• প্রথম ৬ মাসে বাগানে ৪৪ শতাংশ চা উৎপাদন বেড়েছে

    বিবিএনিউজ.নেট | ১৬ অগাস্ট ২০১৯ | ১১:৫৫ এএম

    প্রথম ৬ মাসে বাগানে ৪৪ শতাংশ চা উৎপাদন বেড়েছে
    apps

    আবহাওয়া অনুকূল থাকায় দেশের চা বাগানগুলোয় এ বছর চা উৎপাদন বেড়েছে। চলতি বছর প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৪ শতাংশ বেশি চা উৎপাদন হয়েছে ১৬৬টি বাগানে। উৎপাদনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি বছর নয় কোটি কেজির বেশি চা উৎপাদন হবে বলে আশা করছে চা বোর্ড।

    চা বোর্ডের সর্বশেষ মাসিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ছয় মাসে দেশের ১৬৬টি বাগানে মোট চা উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৪৮ হাজার কেজি। আর গত বছরের একই সময়ে উৎপাদন হয়েছিল মাত্র ১ কোটি ৯৩ লাখ ৯৮ হাজার কেজি চা। অর্থাৎ বছরের প্রথমার্ধে ৪৪ শতাংশ বেড়েছে চা উৎপাদন।

    খাত বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ও রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া চা উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে অনুকূল। অর্থাৎ রাতের বেলা বৃষ্টির পাশাপাশি দিনে খরতাপ থাকলে ভালো মানের কুঁড়ি উৎপাদন হয়। চলতি বছরের বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত না হলেও নিয়মিত বৃষ্টিপাত ও দিনের বেলা রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ার কারণে দেশের বাগানগুলোয় ভালো মানের চা উৎপাদন হচ্ছে। পাশাপাশি চায়ের পরিমাণও বেড়ে গেছে।

    জানতে চাইলে হবিগঞ্জের দারাগাঁও চা বাগানের ম্যানেজার ফরিদ আহমদ শাহিন বলেন, অনুকূল পরিবেশের কারণে চা উৎপাদন বেড়েছে। বছরের প্রথম দিকে চা উৎপাদন কম হলেও এখন তা প্রায় দ্বিগুণ। বর্তমান বর্ষা মৌসুমেও ভালো বৃষ্টি হচ্ছে। এখনকার চাগুলো এক মাস পর নিলামে উঠবে। ফলে কয়েক মাস ধরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি চা উৎপাদন করা সম্ভব বলে আশা করছি।


    এদিকে মাসভিত্তিক উৎপাদনেও বেশ ভালো করছে বাগানগুলো। দেশের বাগানগুলোয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৪ লাখ ৯৫ হাজার কেজি, ফেব্রুয়ারিতে ১ লাখ ১৪ হাজার, মার্চে ১৯ লাখ ১৭ হাজার, এপ্রিলে ৬১ লাখ ১০ হাজার, মে মাসে ৭৬ লাখ ৪৫ হাজার এবং সর্বশেষ জুনে ১ কোটি ১৬ লাখ ৬৭ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। যদিও ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ৩ লাখ ৩১ হাজার কেজি, ফেব্রুয়ারিতে ৩৮ হাজার, মার্চে ১৫ লাখ ৫৬ হাজার, মে মাসে ৬৩ লাখ ৩৪ হাজার ও জুনে ৭৬ লাখ ৩৪ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়েছিল বাগানগুলোয়।

    মূলত জুন থেকেই চা উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে। ২০১৮ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসেই গড়ে এক কোটি কেজিরও বেশি চা উৎপাদন হয়েছিল। চলতি বছর উৎপাদনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে চা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে নয় কোটি কেজি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চা বোর্ডের উৎপাদনসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের শেষের ছয় মাসে মোট সাড়ে ছয় কোটি কেজি চা উৎপাদন হয়েছিল। ফলে প্রথম ছয় মাসের উৎপাদন মিলিয়ে নয় কোটি কেজি চা উৎপাদন সম্ভব। অনুকূল আবহাওয়া পেলে কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ শত মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের দেশে পরিণত হবে। তখন চা আমদানির পরিবর্তে বাংলাদেশ আবারো রফতানিমুখী চায়ের দেশ হবে বলে আশা করছেন তিনি।

    ২০১৬ সালে দেশে রেকর্ড সাড়ে আট কোটি কেজি রেকর্ড চা উৎপাদন হয়েছিল। এর পরের বছরই উৎপাদন কমে নেমে আসে ৭ কোটি ৯০ লাখ কেজিতে। তবে ২০১৮ সালে উৎপাদন আবারো বেড়ে ৮ কোটি ২১ লাখ কেজিতে উন্নীত হয়। চলতি বছর দেশের বাগানগুলোয় চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা বাড়িয়ে ৭ কোটি ৪১ লাখ ৪০ হাজার কেজিতে উন্নীত করা হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি চা উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    চা বোর্ডের পরিকল্পনা বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, কয়েক বছর ধরে দেশের বেশ কয়েকটি বাগানে মালিকানা ও বিনিয়োগসংক্রান্ত জটিলতায় উৎপাদন কমে গিয়েছিল। এছাড়া রুগ্ণ বাগানগুলোর কারণে চা বাগানের সংখ্যা ১৬২-তে নামিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু দেশের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বাগান বিক্রির মাধ্যমে নতুন বিনিয়োগ হওয়ায় চা উৎপাদনে প্রভাব পড়েছে। পাশাপাশি গত দুই বছর চা উৎপাদনে ভালো দাম পাওয়ায় বাগান মালিকরাও অতিরিক্ত চা উৎপাদনে মনোযোগী হয়েছেন। এ কারণে কয়েক বছরের মধ্যেই দেশের চাহিদার অতিরিক্ত উদ্বৃত্ত চা উৎপাদন হবে বলে আশা করছে চা বোর্ড।

    প্রসঙ্গত, দুই বছর ধরে দেশে চা উৎপাদন চাহিদার তুলনায় কিছুটা কম থাকায় দামও ছিল বেশি। ২০১৮ সালে নিলামে গড়ে কেজিপ্রতি ২৫০ টাকার মধ্যে ছিল চায়ের দাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছর এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন মিলিয়ন কেজি চা আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু চলতি বছর এরই মধ্যে চায়ের কেজিপ্রতি গড় দাম ২০০ টাকার নিচে নেমে এসেছে। উৎপাদন আরো বাড়লে দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

    Facebook Comments Box

    বাংলাদেশ সময়: ১১:৫৫ এএম | শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০১৯

    bankbimaarthonity.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    রডের দাম বাড়ছে

    ১৩ জানুয়ারি ২০১৯

    December 2023
    S S M T W T F
     1
    2345678
    9101112131415
    16171819202122
    23242526272829
    3031  
  • ফেসবুকে ব্যাংক বীমা অর্থনীতি