বিবিএনিউজ.নেট | মঙ্গলবার, ২১ মে ২০১৯ | প্রিন্ট | 484 বার পঠিত
২০১৮ সালে খেলাপি ঋণের ভারে ভালো করতে পারেনি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক। মুনাফায় উল্লম্ফন হলেও খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে গিয়ে শেয়ারহোল্ডারকে নগদ টাকা দিতে পারেনি। অবস্থান টিকিয়ে রাখতে বোনাস লভ্যাংশ দিয়ে দায় সেরেছে বেশির ভাগ ব্যাংক।
তবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ প্রান্তিকে তিন মাসে ব্যাংকের মুনাফায় চমক দেখা গেছে। এই সময়ে ৭০ শতাংশ ব্যাংকের মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও আগের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে ৪০ শতাংশ ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছিল।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে ব্যাংক মৌলভিত্তির খাত হিসেবে পরিচিত, এই খাতের কম্পানিতে বিনিয়োগকারীর আগ্রহও বেশি। কিন্তু সম্প্রতি খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় প্রভিশন সংরক্ষণ করতে গিয়ে আর্থিকভাবে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংক। ভালো মুনাফা হলেও বিনিয়োগকারীকে নগদ অর্থ দিতে পারেনি।
২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ ব্যাংকেরই মুনাফা বাড়ে কিন্তু নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে হাতে গোনা কয়েকটি ব্যাংক। বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে মুনাফার পুরো অংশ রেখে দিয়ে কম্পানির পেইড-আপ বা পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধি করেছে। এতে ব্যাংকে মুনাফার তুলনায় লভ্যাংশ প্রদান অনুপাত (ডিভিডেন্ট পে আউট রেশিও) শূন্য।
খেলাপি ঋণ বাড়ায় প্রভিশনিং রাখতে গিয়ে সংকটে ব্যাংক, এখন নগদ লভ্যাংশ দিলে সংকট আরো বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ জন্য ব্যাংক খাতকে টিকিয়ে রাখতেই বোনাস লভ্যাংশ, এটা পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীর জন্য সাময়িক খারাপ হলেও দীর্ঘ মেয়াদে ব্যাংক খাতের জন্য ভালো।
২০১৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংক সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে। এতে ১৬টি ব্যাংকের মুনাফা আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে। অর্থাৎ কম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ১৪টি ব্যাংকের ইপিএস বা মুনাফা কমেছে।
কিন্তু দুটি ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশই দিতে পারেনি। বাকি ২৮টি ব্যাংকের মধ্যে চারটি শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আর আটটি ব্যাংক নগদ ও বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। অর্থাৎ নগদ অর্থের সঙ্গে বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। ১৬টি ব্যাংক মুনাফা করলেও শেয়ারহোল্ডারদের একটি টাকাও দেয়নি।
২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসে প্রথম প্রান্তিকের হিসাব অনুযায়ী, এবার মুনাফায় চমক দেখিয়েছে ব্যাংক। আগের বছরের চেয়ে এবার ২১টি বা ৭০ শতাংশ ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ৮টি বা ২৭ শতাংশ ব্যাংকের মুনাফা হ্রাস পেয়েছে বা ইপিএস কমেছে। আর একটি ব্যাংকের লোকসান আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রথম প্রান্তিকের হিসাব বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি ইপিএস হয়েছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের। ব্র্যাক ব্যাংকের ইপিএস ১.২২ টাকা। যদিও ব্যাংক দুটির ইপিএস আগের বছরের চেয়ে কমেছে। আর ইস্টার্ন ব্যাংকের ইপিএস ১.১৭ টাকা।
আগের বছরের প্রথম প্রান্তিকের ন্যায় ২০১৯ সালের প্রথম প্রান্তিকেও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের লোকসান হয়েছে। ব্যাংকটির এ বছরের প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে লোকসান বেড়েছে ২৩ শতাংশ। এ ছাড়া বাকি সবগুলো ব্যাংকের ইপিএস এক টাকার নিচে।
২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে মার্চ প্রথম প্রান্তিকে ১২টি বা ৪০ শতাংশ ব্যাংকের মুনাফা বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ ২০১৭ সালে প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকের যে মুনাফা হয়, তার চেয়ে মাত্র ১২টি ব্যাংকের মুনাফা বৃদ্ধি পায়। আর ১৮টি ব্যাংকের মুনাফা বা আয় কমেছিল। যদিও বছর শেষে ব্যাংকের আয় বৃদ্ধি পায়।
Posted ১:৫৩ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২১ মে ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed