
বিবিএনিউজ.নেট | রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০১৯ | প্রিন্ট | 558 বার পঠিত
আগামী এক মাসের মধ্যে তামাবিল স্থলবন্দরে ব্যাংকের বুথ চালু এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ শুরু হবে। এছাড়া পর্যটকদের ট্রাভেল ট্যাক্স বাতিলের বিষয়টি বিবেচনা, অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স ও রেজিস্ট্রেশন ফি কমিয়ে আনা এবং ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন একদিনের মধ্যেই সম্পন্নের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শনিবার সিলেটের একটি হোটেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ওপর এক প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এসব কথা বলেন।
সিলেট চেম্বারের সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট কমিশনারেট সিলেটের কমিশনার গোলাম মো. মুনীর ও কর অঞ্চল-সিলেটের কর কমিশনার রণজিৎ কুমার সাহা। এছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কাস্টমস পলিসি) মো. ফিরোজ শাহ্ আলম, সদস্য (ভ্যাটনীতি) আব্দুল মান্নান শিকদার, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মৃণাল কান্তি দেব, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পরিতোষ ঘোষ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মো. আসলাম উদ্দিন।
প্রাক-বাজেট আলোচনায় সিলেট চেম্বারের পক্ষ থেকে কয়েকটি প্রস্তাবনা এবং বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীদের দাবি ও প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সিলেট চেম্বারের পক্ষ থেকে সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেন। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে করের বোঝা না বাড়িয়ে আওতা বাড়ানো, তামাবিল স্থলবন্দরে ব্যাংকের বুথ স্থাপন, স্থলপথে পর্যটকদের ট্যাক্স বাতিল, প্যাকেজ ভ্যাট চালু রাখা, ফল আমদানির বাধা অপসারণ, শেওলা বন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য আমদানি-রফতানি, অগ্রিম শুল্ক বিধান বাতিল, পর্যটনের বিকাশে হোটেল-রিসোর্টগুলোকে ১০ বছরের কর অবকাশ প্রদান, স্থলবন্দরগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন, নতুন শিল্প স্থাপনে কর অবকাশ প্রদান প্রভৃতি।
মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, সবার অংশগ্রহণে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ক্ষুদ্র থেকে বড় শিল্পের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। সৃষ্টি হচ্ছে কর্মসংস্থান। কিন্তু কর আদায়ের ক্ষেত্রে আমরা এখনো সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারিনি। যে কারণে প্রায় ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশে মাত্র ২০ লাখ লোক ইনকাম ট্যাক্সের রিটার্ন জমা দেন। বিদেশে এ বিষয়টি এত সুসংগঠিত যে, ভ্যাটের জালের বাইরে কেউ যেতে পারে না। এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে এবং করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত মধ্যম আয়ের দেশ ও উন্নত দেশের পর্যায়ে পৌঁছাতে হলে আমাদের সবাইকে সততার সঙ্গে ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রদান করতে হবে। তিনি জানান, ইএফডি (ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস) মেশিনের টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। সেন্ট্রাল সার্ভারের সঙ্গে সংযুক্ত করে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে, যাতে কোথায় কোথায় ভ্যাট আদায় হচ্ছে, তা জানা যাবে। তিনি বলেন, ১৫ শতাংশ ভ্যাট থেকে বেরিয়ে এসে আমরা কয়েকটি ধাপ করে দেব। এতে ছোট হারেও ভ্যাট আদায় হলে ভ্যাটের হার ও আওতা অনেক বাড়বে।
মুক্ত আলোচনায় বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। এর মধ্যে বিসিক শিল্প নগরীতে প্লট হস্তান্তরের ওপর ধার্য ফি থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার, ইকোনমিক জোনের মতো সুযোগ-সুবিধা প্রদান, কৃষি যন্ত্রপাতির ওপর সব পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি, কয়লা আমদানির ক্ষেত্রে এলসি কমিশনের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার, সম্পত্তি হস্তান্তর সহজীকরণ, প্যাকেজ ভ্যাট চালু রাখা, হাই-টেক পার্কের যন্ত্রাংশ ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ওপর সব ট্যাক্স প্রত্যাহার, সুনামগঞ্জের ডলুরা ও বাঁশতলা শুল্ক স্টেশন চালু, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ইকোনমিক জোন ও বিসিক শিল্প এলাকায় প্লট বরাদ্দ, রেলওয়ে খাতে সিলেটের জন্য আলাদা বরাদ্দ প্রদান, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো টার্মিনাল ও স্ক্যানিং মেশিন স্থাপন করে পণ্য রফতানির সুযোগ সৃষ্টি, শুল্ক স্টেশনগুলোয় আমদানি-রফতানিকারকদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন।
এ সময় প্রস্তাব উপস্থাপন করে বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বারের পরিচালক মো. হিজকিল গুলজার, পিন্টু চক্রবর্তী, কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি চন্দন সাহা ও মো. আতিক হোসেন, সিএনজি ফিলিং স্টেশন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, ভোলাগঞ্জ পাথর আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি মুজিবুর রহমান মিন্টু, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. বশিরুল হক, হবিগঞ্জ চেম্বারের পরিচালক শেখ আনিসুজ্জামান, গণদাবি পরিষদের সভাপতি চৌধুরী আতাউর রহমান আজাদ, উইমেন্স চেম্বারের সভাপতি স্বর্ণলতা রায়, গণদাবির কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি অধ্যাপক শফিকুর রহমান, সুনামগঞ্জ চেম্বারের পরিচালক নুরুল ইসলাম, কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবুল ফজল, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম পাঠান, ফল ও কাঁচামাল আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি মো. আবুল কালাম ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা চৌধুরী, বিসিক শিল্প মালিক সমিতি গোটাটিকরের সাধারণ সম্পাদক আলীমুল এহছান চৌধুরী, রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মজনু মিয়া, সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জিয়াউল হক, সিলেট চেম্বারের পরিচালক ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, সিলেট কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা।
Posted ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed