মঙ্গলবার ১৫ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩০ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি ভর্তুকিতে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে শস্যবীমা

আব্দুল্লাহ ইবনে মাস্উদ   |   সোমবার, ২৯ জুলাই ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   909 বার পঠিত

সরকারি ভর্তুকিতে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে শস্যবীমা

দেশে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে ‘শস্যবীমা’। বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য তাদের এ বীমার আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এ বছর থেকেই এটি চালু করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে হাওর বেষ্টিত সাত জেলায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে শস্যবীমা চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে পুরো দেশের কৃষকদের এর আওতায় আনা হবে। শস্যবীমার প্রিমিয়ামের অর্ধেক সরকার ভর্তুকি হিসেবে প্রদান করবে। বাকি অর্ধেক কৃষকদের কাছ থেকে নেয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় এ বীমা চালু করার পুরো প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হওয়া ফসলের আর্থিক ক্ষতিপূরণসহ ১০ ধরনের সুবিধা পেতে যাচ্ছেন কৃষক।

‘শস্যবীমার’ আওতায় প্রাথমিকভাবে হাওরের সাত জেলায় পাইলট আকারে এ বীমা চালু করা হবে। নাম হবে শস্য বীমা প্রকল্প। এটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) আলোকে যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে সাধারণ বীমা করপোরেশন ও গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। পাশাপাশি এটি পর্যবেক্ষণের জন্য গঠন করা হবে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি। এ কমিটিতে থাকবে কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ, দুর্যোগ এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ হাওর ও জলাশয় উন্নয়ন অধিদফতর, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর, বাংলাদেশ ব্যাংক ও কৃষি বাংকের প্রতিনিধি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

সূত্র জানায়, যে সাতটি জেলায় শস্যবীমা চালু করা হবে সেগুলো হচ্ছে- সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া। এসব জেলায় প্রতিবছর ১৯ লাখ ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে কৃষি ফসল উৎপাদন করা হয়। এর ৯০ শতাংশের মধ্যে বোরো ধান উৎপাদন করা হয়। এসব জেলায় ৩৭৩টি হাওর রয়েছে।

শস্যবীমার ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি ধারণাপত্র জমা দিয়েছে সাধারণ বীমা করপোরেশন। ধারণাপত্রে ২০০৪, ২০১০, ২০১৩, ২০১৬ এবং ২০১৭ সালের বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির বিভিন্ন বর্ণনা দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে বোরো ধান তোলার ১৫-২০ দিন আগে আকস্মিক বন্যায় হাওর এলাকার সম্পূর্ণ ফসল তলিয়ে যায়। ২০১৭ সালের বন্যায় হাওর এলাকার সাতটি জেলার মোট উৎপাদিত ৫২.৫ লাখ টন ফসলে ক্ষতি হয় ৩৪৮ কোটি ৬ লাখ টাকা।

সাধারণ বীমা করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিতে শস্যবীমার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করলে সুফল পাওয়া যাবে বেশি। তাই বেসরকারি নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোকেও এর সাথে যুক্ত করার সুপারিশ করেছে সাধারণ বীমা করপোরেশন।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় সাধারণ বীমা করপোরেশনের ‘আবহাওয়া সূচকভিত্তিক শস্যবীমা’ শীর্ষক একটি পাইলট প্রকল্প রয়েছে। প্রাথমিকভাবে এ পাইলট প্রকল্পের মতোই শস্যবীমা চালু করা হতে পারে। এডিবির এ প্রকল্পের মতো এই বীমায় প্রিমিয়ামের একটি অংশ পরিশোধ করবে সরকার। বাকি অংশ দেবে বীমাগ্রহীতা বা কৃষক। ভারতেও এ ধরনের বীমা রয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক সরকার যৌথভাবে শস্যবীমার ৮০ শতাংশ প্রিমিয়াম ভর্তুকি হিসেবে দিয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে নদীভাঙন কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের পুনর্বাসনের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। শস্যবীমা চালু হলে এ খাত থেকে ভর্তুকির টাকা দেয়া হতে পারে।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বীমাসংক্রান্ত যত আইন, বিধিবিধান রয়েছে তা অগ্নি, নৌ, মোটর ও জীবনবীমা পরিচালনার জন্য করা হয়েছে। শস্যবীমার জন্য কোনো পৃথক আইন নেই। এ ক্ষেত্রে একটি পৃথক আইন করা হতে পারে। কৃষকদের বীমার প্রতি আস্থা তৈরিতে কৃষি ব্যাংক, এনজিও, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরকে সম্পৃক্ত করা হতে পারে। এসব সংস্থা ও ব্যাংক কৃষকদের ঋণের শর্তে শস্যবীমার প্রিমিয়াম আদায় করবে। এতে ঋণ ফেরত পাবার নিশ্চয়তার পাশাপাশি কৃষকদের কাছ থেকে প্রিমিয়াম আদায় সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে যেসব কৃষক এসব সংস্থা কিংবা ব্যাংকের সাথে জড়িত নন তাদেরও শস্যবীমার আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি হাওরে বন্যায় কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে কনসালট্যান্ট নিয়োগ দেয়া হতে পারে।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৯ জুলাই ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11363 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।