বিবিএনিউজ.নেট | বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | প্রিন্ট | 400 বার পঠিত
বাংলাদেশ সরকার বলছে চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মোট দেশজ উত্পাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি সাত শতাংশের উপরে হবে। তবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন (এসকাপ)।
এসকাপের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল সার্ভে অব এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিকের প্রতিবেদনে প্রবৃদ্ধির এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। মূলত তিন কারণে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের কম হবে বলে মনে করছে সংস্থাটি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামীতে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন বৈশ্বিক নীতি অস্থিতিশীল হতে পারে। এছাড়াও বিভিন্ন দেশের বাণিজ্য সংরক্ষণ নীতি আরও কঠোর হতে পারে, যার প্রভাব পড়তে পারে চলতি অর্থবছরের অর্থনীতিতে। আর প্রবৃদ্ধি কমার অভ্যন্তরীণ কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে রেমিট্যান্সের প্রবাহের ধারাবাহিক পতনকে।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইডিবি ভবন সম্মেলন কক্ষে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ সময় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি রবার্ট ওয়াটকিন্স, ইউএন এসকাপের ব্যাংকক কার্যালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক কর্মকর্তা সুদীপ রঞ্জন বসু এবং বিআইডিএস মহাপরিচালক কেএএস মুর্শিদ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদনটির উত্থাপন করে সুদীপ রঞ্জন বসু বলেন, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে। আমাদের হিসাব অনুযায়ী কয়েকটি কারণে আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে। যদিও সামগ্রিকভাবে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি কিছুটা বাড়তে পারে। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ৫৩টি দেশ এসকাপের সদস্য। চলতি অর্থবছরে এ অঞ্চলের সকল দেশের সমন্বিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৫ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে তা বেড়ে ৫ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ৯ শতাংশ। তিনি বলেন, প্রতিবছরই এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে কার্যকর সুশাসন এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, যে দেশে সুশাসনের মাত্রা যতো বেশি সে দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ততোই ভালো।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ধরে রাখার জন্য কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে—মানসম্মত চাকরির সুযোগ সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া। শিল্পায়ন ত্বরান্বিত করতে শিল্পবান্ধব নীতি গ্রহণ। মানব সম্পদের উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের বাধা চিহ্নিত করে তা সরিয়ে ফেলা এবং ব্যাপক মাত্রায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গ্রহণ করা।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রশংসা করে বলা হয়, ২০১১ থেকে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের উপরে রয়েছে। এটা স্থিতিশীল ও শক্তিশালী অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ই-প্রকিউরমেন্ট চালু করা হয়েছে। রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধির জন্য কার্যকর কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। তবে এগুলো যথেষ্ট নয় বলে মনে করে সংস্থাটি। তারা এসব সংস্কার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার পরামর্শ দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে রবার্ট ওয়াটকিন্স বলেন, এ প্রতিবেদন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ভালো করে বুঝতে এবং এসডিজি অর্জনে করণীয় ঠিক করতে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে আগামী অর্থবছর থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করা হলে অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারি কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন বিআইডিএস মহাপরিচালক কেএএস মুর্শিদ। তিনি বলেন, মাত্র ৩২ হাজার রেজিস্টার্ড ভ্যাট দাতা ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিলে এটা দেশের অর্থনীতিতে বা দেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় কোনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে না। এসময় তিনি বলেন, দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থার অভাবে বিনিয়োগ বাড়ছে না। একই কারণে বিদেশে অর্থপাচার হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।
Posted ২:৩৭ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed