বিবিএনিউজ.নেট | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ৩:৫৮ অপরাহ্ণ
এরশাদ ব্রাদার্সের পেটে চলে গেছে ৫ ব্যাংকের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। সরবরাহকারী এ প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আর পরিশোধ করছে না। এর মধ্যে এবি ব্যাংকেরই রয়েছে প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকা। বারবার তাগিদ দিয়েও পরিশোধ না করায় এবি ব্যাংকের মামলায় প্রতিষ্ঠানটির কর্নধার মো. এরশাদ আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়না জারি হয়েছে।
জানা গেছে, এবি ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং শাখা থেকে ২০১০ সালে ১১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রড, সিমেন্টসহ পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এরশাদ ব্রাদার্স। ধীরে ধীরে ঋণের সীমা বাড়িয়ে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দাঁড়ায় ১৩৯ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে এসে প্রতিষ্ঠানটি ঋণ পরিশোধে অনিয়মিত হয়ে পড়ে। গত বছর থেকে কোনো ঋণই পরিশোধ করছে না। এ সময়ের মধ্যে দুইবার ঋণ নবায়নও করা হয়েছিল। কিন্তু এতেও কোনো ঋণ পরিশোধ না করায় ঋণ আদায়ের জন্য প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করে এবি ব্যাংক। এর মধ্যে গত বছর ২৭ আগস্ট ৮৪ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য প্রথম মামলা, ৩ অক্টোবরে ১৬ কোটি টাকার জন্য দ্বিতীয় মামলা, গত ৫ ডিসেম্বরে ১৫ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য তৃতীয় মামলা এবং ১৭ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য চতুর্থ মামলা করা হয় গত ২৮ মে’তে। এর মধ্যে চতুর্থ মামলায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
এবি ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, ওই দিন রাতে এরশাদ ব্রাদার্সের কর্নধার মো. এরশাদ আলীকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ তার ধানমন্ডির বাসায় হানা দেয়। কিন্তু তিনি বাসায় না থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, এরশাদ ব্রাদার্স শুধু এবি ব্যাংকেরই ঋণখেলাপি নন, আরো চারটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার ব্যাংকের ৮৩ কোটি ২৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, ব্র্যাক ব্যাংকের ১৫ কোটি ৫ লাখ ২৭ হাজার টাকা, সাউথইস্ট ব্যাংকের ৫ কোটি ৮৯ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং ফনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ২৯ কোটি টাকা রয়েছে।
এ বিষয়ে এবি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আফজাল জানিয়েছেন, এবি ব্যাংকের কোনো ঋণখেলাপি টাকা পরিশোধ না করে ছাড় পাবেন না। তিনি যত বড় ক্ষমতাধর ব্যক্তিই হোন না কেন, তিনি ব্যাংকের খাতায় একজন ঋণখেলাপি। আর ব্যাংকের টাকা পরিশোধ না করলে তাকে আইনের আওতায় আসতেই হবে। তিনি বলেন, এবি ব্যাংকের বেশির ভাগ ঋণখেলাপি গত ২-৩ বছরে কোনো ঋণ পরিশোধ করছেন না। এর ফলে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণসহ মন্দঋণ বেড়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে।
এবি ব্যাংকের এমডি বলেন, ঋণ পরিশোধ না করায় ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাচ্ছে, বাড়ছে অস্থিরতা। অর্থনীতি এখন হুমকির সম্মুখীন। অন্য দিকে ঋণখেলাপিরা বড় বড় দামি গাড়ি হাঁকাচ্ছেন। ছেলেমেয়েদের দেশ-বিদেশে বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করাচ্ছেন। অথচ সাধারণের আমানতের অর্থ ব্যাংকের টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে এবি ব্যাংক এখন জিরো টলারেন্স। যারাই ব্যাংকের টাকা ফেরত দেবেন না, তিনি যত বড় ক্ষমতাধর ব্যক্তিই হোন না কেন তাকে আইনের আওতায় আসতেই হবে।
এ বিষয়ে এরশাদ ব্রাদার্সের কর্নধার মো. এরশাদ আলীর বক্তব্য নিতে তার সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনো বারই তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ৩:৫৮ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed