বিবিএনিউজ.নেট | ০৫ অগাস্ট ২০১৯ | ১২:৪০ পিএম
প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুদহার কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে নানা সুযোগ-সুবিধাও নিয়েছেন ছিলেন ব্যাংক মালিকরা। কিন্তু এক বছরেও তা বাস্তবায়ন করেনি। তাই এবার ছয়-নয় অর্থাৎ আমানত সংগ্রহের সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ এবং ঋণ বিতরণের সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদহার বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বছরের জুলাইয়ে নয়-ছয় সুদহার কার্যকর করবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন ব্যাংকের মালিকরা। প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে তারা সুদহার কমানোর প্রতিশ্রুতি দেন। এ জন্য মুনাফার ওপর কর কমানো, নগদ জমা সংরক্ষণ (সিআরআর) কমানো, রেপো রেট কমানো ও মেয়াদ বৃদ্ধি, সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখাসহ বেশকিছু সুবিধাও পায় ব্যাংকগুলো। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উল্টো তারল্য সংকটের অজুহাতে অনেক খাতে সুদহার বাড়ছে।
এদিকে যেসব ব্যাংক ৯ শতাংশ সুদে ঋণ দেবে না, তাদের কাছে ৬ শতাংশ সুদে সরকারি সংস্থার আমানত রাখা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে অর্থমন্ত্রণাণলয়। তাতেও কোনো সুফল মেলেনি। তাই এবার প্রজ্ঞাপন জারি করে তা কমানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা ব্যাংক ব্যবসার অনুমোদন দেয় তারা বাতিল করতে পারে। সুতরাং তার বাস্তবায়ন নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। এই মুহূর্তে সরকারিসহ মোট ১৬টি ব্যাংক ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়ন করেছে। আস্তে আস্তে সব ব্যাংকই সিঙ্গেল ডিজিটে চলে আসবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ব্যাংক খাতের সব পরিস্থিতি ভালো হয়ে আসবে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, তারল্য সংকট, খেলাপি ঋণসহ ব্যাংক খাতের সার্বিক পরিস্থিতি উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, যা অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে সংবাদ মাধ্যমে ঘোষণা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের আগের আইনে তাদের নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই, তবে তার মধ্য থেকেও যতটুকু আইনি ব্যবস্থা নেয়া যায় আমরা তা নিচ্ছি। কিন্তু নতুনভাবে যে আইন আসছে সেখানে সবকিছুর পরিষ্কার বিবরণ থাকবে। কেউই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, বরং ওই আইনের মাধ্যমে সবাই উপকৃত হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, হঠাৎ করে আমাদের অর্থনীতি বড় হয়ে যাওয়ায় ব্যাংকিং খাত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। এখন সেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কিছুটা সময় প্রয়োজন। আশা করি খুব শিগগিরই আমরা সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারবো। আমরা চাইলেই একটি ব্যাংক বন্ধ করে দিতে পারি না, কারণ এগুলো আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত টাকা। চাইলেই একটি ব্যাংক বন্ধ করে দেয়া সম্ভব নয়।
মুস্তফা কামাল বলেন, ফারমারস ব্যাংক যখন সংকটে পড়েছিল তখন আমরা তাদেরকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছি। এই মুহূর্তে বেসিক ব্যাংক একটি দুর্দশাগ্রস্ত সময় পার করছে। আমরা তাদের কেউ বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছি। দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হলে সবাই মিলেই এগিয়ে যেতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিলেই সেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে না।
ইচ্ছাকৃত খেলাপি ব্যক্তিদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে বলে হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ব্যবসায় লাভ লোকসান থাকবে এটাই স্বভাবিক। কিন্তু কিছু লোক পরিশোধ না করার খারাপ উদ্দ্যেশ্যেই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে। তাদের কেউই পার পাবে না বলে কঠোর হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১২:৪০ পিএম | সোমবার, ০৫ অগাস্ট ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed