| বুধবার, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট | 1225 বার পঠিত
এবার চাকরি ছাড়তে বাধ্য হলেন বেসরকারি সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সোহেল আর কে হোসাইন। গত রবিবার ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে এক মাসের ছুটি চেয়েছেন তিনি। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ মন্তব্য করেননি। গত বছরও মালিকদের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় একই প্রক্রিয়ায় ছুটি নিয়ে চাকরি ছাড়েন অন্তত ৩ জন এমডি।
সূত্র জানায়, গত রবিবার সিটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা হয়। সভায় জানানো হয়, বর্তমান এমডি পদত্যাগ করে এক মাসের ছুটি চেয়েছেন। তার ছুটির আবেদন গ্রহণ করে ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) মাশরুর আরেফিনকে ভারপ্রাপ্ত এমডি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সারকে ফোন দিলে জেনারেল ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বলেন, স্যার মিটিংয়ে আছেন। অন্যদিকে, সোহেল আরকে হোসাইনের মোবাইল ফোনে কল দিলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে অপর প্রান্ত থেকে এক নারী ভুল নম্বর বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
ব্যাংকটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, এমডি এক মাসের ছুটিতে গেছেন। তিনি পদত্যাগ করেছেন কিনা তা জানি না। তবে নতুন এমডি খোঁজা হচ্ছে বলে শুনেছি।
সোহেল আর কে হোসাইন ২০০৭ সালে সিটি ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে যোগ দেন। ২০১৩ সাল থেকে এমডি হিসেবে রয়েছেন তিনি।
সূত্র জানায়, কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন অনিয়মের ঘটনা ঘটছে সিটি ব্যাংকে। এর মধ্যে রয়েছে ঋণে অনিয়ম, কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে অনিয়ম, প্রভিশনে ফাঁকি ইত্যাদি। এসব কারণে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সঙ্গে এমডির দূরত্ব তৈরি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রভাবশালী কয়েকজন পরিচালক এমডিকে পদ ছাড়তে বাধ্য করেছেন বলে জানা গেছে।
গত বছর এবি ব্যাংকের এমডি মশিউর রহমান চৌধুরী, ইউসিবির এমডি আব্দুল মুহাইমেন ও বেসিক ব্যাংকের এমডি মুহাম্মদ আউয়াল খান পদত্যাগ করেন। এর আগে ২০১৭ সালে নতুন প্রজন্মের মেঘনা ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ নূরুল আমিন, এসআইবিএলের এমডি সহিদ হোসেন এবং ইসলামী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান পদত্যাগ করেন। এর মধ্যে এসআইবিএল ও ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনায় হঠাৎ বড় পরিবর্তন আসে।
ব্যাংকের এমডিদের সুরক্ষায় ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর পরিপত্র জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর নিযুক্তি ও দায়দায়িত্ব সম্পর্কিত বিধিবিধান’ শীর্ষক ওই নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীকে পরিচালনা পর্ষদ অপসারণ বা তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে চাইলেও ‘প্রকৃত কারণ উল্লেখপূর্বক’ কমপক্ষে এক মাস আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অবহিত করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া নিয়োগ চুক্তি বাতিল বা প্রধান নির্বাহীকে পদত্যাগে বাধ্য করা যাবে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইন পরিপালনের জন্য এখন জোরপূর্বক পদত্যাগ ও ছুটিতে যেতে বাধ্য করছেন মালিকরা।
সিটি ব্যাংকের মূল উদ্যোক্তাদের অন্যতম পারটেক্স গ্রুপের মালিক এম এ হাশেম। আগের ব্যাংক কোম্পানি আইনে এক পরিবারের ২ সদস্য পরিচালনা পর্ষদে থাকার সুযোগ থাকলেও তার পরিবারের ৫ জন এ ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন। আইন সংশোধনের পর এখন সিটি ব্যাংকে পরিচালক রয়েছেন হাশেম পরিবারের ৪ জন। চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন হাশেমের ছেলে আজিজ আল কায়সার। অন্যরা হলেন-রুবেল আজিজ, তাবাসসুম কায়সার ও সৈয়দা শাইরিন আজিজ।
Posted ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed