• তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম মুনাফা প্রবৃদ্ধি একমির

    | ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ | ২:১৯ অপরাহ্ণ

    তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম মুনাফা প্রবৃদ্ধি একমির
    apps

    মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান অবমূল্যায়নের কারণে তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম মুনাফা প্রবৃদ্ধি হয়েছে দি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের। ওষুধ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর হওয়ায় ২০১৭-১৮ হিসাব বছরে ৯ দশমিক ১২ শতাংশ বিক্রয় প্রবৃদ্ধি হলেও এর বিপরীতে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ১১ দশমিক ২৩ শতাংশ। ফলে আগের বছরের তুলনায় গেল বছর কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। অথচ এর আগের দুই হিসাব বছরে যথাক্রমে ২৬ দশমিক ৯৩ ও ১৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ মুনাফা প্রবৃদ্ধি হয়েছিল কোম্পানিটির।

    কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুসারে ২০১৭ সালের জুলাইয়ের শুরুতে ১ ডলার ৮০ টাকা ৬০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে, যা ২০১৮ সালের জুন শেষে ৮৩ টাকা ৭৫ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। আর গত বছরের ডিসেম্বর শেষে এটি আরো বেড়ে ৮৩ টাকা ৯০ পয়সা হয়েছে। ফলে ডলারের দরবৃদ্ধি এখনো অব্যাহত থাকায় চলতি হিসাব বছরেও কোম্পানিটি ব্যয়বৃদ্ধির চাপে থাকবে।

    Progoti-Insurance-AAA.jpg

    কোম্পানিটির কর্মকর্তারা বলছেন, টাকার বিপরীতে ডলারের অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির প্রভাবে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে। এতে কোম্পানির গ্রস প্রফিট মার্জিন ও নিট প্রফিট মার্জিন দুটোই কমেছে। তবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বিভিন্নভাবে ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি এ বছর একমির স্টেরয়েড ও হরমোন, পেনিসিলিন ও সলিড ডোজেস ইউনিটের সম্প্রসারিত অংশ চালু হতে যাচ্ছে, যা মুনাফার ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব রাখবে বলে মনে করছেন তারা।

    সর্বশেষ সমাপ্ত ২০১৭-১৮ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে একমির বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৪৮১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, যা আগের হিসাব বছরে ছিল ১ হাজার ৩৫৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এর বিপরীতে গেল হিসাব বছরে কোম্পানিটির উৎপাদন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৮৯৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা, যা আগের বছর ছিল ৮০৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এক বছরে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ৯০ কোটি ২৫ লাখ টাকা বা ১১ দশমিক ২৩ শতাংশ। এর আগে ২০১৬-১৭ হিসাব বছরে ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ ও ২০১৫-১৬ হিসাব বছরে ৮ শতাংশ উৎপাদন ব্যয় বেড়েছিল কোম্পানিটির। ফলে ২০১৭-১৮ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ১৪২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, যা আগের বছর ছিল ১৩৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কর-পরবর্তী মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।


    ডলারের দরবৃদ্ধির প্রভাবে তুলনামূলক কম মুনাফা প্রবৃদ্ধি হলেও গত বছর কোম্পানিটির বিভিন্ন আর্থিক নির্দেশক ইতিবাচক ছিল। এর মধ্যে গত বছর রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ১৩ শতাংশ, গ্রস মুনাফা প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৫ ও শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।

    উল্লেখ্য, ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৩৫ শতাংশ নগদ দিয়েছে একমি ল্যাবরেটরিজ। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬ টাকা ৭৪ পয়সা ও শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৮৩ টাকা ৩৯ পয়সা।

    হালনাগাদ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৮৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৯৯ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ এর এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৮৫ টাকা ২১ পয়সা।

    ডিএসইতে বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ারদর ২ দশমিক ৪৯ শতাংশ বা ২ টাকা ৩০ পয়সা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৪ টাকা ৬০ পয়সায়। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন দর ছিল ৭৮ টাকা ৩০ পয়সা ও সর্বোচ্চ ১১৭ টাকা ৪০ পয়সা।

    ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৫০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ২১১ কোটি ৬০ লাখ ২০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১ হাজার ৩৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এ কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ২১ কোটি ১৬ লাখ ১ হাজার ৭০০। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালক ৪০ দশমিক ১২ শতাংশ, প্রতিষ্ঠান ২৯ দশমিক ৬৮, বিদেশী বিনিয়োগকারী শূন্য দশমিক ৯৭ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ২৯ দশমিক ২৩ শতাংশ শেয়ার।

    সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারটির মূল্য-আয় অনুপাত বা পিই রেশিও ১৩ দশমিক ৯৬, অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যা ১২ দশমিক ৭৯।

    Facebook Comments Box

    বাংলাদেশ সময়: ২:১৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৩ জানুয়ারি ২০১৯

    bankbimaarthonity.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    Archive Calendar

    শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
     
    ১০১১১২
    ১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
    ২০২১২২২৩২৪২৫২৬
    ২৭২৮২৯৩০৩১  
  • ফেসবুকে ব্যাংক বীমা অর্থনীতি