রবিবার ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

ট্রেক আবেদনের সময় বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ ২০২১   |   প্রিন্ট   |   888 বার পঠিত

ট্রেক আবেদনের সময় বেড়েছে

নতুন ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট (ট্রেক) ইস্যুর আবেদনের সময় পরিবর্তন করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। আগামী ১৮ মার্চের পরিবর্তে ২৮ মার্চ পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। মঙ্গলবার ১৬ মার্চ ডিএসইর ব্যবস্থাপনা কতৃপক্ষ ট্রেক আবেদনের সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডিএসই সূত্রে তথ্য জানা গেছে।

উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর ৯৯০তম পরিচালনা পর্ষদের সভায় দেশের প্রথম, প্রধান ও নেতৃত্বদানকারী স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসই সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ, স্কীম, বিধিমালা ও প্রবিধানমালার বিধানাবলী মোতাবেক যোগ্যতার ভিত্তিতে উহার অধীনে সিকিউরিটিজ লেনদেন কার্যক্রম পরিচালনার নিমিত্তে সিকিউরিটিজ লেনদেন অধিকার সম্বলিত সনদ ট্রেক ইস্যু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

ট্রেক রুলস অনুযায়ি, প্রতিটি ট্রেকের জন্য নিবন্ধন ফি দিতে হবে ১ কোটি টাকা। তবে ডিএসই শুরু থেকেই ট্রেক মূল্য আরও বেশি বলে বিএসইসির নির্ধারিত ফি নিয়ে বিরোধীতা করে। এমনকি ডিএসইর পর্ষদের মধ্যেও এ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এতে ডিএসইর ৪ জন শেয়ারহোল্ডার পরিচালকের মধ্যে একমাত্র রকিবুর রহমানের সম্মতি থাকলেও শাকিল রিজভী, মোহাম্মদ শাহজাহান ও মিনহাজ মান্নান ইমন (বর্তমানে সাবেক) বিরোধীতা করেন।

ডিএসইর আপত্তির আলোকে আগের কমিশন ট্রেক বিধিমালা প্রণয়ন সম্পন্ন না করে, পরবর্তী কমিশনের কাছে দিয়ে যায়। এরপরে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন ট্রেক বিধিমালা চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ নভেম্বর ট্রেক বিধিমালার গেজেট প্রকাশ পায়।

গেজেট অনুযায়ি, কোম্পানি, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কমিশনের অনুমোদিত কোন প্রতিষ্ঠান স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেক কিনতে পারবেন। এই ট্রেক পাওয়ার জন্য ১ লাখ টাকা ফিসহ এক্সচেঞ্জে আবেদন করতে হবে। আর ১ কোটি টাকা দিতে হবে নিবন্ধন ফি হিসেবে। এই ফির পরিমাণ নিয়ে শুরু থেকেই এই বিধিমালার বিরোধীতা করে ডিএসই।

তাদের মতে, সর্বশেষ ২০১৩ সালে ডিএসইর একটি মেম্বারশীপ বিক্রি করা হয়েছে ৩২ কোটি টাকার উপরে। এমনকি স্ট্যাটেজিক ইনভেস্টরদের কাছে ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির দর হিসাবে একটি ব্রোকারেজ হাউজের দাম রয়েছে ১৫ কোটিতে। সেখানে এখন অনেক কমে ট্রেক ইস্যু করা হবে। এটা কিভাবে সম্ভব? তাহলে বর্তমান মেম্বারশীপের ভ্যালু কোথায় নেমে আসবে? এছাড়া আইনে ফি নির্ধারন স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে দেওয়া হয়েছে।

বিএসইসির খসড়ার আলোকে মতামত দেওয়ার জন্য গত ৮ জুলাই ডিএসইর পর্ষদ ৫ কোটি টাকা নিবন্ধন ফিতে ট্রেক বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়। এছাড়া আবেদন ফি ১০ লাখ টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যা বিএসইসিকে জানানো হয়।

তবে নতুন ট্রেকহোল্ডাররা স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ারহোল্ডার হবেন না। তারা শুধুমাত্র শেয়ার ও ইউনিট বেচা-কেনা করার সুযোগ পাবেন। যাতে করে লভ্যাংশও পাবেন না। এ বিবেচনায় নির্ধারিত নিবন্ধন ফি যৌক্তিক বলে মনে করছে কমিশন।

