মঙ্গলবার ২৪ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

Ad
x

পাটকলের ১১ হাজার শ্রমিক বিপাকে

বিবিএনিউজ.নেট   |   রবিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২০   |   প্রিন্ট   |   383 বার পঠিত

পাটকলের ১১ হাজার শ্রমিক বিপাকে

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের শীতলক্ষ্যার পাড়ে সত্তরের দশকে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় আটটি পাটকল। এসব কারখানায় ১৫-২০ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়। কিন্তু লোকসানের মুখে এক যুগ আগে বন্ধ হয়ে যায় পাঁচটি বেসরকারি পাটকল। বেকার হয়ে পড়েন ১১ হাজারের বেশি শ্রমিক। দীর্ঘদিনেও বেশির ভাগ শ্রমিক তাদের পাওনাদি পাননি। ফলে সংসার চালাতে অনেকে ভিটেমাটি বেচে নিঃস্ব হয়েছেন। পরিবার নিয়ে এখন মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন তারা। এসব শ্রমিক পাওনাদি পরিশোধ ও কর্মসংস্থানে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, অব্যাহত লোকসানের মুখে এক যুগ আগে নবাব আশকারী জুটমিল, মার্সিকি জুটমিল, সাত্তার জুটমিল, এলাইড জুটমিল ও গাউছিয়া জুটমিল বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত ফাইবার এবং বেসরকারি উত্তরা ও নবারন জুটমিল চলছে খুঁড়িয়ে।

শ্রমিকদের অভিযোগ, এক যুগ পেরিয়ে গেলেও বন্ধ পাটকলগুলোর মালিক বেশির ভাগ শ্রমিকের পিএফ (ব্যক্তিগত তহবিল), বকেয়া বেতন ও সার্ভিসের টাকা দেননি। বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় তারা মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।

বিরাব এলাকার নবাব আশকারী জুট মিলের শ্রমিকরা জানান, তাদের কারখানায় প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক ছিল। সে সময় সপ্তাহে ২৫০-৩০০ টাকা মজুরি দেওয়া হতো। বন্ধ ঘোষণার দীর্ঘদিনেও বেশির ভাগ শ্রমিককে পিএফের টাকা দেওয়া হয়নি। কারখানার শ্রমিক আসরউদ্দিন বলেন, ‘চাকরি যাওনের পর থেইকা আমি বেকার। দুই পোলা ও স্ত্রী নিয়া খুব কষ্ট কইরা দিন কাটাইতাছি। অভাবে পোলা দুইডারে লেহাপড়াও করাইতে পারি নাই। সব বিক্রি করছি, অহন ভিটামাটি ছাড়া কিছুই নাই। আমার পিএফ ফান্ড ও দুই সপ্তাহের বেতনের কিছুই পাই নাই।’ নবাব আশকারী পাটকল বন্ধের পর পিএফ, বেতন ও সার্ভিস চার্জের জন্য শ্রমিকরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করলেও কোনো লাভ হয়নি।

কাঞ্চন এলাকার মার্সিকি জুটমিলে প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। ১০ বছর আগে পাট সংকটে কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। এই জুটমিলের শ্রমিক আবদুল গাফফার বলেন, ‘অভাবে ভিটেমাটি এমনকি স্ত্রীর গহনাও বিক্রি করেছি। ধরনা দিয়েও পিএফ ও সার্ভিস চার্জের টাকা পাই নাই।’

হাটাবো এলাকার সাত্তার জুটমিলে ১ হাজার ৭০০ শ্রমিক কাজ করতেন। বন্ধের পর মালিকপক্ষ পিএফের ১৬ ভাগের মধ্যে ৬ ভাগ টাকা দিয়ে কাগজে সই নেয়। এরপর ১২ বছরেও কোনো টাকা দেয়নি। এই মিলের শ্রমিক মতিউর রহমান বলেন, ‘অনেক কষ্ট করেছি। বারবার ঘুরেও টাকা পাইনি। পরে একটি চায়ের দোকান দিয়েছি। বেতন ও পিএফ মিলে প্রায় ২৫ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে।’

বানিয়াদি এলাকার এলাইড জুটমিল বন্ধের প্রায় ১০ বছর পর ২০১৮ সালে চালু করা হয়। কিন্তু পাট সংকটে দেড় মাস আগে এটি বন্ধ হয়ে গেছে। কারখানার দেড় শতাধিক শ্রমিকের বেতন ও পিএফের টাকা দেওয়া হয়নি। তবে এলাইড জুটমিলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা তানভীর ইসলাম দাবি করেন, ‘সব শ্রমিকের পুরো পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে।’

একই অবস্থা মুড়াপাড়া এলাকার গাউছিয়া জুটমিলের। বন্ধের ১৪ বছরেও কারখানাটির ১ হাজার ৪০০ শ্রমিক তাদের পাওনা বুঝে পাননি। অনেকে এরই মধ্যে মারা গেছেন। তাদের সন্তানরাও মালিকপক্ষের কাছে ঘুরে কোনো টাকা পাচ্ছেন না। বন্ধ পাটকলের শ্রমিকরা সরকারিভাবে তাদের কর্মসংস্থানের দাবি জানান। একই সঙ্গে মালিকপক্ষ থেকে পাওনাদি আদায়ে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

Facebook Comments Box

Posted ১:২৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11770 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।