
বিবিএনিউজ.নেট | বুধবার, ০১ জুলাই ২০২০ | প্রিন্ট | 495 বার পঠিত
বিশিষ্ট শিল্পপতি ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের চিওড়া ইউনিয়নের চিওড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
চিওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পারিবারিক সূত্র জানিয়েছেন, লতিফুর রহমানের মরদেহ ঢাকায় আনা হবে। গুলশানের আজাদ মসজিদে বাদ এশা তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর রাতেই বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
লতিফুর রহমান দৈনিক প্রথম আলো ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের মালিক। তিনি ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক পণ্য, ওষুধ, সংবাদপত্র, চা শিল্প, বিমা ইত্যাদি ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ন্যাশনাল হাউজিংয়ের উদ্যোক্তা পরিচালক।
লতিফুর রহমান প্যারিসভিত্তিক বৈশ্বিক বাণিজ্য সংগঠন আইসিসির নির্বাহী সদস্য, আইসিসি বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান ও বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও ব্র্যাকের পরিচালক। এছাড়া তিনি কয়েক মেয়াদে এমসিসিআইয়ের সভাপতি ছিলেন।
লতিফুর রহমান ১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার স্ত্রীর নাম শাহনাজ রহমান। এই দম্পতির এক ছেলে ও দুই মেয়ে।
জানা গেছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। শেষ দিনগুলোর বেশিরভাগ সময়ই তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাড়িতে থাকতেন।
এক নজরে লতিফুর রহমান
বিশিষ্ট শিল্পপতি ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের জন্ম ১৯৪৫ সালের ২৮ আগস্ট ভারতের জলপাইগুড়িতে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল এ মানুষটি বাংলাদেশে অতিপিরিচিত এক নাম। তিনি দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা দুটির প্রতিষ্ঠাতা। বাংলাদেশের বাজারে আন্তর্জাতিক ফাস্টফুড চেইন পিৎজা হাট ও কেন্টাকি ফ্রায়েড চিকেন (কেএফসি) প্রচলনের জন্য সমাধিক পরিচিত বিশিষ্ট এই ব্যবসায়ী।
ব্যবসায়ে নৈতিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১২ সালে বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার পান। ২০০৯ সাল থেকে ব্যবসাখাতে স্বীকৃতিস্বরূপ এ পদক দেয়া হচ্ছে।
লতিফুর রহমান পড়াশোনা শুরু করেন সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলে। সেখান থেকে চলে যান হলিক্রস স্কুলে। সে সময় হলিক্রসে ছেলেরাও পড়ত। ১৯৫৬ সালে যান শিলংয়ে এবং সেন্ট এডমন্ডস স্কুলে ক্লাস থ্রিতে ভর্তি হন। সেখান থেকে কলকাতা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে যান।
১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ, হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা—এসব কারণে ঢাকায় ফিরে আসেন লতিফুর রহমান। এসে পাটের ব্যবসায় ঢুকে যান। তার বাবা তখন চাঁদপুরে গড়ে তুলেছেন ডব্লিউ রহমান জুট মিল। ১৯৬৩ সালে কাজ শুরু হলেও উৎপাদন শুরু হয় ১৯৬৬ সালে।
সেখানে ট্রেইনি হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি ১৯৬৬ সালে। দেড় বছর কাজ শেখার পর একজন নির্বাহী হিসেবে যোগ দেন। লতিফুর রহমান ১৯৭২ সালে যখন সবকিছু নতুন করে শুরু করেছিলেন, তখন তার সঙ্গে কাজ করতেন মাত্র পাঁচজন।
লতিফুর রহমানের ট্রান্সকম গ্রুপের উৎপত্তি হয়েছিল চা চাষের মাধ্যমে, এখন বাংলাদেশের অন্যতম একটি বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠান এটি; যার রয়েছে ১৬টি কোম্পানি। ১০ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান করেছে এ গ্রুপ। শুরুতে ৫০ লাখ টাকা ব্যাংকঋণ নিয়ে নতুন করে শুরু করেছিলেন তিনি। এখন এই গ্রুপের বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি।
লতিফুর রহমান নেসলে বাংলাদেশ, হোলসিম বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স ও ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি লিন্ডে বাংলাদেশ এবং ব্র্যাকের গভর্নিং বোর্ডের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি আইসিসি বাংলাদেশের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
Posted ৩:২২ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০১ জুলাই ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed