নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ০৯ জুলাই ২০২০ | প্রিন্ট | 486 বার পঠিত
চলতি বছরের এপ্রিল থেকেই সব ধরনের ঋণের সুদ হার এক অংকে নামিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্ত এরপরও ১৩ ব্যাংক সেই নির্দেশনা মানছে না। ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা থাকলেও বেসরকারি ও বিদেশি খাতের অন্তত ১৩টি ব্যাংক মে মাস পর্যন্ত তা কার্যকর করেনি। এ তালিকায় রয়েছে বেসরকারি খাতের ১২টি এবং বিদেশি খাতের একটি ব্যাংক। তবে এ সময়ে বেশিরভাগ ব্যাংক ঋণের সুদ ৯ শতাংশের নিচে নামানোর পাশাপাশি আমানতের সুদহার কমিয়ে এনেছে। এতে সার্বিক ব্যাংকিং খাতে ঋণ ও আমানতের সুদ ব্যবধান (স্প্রেড) ৩ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। তবে আগের মাস এপ্রিলের তুলনায় মে-তে সুদের ব্যবধান সামান্য বেড়েছে। ব্যাংকগুলোর পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি করা হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ১ এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ধরনের ঋণের সুদ ৯ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা। কিন্তু ঠিক কী কারণে এসব ব্যাংক নামিয়ে আনেনি সেটা খতিয়ে দেখবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জানা গেছে, ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ধরনের ঋণের সুদ এক অঙ্কে নামিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বলা হয়, সব ধরনের ঋণ ও বিনিয়োগের ওপর সর্বোচ্চ সুদহার হবে ৯ শতাংশ।
আলোচ্য সময়ে যেসব ব্যাংক এখনো দশ শতাংশের উপরে ঋণ বিতরণ করছে সেগুলো হলো- স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং মধুমতি ব্যাংক।
গ্রাহক কোনো কারণে খেলাপি হলে ওই সময়ের জন্য ঋণের স্থিতি বা কিস্তির বিপরীতে ৯ শতাংশের বাইরে অতিরিক্ত আরো ২ শতাংশ সুদ আরোপ করা যাবে। এর বাইরে ঋণের বিপরীতে অন্য কোনো সুদ বা মুনাফা আরোপ করা যাবে না। কিন্তু এপ্রিল মাসে ১৫টি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের র্দেশনা মেনে ৯ শতাংশের নিচে সুদ নামাতে ব্যর্থ হয়। আর মে মাসে ব্যর্থের তালিকায় আছে ১৩টি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ক্রেডিট কার্ড ও ভোক্তা ঋণ ছাড়া মে মাসে ব্যাংক খাতের গড় সুদহার নেমেছে ৮.০৯ শতাংশে। গত এপ্রিলে যা ছিল ৮.১৭ শতাংশ। এ সময়ে আমানতের গড় সুদহার ৫.২৪ শতাংশে নেমেছে, যা এপ্রিলে ছিল ৫.৩৭ শতাংশ। ফলে ব্যাংকগুলোর সুদের স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ২.৮৫ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ২.৮০ শতাংশ।
অন্যদিকে ক্রেডিট কার্ড ও ভোক্তা ঋণসহ ব্যাংকিং খাতে মে মাসে গড় সুদহার নেমেছে ৮.১৮ শতাংশে। গত এপ্রিলে যা ছিল ৮.২৯ শতাংশ। এ সময়ে আমানতের গড় সুদহার ৫.২৪ শতাংশে নেমেছে, যা এপ্রিলে ছিল ৫.৩৭ শতাংশ। ফলে ব্যাংকগুলোর সুদের স্প্রেড দাঁড়িয়েছ ২.৯৪ শতাংশে, যা এপ্রিলে ছিল ২.৯২ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্রেডিট কার্ড ও ভোক্তা ঋণ ছাড়া মে মাসে বেসরকারি ব্যাংকের ঋণের গড় সুদহার ছিল ৮.৫৩ শতাংশ। আর আমানতে ছিল ৫.৬৪ শতাংশ। ফলে তাদের গড় স্প্রেড নেমেছে ২.৮৯ শতাংশে। এ সময়ে বিদেশি ব্যাংকগুলো গড়ে ২.৭৪ শতাংশ সুদে আমানত এবং ৭.৭৪ শতাংশ সুদে ঋণ দিয়েছে। এসব ব্যাংকের স্প্রেড নেমেছে ৫ শতাংশে।
সরকারি মালিকানার বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো গড়ে ৫.৬২ শতাংশ সুদে আমানত এবং ৭.৬৭ শতাংশ সুদে ঋণ দিয়েছে। ফলে তাদের স্প্রেড নেমেছে ২.০৫ শতাংশে। অন্যদিকে এ সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ৪.৩৪ শতাংশে আমানত ও ৬.৪৬ শতাংশে ঋণ দিয়েছে। এতে তাদের স্প্রেড নেমেছে ২.১২ শতাংশে।
Posted ৫:৩০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ জুলাই ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan