নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ১২:১৭ অপরাহ্ণ
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩ কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো, নূরানী ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার, রিজেন্ট টেক্সটাইল ও কাট্টালি টেক্সটাইল। এ ৩ কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিয়েছে বিএসইসি। ওই তিনটি কোম্পানির বিষয়ে সুপারিশ প্রদানে বিএসইসির উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলেন, কমিশনার আব্দুল হালিম (তত্ত্বাবধায়ক), অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।
উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কোম্পানি তিনটির আর্থিক অবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, নূরানী ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার, রিজেন্ট টেক্সটাইল ও কাট্টালি টেক্সটাইলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে কমিশনার আব্দুল হালিম (তত্ত্বাবধায়ক), অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের সমন্বয়ে একটি সুপারিশ প্রণয়ন করে বিএসইসি’র কাছে পেশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, সম্প্রতি ফেনী জেলার ফতেহপুরে অবস্থিত নূরানী ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার কোম্পানির কারখানায় সরেজমিন পরিদর্শন করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। তবে পরিদর্শনে কোম্পানিটির কারখানা বন্ধ পায় ডিএসই। এরপর কোম্পানিটির রাজধানীর বাংলামোটরে অবস্থীত প্রধান কার্যালয়ে গিয়েও তা বন্ধ পায় ডিএসই। চলতি বছরের গত ৯ আগস্ট এ তথ্য ডিএসই’র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। একইসঙ্গে বিষয়টি বিএসইসিকেও অবহিত করে প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে, ডিএসই তাদের পরিদর্শন প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, কারখানা ও প্রধান কার্যালয় বন্ধ পাওয়া গেলেও নূরানী ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার নিয়মিত আর্থিক প্রতিবেদনসহ অন্যান্য তথ্য জমা দিচ্ছে। ওই সব তথ্য থেকে কখনোই মনে হয়নি যে কোম্পানিটির কারখানা এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কারখানা ও প্রধান কার্যালয় বন্ধ থাকার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা জানায়নি কোম্পানিটি।
ফলে সার্বিক বিষয় বিবেচনায় এনে গত ১১ আগস্ট নুরানী ডাইং অ্যান্ড সোয়েটারের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি। একইসঙ্গে কোম্পানির সংশ্লিষ্ট হিসাব বছরের জন্য নিয়োজিত নিরীক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করা হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে, আইন লঙ্ঘন করে সহযোগী কোম্পানিতে বিনা সুদে ঋণ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে রিজেন্ট টেক্সটাইলের বিরুদ্ধে। বিনা সুদে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ও শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত রিজেন্ট টেক্সটাইল তার সহযোগী কোম্পানিতে বিনা সুদে ঋণ দিয়েছে ১৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। আর ২০১৯ সালে এ ঋণের পরিমাণ ছিল ২০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আর ২০১৮ সালে ৩১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, ২০১৭ সালে ১৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা এবং ২০১৬ সালে ১৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ছিল সহযোগী কোম্পানিতে ঋণ। এসব ঋণ রিজেন্ট টেক্সটাইলের আর্থিক হিসাব বিবরণীতে ‘ডিউ ফর্ম অ্যাফিলিয়েটেড কোম্পানিজ’ শিরোনামে দেখানো হয়েছে। অথচ রিজেন্ট টেক্সটাইলের নামে ব্যাংক থেকে নেওয়া এই ঋণ সহযোগী কোম্পানিতে বিনা সুদে ব্যবহার করা হয়েছে। আর এর সুদ বহন করছে রিজেন্ট টেক্সটাইল। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বিএসইসি।
এছাড়া, কাট্টালি টেক্সটাইলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ও অসঙ্গতি খতিয়ে দেখবে বিএসইসি।
বাংলাদেশ সময়: ১২:১৭ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
bankbimaarthonity.com | saed khan