্যান। অনিবাসী এই বাংলাদেশী প্রায় ৪০ বছর নোভার্টিস, ক্যাম্পসহ বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানিতে উচ্চতর পদে কাজ করেছেন।
জেনেক্স ইনফোসিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী আদনান ইমাম যুক্তরাজ্যের চার্টার্ড সার্টিফায়েড অ্যাকাউন্টেন্ট। তিনি লন্ডনে বিখ্যাত বিনিয়োগ ব্যাংক মেরিল লিঞ্চে দায়িত্বশীল পদে কাজ করেছেন। তিনি ২০০৯ সালে বাংলাদেশে ফাইন্যান্স, ট্রেডিং, তথ্য প্রযুক্তি, রিয়েল এস্টেটসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা শুরু করেন।
কোম্পানির গ্রাহক
জেনেক্স ইনফোসিসের গ্রাহকদের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় ও বিদেশী খ্যাতনামা কিছু প্রতিষ্ঠান। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- গ্রামীণফোন, রবি আজিয়াটা, স্যামসাং লিমিটেড, ডিজি কমিউনিকেশন বেরহাড (মালয়েশিয়া), বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ, গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, জিডি অ্যাসিস্ট প্রমুখ।
আইপিও
জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড আইপিওর মাধ্যমে ২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। কোম্পানিটি সংগৃহীত অর্থের ৬১ শতাংশ বা ১২ কোটি ৩০ লাখ টাকা তার কল সেন্টারের ব্যবসা সম্প্রসারণে ব্যয় করবে; ৩০ শতাংশ বা ৬ কোটি টাকা ব্যয় করবে দীর্ঘ মেয়াদী ঋণের একাংশ পরিশোধে। অবশিষ্ট টাকা আইপিওর খরচ মেটাতে ব্যয় হওয়ার কথা।
পরিশোধিত মূলধন
আইপিওর আগে জেনেক্স ইনফোসিসের পরিশোধিত মূলধন ছিল ৬১ কোটি টাকা। শেয়ার সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ১০ লাখ। আইপিওর পর কোম্পানিটির মূলধন বেড়ে হয়েছে ৮১ কোটি টাকা। আর শেয়ার সংখ্যা ৮ কোটি ১০ লাখ।
প্রধান আর্থিক তথ্যসমূহ
গত ২০১৬-১৭ অর্থবছর এবং আগের চার অর্থ বছরের তথ্য-পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যায় কোম্পানিটির রাজস্বের (সেবা বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ) পরিমাণ প্রতি বছরই বাড়ছে। বাড়ছে কোম্পানির মোট মুনাফা। তবে নিট মুনাফা কিছুটা কমে আসছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে জেনেক্স ইনফোসিসের মোট রাজস্ব ছিল ৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
অন্যদিকে ২০১২-১৩ অর্থবছরের কোম্পানিটির মোট মুনাফা ছিল ২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা বেড়ে ২৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকায় উন্নীত হয়, যা আগের বছরের চেয়ে ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা বেশি।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে কোম্পানিটি ১৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা নিট মুনাফা অর্জন করলেও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা কমে ১১ কোটি ২০ লাখ টাকায় নেমে আসে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে কোম্পানিটির নিট মুনাফা ছিল ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
জেনেক্স ইনফোসিসের মুনাফার মার্জিন বেশ অকর্ষণীয়। তবে সেটি প্রতিবছরই কমে যাচ্ছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরের কোম্পানিটির নিট প্রফিট মার্জিন ছিল ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে তা বেড়ে সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ১ শতাংশ পর্যন্ত হয়। কিন্তু এর পর থেকেই তা কমছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা কমে ১৬ শতাংশে নেমে আসে। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে তা কমে দাঁড়ায় ১৪ শতাংশ।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে জেনেসিসের প্রি-আইপিও শেয়ার প্রতি আই (ইপিএস) ছিল ১ টাকা ৮২ পয়সা; পোস্ট আইপিও হিসাব করলে এর ইপিএস দাঁড়ায় ১ টাকা ৩৭ পয়সা। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিক বা অর্ধবার্ষিক হিসাবে কোম্পানিটির প্রি-আইপিও ইপিএস হয় ৯৭ পয়সা এবং পোস্ট আইপিও ইপিএস ৭৩ পয়সা।
২০২৪ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটির কর অবকাশ সুবিধা রয়েছে। অর্থাৎ এ সময় পর্যন্ত কোম্পানির আয়ের উপর কোনো কর দিতে হবে না।
বিশেষ পর্যবেক্ষণ
জেনেক্স ইনফোসিস একটি অতিমাত্রায় ঋণ নির্ভর কোম্পানি। ২০১৮ সালের মার্চে কোম্পানিটির ৮৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ঋণ ছিল। এর মধ্যে মেয়াদী ঋণ ৩৯ কোটি ৩৩ লাখ। সে সময়ে কোম্পানির ইক্যুইটির বিপরীতে ঋণের অনুপাত ছিল ১৪২ দশমিক ৬ শতাংশ। আর সম্পদ ও ঋণের অনুপাত ৫৩ দশমিক ৮ শতাংশ।
গত ৫ বছরের প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, আলোচিত সময়ে কোম্পানিটি কোনো নগদ লভ্যাংশ দেয়নি। এই সময়ের মধ্যে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কোম্পানিটি ১৯০০ শতাংশ বোনাস শেয়ার ইস্যু করে।
Posted ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed