মঙ্গলবার ১৩ মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

Ad
x

খেলাপি ঋণে শীর্ষে বিআইএফসি ফার্স্ট ফাইন্যান্স ও উত্তরা

  |   বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   659 বার পঠিত

খেলাপি ঋণে শীর্ষে বিআইএফসি ফার্স্ট ফাইন্যান্স ও উত্তরা

দেশের ব্যাংক খাতে ক্যানসারের সৃষ্টি করেছে খেলাপি ঋণ। এটি এখন ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও ছড়িয়ে পড়ছে। বর্তমানে খেলাপি ঋণের শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি) লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির খেলাপির হার ৯৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। এছাড়া খেলাপি ঋণের শীর্ষ তালিকায় নাম উঠে এসেছে ফার্স্ট ফাইন্যান্স লিমিটেড ও উত্তরা ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের। এর মধ্যে দুটিই লোকসান গুনছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।

খেলাপি ঋণের উচ্চহারের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে। খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুশাসনের চিত্র নিয়েও উদ্বিগ্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি, লোকসান ও সুশাসনের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে আজ মঙ্গলবার ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির উপস্থিত থাকবেন বলে সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র অনুযায়ী খেলাপি ঋণের শীর্ষে থাকা ও বর্তমানে লোকসানি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বিআইএফসি লিমিটেড। দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের কাছেই বর্তমানে পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। নিজ প্রতিষ্ঠান থেকেই নামে-বেনামে নিজে ছাড়াও আত্মীয়-স্বজন ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্টদের ঋণ দিয়েছেন ৫১৮ কোটি টাকা। বর্তমানে সুদসহ এসব ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৯০০ কোটি টাকার ওপরে। ডিসেম্বর শেষে তা প্রায় এক হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়।
এ পরিমাণ অর্থ বের করে নেওয়ার দায়ে তাকে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় সরকার। পাওনা আদায়ে বিআইএফসির পক্ষ থেকে মান্নানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হয়েছে। দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, বিআইএফসির মোট আমানতের পরিমাণ ৮০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, রূপালী ব্যাংকসহ প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের আমানতের পরিমাণ হচ্ছে ৬০০ কোটি টাকা।

অবশিষ্ট ২০০ কোটি টাকা ব্যক্তি আমানতকারীদের। প্রতিষ্ঠানটি আমানতকারীদের নিয়ে এখন অর্থ ফেরত দিতে পারছে না। সাবেক চেয়ারম্যান মান্নান ২০০১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বে ছিলেন। তার ঋণ কেলেঙ্কারির বিষয়টি যথাসময়ে উদ্ঘাটিত না হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংককেও দায়ী করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়।
বিআইএফসির ৫০ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে ফাইভ কনটিনেন্টস ক্রেডিট লি., টিস মার্ট ইন্টারন্যাশনাল লি. ও মেরিল অ্যান্ড ফরবেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামের তিন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের। অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ শেয়ারের মধ্যে আবদুল মান্নানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পাইওনিয়ার ড্রেসেস পাঁচ দশমিক ৮২ শতাংশ, সুকুজা ভেঞ্চার পাঁচ দশমিক ৪৬ শতাংশ, সাধারণ বিনিয়োগকারী ১৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং অন্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মালিকানা শেয়ার ২১ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

বিআইএফসির অনুমোদিত মূলধন ৪০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। দেশের দুই পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানি। সর্বশেষ প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার হাতবদল হয়েছে পাঁচ টাকা ৩০ পয়সায়। কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০১৩ সালে বিনিয়োগকারীদের পাঁচ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেয়। ২০১৭ সালে বিআইএফসির লোকসান ছিল ৭০০ কোটি টাকা।

এদিকে ফার্স্ট ফাইন্যান্সও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান। আগ্রাসী ঋণ বিতরণ করায় প্রতিষ্ঠানটির খেলাপি ঋণের হার এখন ৩৭ দশমিক পাঁচ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লোকসান গুনেছে ১৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। বিনিয়োগকারীদের সর্বশেষ লভ্যাংশ দিয়েছে ২০১৪ সালে পাঁচ শতাংশ। পুঁজিবাজারে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার হাতবদল হয়েছে সর্বশেষ পাঁচ দশমিক ২০ টাকা দরে।
এছাড়া ১৯৯৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া উত্তরা ফাইন্যান্সের শেয়ার সর্বশেষ হাতবদল হয়েছে ৬৩ দশমিক ৫০ টাকায়। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দেওয়া তথ্য বলছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি মুনাফা করেছে ১০০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া মুনাফার এ তথ্যকে অসংগতিপূর্ণ বলছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। ২০১৭ সালে বিনিয়োগকারীদের ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের পাশাপাশি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানেরও নিয়ন্ত্রক সংস্থা হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বতর্মানে দেশে নন-ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়্যাল বা ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৩৪টি।

Facebook Comments Box

Posted ১:৫৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11671 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।