রবিবার ২০ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

Ad
x

চাঙা দেশের পুঁজিবাজার

  |   শনিবার, ১২ জানুয়ারি ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   927 বার পঠিত

চাঙা দেশের পুঁজিবাজার

পতনের রেশ কাটিয়ে সম্প্রতি কিছুটা চাঙা হয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। এর জের ধরে পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। কিন্তু বাজারে ফিরে এলেও এসব বিনিয়োগকারী মার্জিন ঋণ নেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন।

তাদের অভিমত, পুঁজিবাজার এখন যে অবস্থায় রয়েছে, হঠাৎ করে এই বাজারের ছন্দপতন হলে বা ধস নামলে তারা সমস্যায় পড়ে যাবেন। তখন তাদের জন্য ঋণ শোধ করা মুশকিল হয়ে পড়বে। অন্যদিকে মার্জিন ঋণে সুদের হারও বেশি, যে কারণে তারা যতটা সম্ভব মার্জিন ঋণ এড়িয়ে চলছেন।

তথ্যমতে, বর্তমানে মার্জিন ঋণের অনুপাত দশমিক ৫০। অর্থাৎ এক লাখ টাকা থাকলে ওই বিনিয়োগকারীকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হচ্ছে। তবে ঋণ প্রদানের প্রবাহ নির্ভর করছে হাউজ কর্তৃপক্ষের ইচ্ছার ওপর। কোনো কোনো হাউজে ঋণের হার শূন্য দশমিক ২৫। অর্থাৎ এক লাখ টাকায় একজন বিনিয়োগকারী ২৫ হাজার টাকা লোন পাবেন। আর এ ঋণের বিপরীতে সুদ গুনতে হচ্ছে ১৪ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজে ঋণের অনুপাত বিভিন্ন রকমের। যেখানে সুদ হিসাবে নেওয়া হচ্ছে ১১ থেকে ১৮ শতাংশ। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে তিন শতাংশ সার্ভিস চার্জ। অর্থাৎ যিনি ১১ শতাংশ সুদে ঋণ নিচ্ছেন তার সুদ (সার্ভিস চার্জ) গিয়ে দাঁড়াচ্ছে ১৪ শতাংশ। আর যিনি ১৮ শতাংশ হারে ঋণ নিচ্ছেন তার সুদ হচ্ছে ২১ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টদের মতে, এত উচ্চ মূল্যে ঋণ নিয়ে তা দিয়ে ব্যবসা করে লাভবান হওয়া কষ্টকর, যে কারণে মার্জিন ঋণ থেকে দূরে সরে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা গেছে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে কিছুটা ভালো হলেও ঋণ নিয়ে খুব একটা লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। একই সঙ্গে বাজারের পরিস্থিতিও তেমন নয় যে, বাজার থেকে মুনাফা করে কিস্তি দেওয়া সম্ভব। তাই অনেকেই এ ঋণ নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হননি। ঋণের শর্ত আরও সহজ করার দাবি জানান তারা।

এ প্রসঙ্গে বিনিয়োগকারী মাফায়েত হোসেন মুরাদ বলেন, হাউজগুলোতে মার্জিন ঋণের সুদহার অনেক। অন্যদিকে বাজারও দীর্ঘদিন থেকে স্থিতিশীল থাকে না। ফলে এ অবস্থায় কেউ ঋণ নিতে সাহস পাচ্ছেন না। কারণ এই মার্কেট থেকে ব্যবসা করে লোন শোধ করা কঠিন। মার্জিন ঋণের সুদের হার আরও কমানো উচিত বলে মনে করেন তিনি।

জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, মার্জিন ঋণে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সুদটা একটু বেশিই আদায় করা হয়। এটা আর কমবে বলে মনে হয় না। যারা এই ঋণ নিয়ে ব্যবসা করেন তারা জেনে-বুঝেই ঋণ গ্রহণ করেন।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, শুরুর দিকে বিনিয়োগকারীরা মার্জিন ঋণে কিছুটা আগ্রহী ছিলেন। পরে তারা সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন। অন্যদিকে হাউজগুলোও ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে হিসাবি হয়েছে। গ্রাহক যাতে বিপদে না পড়ে সেজন্য অনেক হাউজ ঋণ দেওয়া বন্ধ রেখেছে।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ব্রোকারেজ হাউজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ঋণ নেওয়ার বেলায় এখন বিনিয়োগকারীরা খুবই হিসাবি, কারণ বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী ২০১০ সালের ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সে কারণে তারা আর নতুন করে ঋণ নিতে যাচ্ছেন না। তিনি বলেন, এখন বাজারের যে সার্বিক পরিস্থিতি তাতে মার্জিনধারীরা কতটুকু লাভবান হতে পারবেন, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সে কারণে আমরা তাদের উৎসাহিত করছি না।

Facebook Comments Box

Posted ২:৪৯ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১২ জানুয়ারি ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।