এর আগে বিগত কমিশন ট্রেক ইস্যুর নিবন্ধন ফি ৫ লাখ টাকা নির্ধারন করে মতামত চেয়ে খসড়া প্রকাশের পর থেকেই বাজারকে এ বিষয়টি উত্তাল করে তুলেছিল। এই নিবন্ধন ফিতে ডিএসইর শেয়ারহোল্ডার পরিচালক রকিবুর রহমানের সম্মতি থাকলেও অন্যরা বিরোধীতা করে। এমনকি ডিএসইর শেয়ারহোল্ডাররাও এর বিরোধীতা করে। এই ফি নিয়ে স্টক এক্সচেঞ্জকে ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) থেকে লিগ্যাল নোটিশ পর্যন্ত পাঠানো হয়েছিল।

তবে বিগত কমিশন চূড়ান্ত বিধিমালায় ডিএসইর মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে নিবন্ধন ফি নির্ধারন করবে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারনে তা করে যেতে পারেনি। তারা ট্রেক ইস্যুর বিধিমালার বিষয়ে পরবর্তীতে দায়িত্ব নেওয়া কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়ে যায়।

এদিকে চূড়ান্ত বিধিমালায় ট্রেক নেওয়ার জন্য কমপক্ষে ৫ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে এবং স্টক এক্সচেঞ্জে ৩ কোটি টাকা জামানত দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে বিদেশীদের সঙ্গে যৌথভাবে ট্রেক নেওয়ার ক্ষেত্রে পরিশোধিত মূলধন ৮ কোটি টাকা এবং শুধুমাত্র বিদেশীদের ক্ষেত্রে ১০ কোটি টাকার কথা বলা হয়েছে। আর জামানতের ক্ষেত্রে বিদেশীদের সঙ্গে যৌথভাবে ট্রেক নেওয়ার জন্য ৪ কোটি টাকা এবং শুধুমাত্র বিদেশীদের জন্য ৫ কোটি টাকার কথা বলা হয়েছে। আর ট্রেকের বার্ষিক ফি হিসেবে ১ লাখ টাকার কথা বলা হয়েছে।

তবে ডিএসইর পর্ষদ স্টক এক্সচেঞ্জে জামানত রাখার পরিমাণ ৫ কোটি টাকা করার মতামত দিয়েছিল। আর ট্রেক পেতে আবেদন ফি ১০ লাখ টাকা ও পরিশোধিত মূলধন কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার কথা বলেছিল।

বিধিমালা অনুযায়ি, এক্সচেঞ্জ অর্থবছরের প্রথম মাসের মধ্যে ট্রেক ইস্যুর জন্য বার্ষিক পরিকল্পনা কমিশনে দাখিল করবে। এছাড়া কমিশন ট্রেক ইস্যুর বিষয়ে সময় সময় নির্দেশ প্রদান করতে পারবে।

এদিকে এক্সচেঞ্জ ট্রেক সনদ ইস্যুর লক্ষ্যে ২টি দৈনিক (ইংরেজি ও বাংলা) সংবাদপত্রে ও এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে নতুন ট্রেক ইস্যুর জন্য দরখাস্ত করার বিজ্ঞপ্তি প্রদান করবে। এক্সচেঞ্জ ফরমে উল্লেখিত তথ্যাদির সমর্থনে প্রয়োজনে অতিরিক্ত তথ্যাদি এবং কাগজপত্র দাখিল করার জন্য বলতে পারবে। এরপরে এক্সচেঞ্জ ট্রেক প্রাপ্তির যোগ্যতা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই বাছাই করে সন্তুষ্ট হলে ট্রেক ইস্যু করবে। অন্যথায় নামঞ্জুর করবে এবং জানিয়ে দেবে। এছাড়া কোন ট্রেক যোগ্যতা হারালে বা এই বিধিমালার কোন শর্ত ভঙ্গ করলে, এক্সচেঞ্জ তাহার সনদ বাতিল করতে পারবে।

উল্লেখ্য, কোম্পানি, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কমিশনের অনুমোদিত কোন প্রতিষ্ঠান স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেক কিনতে পারবেন। গ্রাহকদের পক্ষে শেয়ার বেচা-কেনা করে দেওয়ার ব্যবসা করতে এই ট্রেক পাওয়া যাবে। তবে এই ট্রেকের মালিক স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ারহোল্ডার হবেন না। শুধুমাত্র শেয়ার ও ইউনিট বেচা-কেনা করার সুযোগ পাবেন। কোন প্রতিষ্ঠান ট্রেক পেলে তা হস্তান্তর করা যাবে না। আবার নিবন্ধন পাওয়ার এক বছরের মধ্যে সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক ডিলার, স্টক ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা ২০০০ অনুযায়ী স্টক-ডিলার বা স্টক-ব্রোকার’র সনদ নিতে হবে। এই সনদ নেয়ার ৬ মাসের মধ্যে ব্যবসা শুরু করতে না পারলে ট্রেক বাতিল হয়ে যাবে।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ ২০২১

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।