শনিবার ১৭ মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

Ad
x

চিংড়ি সংকটে সাতক্ষীরার প্রক্রিয়াকরণ কারখানাগুলো

বিবিএনিউজ.নেট   |   রবিবার, ১৪ এপ্রিল ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   946 বার পঠিত

চিংড়ি সংকটে সাতক্ষীরার প্রক্রিয়াকরণ কারখানাগুলো

দেশে প্রতি বছর প্রায় ১৩ হাজার টন রফতানিযোগ্য চিংড়ি উৎপাদন হয়। এর মধ্যে সাতক্ষীরায় উৎপাদন হয় ৩ হাজার ৫০০ টন। অর্থাৎ মোট রফতানিযোগ্য চিংড়ির প্রায় ৩০ শতাংশই উৎপাদন হয় সাতক্ষীরা জেলায়। কিন্তু মানসম্মত চিংড়ির অভাবে টিকে থাকতে পারছে না সাতক্ষীরার প্রক্রিয়াকরণ চিংড়ি কারখানাগুলো। এতে লোকসানের মুখে পড়েছে স্থানীয় কারখানাগুলো। এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে একাধিক কারখানা।

চট্টগ্রামের শিল্পপতি মো. কপিল উদ্দীন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনেরপোতার বিসিক শিল্পনগরীতে ২০০৮ সালে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠা করেন মোস্তফা অর্গানিক শ্রিম্প প্রডাক্টস লিমিটেড।

মোস্তফা অর্গানিক শ্রিম্প প্রডাক্টস লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মো. আব্দুল মোনায়েম জানান, মানসম্মত চিংড়ি সংকটের কারণে কারখানাটির পক্ষে টিকে থাকা মুশকিল হয়ে পড়েছে। চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ খুবই অপ্রতুল। ফলে প্রতি মাসেই কর্তৃপক্ষকে মোটা অংকের টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, এ কারখানায় প্রতি বছর ৩ হাজার ৬০০ টন চিংড়ির চাহিদা রয়েছে। সেখানে সরবরাহ আছে ১৮০ টন চিংড়ির, যা মোট চাহিদার মাত্র ৫ শতাংশ। এ কারণে কারখানা চালু রাখতে প্রতি বছর কোটি টাকার উপরে লোকসানের শিকার হতে হচ্ছে।

বিনেরপোতার বিসিকে অবস্থিত অন্য একটি চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ কারখানা দিপা সি ফুডস লিমিটেড। এ কারখানার স্বত্বাধিকারী দীনবন্ধু মিত্র জানান, তার কারখানা থেকে গেল বছর রফতানি কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত চিংড়ি সরবরাহ না থাকায় চাহিদা অনুযায়ী রফতানি করা সম্ভব হয়নি। দীনবন্ধু মিত্র জানান, প্রতি বছর প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টন চিংড়ি চাহিদার বিপরীতে রফতানি করা সম্ভব হয় ৯০০ থেকে ৯৫০ টন চিংড়ি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দেড় দশকের ব্যবধানে সাতক্ষীরায় সাত থেকে আটটি চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরার বিনেরপোতার সুন্দরবন ফিশারিজ লিমিটেড, শহরের বাটকেখালী এলাকায় অবস্থিত করমেন্ডাল ফিশারিজ, উত্তর কাটিয়া এলাকার সাতক্ষীরা ফিশারিজ লিমিটেড, দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া এলাকায় অবস্থিত ছেকাই করপোরেশন লিমিটেড, চাঁদপুর ডেল্টা ফিশ লিমিটেড এবং শ্যামনগর উপজেলায় অবস্থিত পেঙ্গুইন কারখানা চিংড়ি সরবরাহ না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে।

সাতক্ষীরা জেলা মত্স্য কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, সাতক্ষীরায় যে পরিমাণ রফতানিযোগ্য চিংড়ি উৎপাদন হয়, তার ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশই চলে যায় চট্টগ্রাম ও খুলনার কারখানাগুলোয়। কারণ হিসেবে তিনি জানান, সাতক্ষীরার চেয়ে চট্টগ্রাম ও খুলনায় নগদ লেনদেন বেশি হওয়ার পাশাপাশি চিংড়ির দামও পাওয়া যায় তুলনামূলক বেশি। তাছাড়া ঘের মালিকদের কাছে টাকা দাদনও দিয়ে রাখেন খুলনা ও চট্টগ্রামের চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ কারখানার মালিকরা।

বর্তমানে সাতক্ষীরায় প্রতি কেজি চিংড়ি প্রকারভেদে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সাতক্ষীরার চিংড়ি চাষী রাজেশ্বর দাস বলেন, স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করলে দাম কম পাওয়া যায়। অন্যদিকে চট্টগ্রাম ও খুলনার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতি কেজি চিংড়ির দাম প্রকারভেদে প্রতি কেজিতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি পাওয়া যায়। ফলে চিংড়ি ঘাটতিতে সংকটের মুখে সাতক্ষীরার প্রক্রিয়াকরণ কারখানাগুলো।

Facebook Comments Box

Posted ৫:১৬ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৪ এপ্রিল ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।