শুক্রবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

ফেব্রুয়ারিতে পদ্মা ব্যাংক নামে আসছে ফারমার্স

  |   শুক্রবার, ০৪ জানুয়ারি ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   995 বার পঠিত

ফেব্রুয়ারিতে পদ্মা ব্যাংক নামে আসছে ফারমার্স

ফারমার্স ব্যাংক ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পদ্মা ব্যাংক নামে কার্যক্রম শুরু করতে চায়। এরই মধ্যে ব্যাংকটির নাম পরিবর্তনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে আসবে নতুন নতুন আমানত ও ঋণ পণ্য।

এ প্রসঙ্গে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এহসান খসরু বলেন, ‘আশা করছি, আগামী মাসেই নতুন নামে কার্যক্রম শুরু করা যাবে। ফারমার্স ব্যাংককে পদ্মা ব্যাংক নামকরণ করতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। যৌথ মূলধনী নিবন্ধনকারী প্রতিষ্ঠানে (আরজেএসসি) অনুমোদন নিতে হবে। যেগুলো শেষ করতে জানুয়ারি মাস লেগে যাবে। বর্তমানে আমানত সংগ্রহের ক্ষেত্রে বেশ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।’

এর আগে সরকারি সিদ্ধান্তে গত বছরের মে মাসে ফারমার্স ব্যাংককে উদ্ধারে ৭১৫ কোটি টাকা মূলধন জোগান দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। নতুন করে জোগান দেওয়া মূলধন যুক্ত হয়ে ফারমার্স ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ১১৬ কোটি টাকা। সোনালী, জনতা, অগ্রণী এবং রূপালী ব্যাংক প্রত্যেকে ১৬৫ কোটি টাকা করে মূলধন জোগান দেয়। আইসিবিকে দিতে হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা। যদিও প্রতিষ্ঠা লগ্নেই আইসিবি ৬০ কোটি টাকার মূলধন জোগান দিয়েছিল। এই অর্থের বড় অংশই খরচ হয়ে গেছে ভবনের ভাড়াসহ বিভিন্ন খাতে বকেয়া পরিশোধে। এছাড়া আগে থেকেই মেয়াদি আমানত ও কলমানি হিসেবে ফারমার্সকে ধার দেওয়া প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা আটকে আছে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের।

এদিকে বন্ড কেনার নামে আরও ৫০০ কোটি টাকা মূলধন দেওয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এরপরও বিপর্যয় কাটাতে পারছে না বেসরকারি এই ব্যাংকটি। এখনও আমানত ফেরত পাওয়ার আশায় ব্যাংকটির শাখায় শাখায় ঘুরছেন গ্রাহকরা। আমানত ফেরত পায়নি পরিবেশ মন্ত্রণালয়, জীবন বীমা করপোরেশন, চট্টগ্রাম বন্দরসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো।

৪০১ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন নিয়ে ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করে ফারমার্স ব্যাংক। কিন্তু চার বছর না পেরোতেই চরম সংকটে পড়ে ব্যাংকটি। শুরুতে ৩৯ জন ব্যক্তি-উদ্যোক্তার বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২৯৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে ১০টি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ ছিল ১০০ কোটি টাকা। এছাড়া অপ্রাতিষ্ঠানিক ৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ ছিল ফারমার্স ব্যাংকে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই ব্যাংকটি থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের ঋণ তুলে নেওয়া হয়েছে। যেগুলো এখন ফেরত আসছে না। ফলে তা খেলাপিতে পরিণত হচ্ছে। বিতরণ করা ঋণের ৫৭.৮২ শতাংশই খেলাপি হয়েছে এই ব্যাংকে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটি ঋণ বিতরণ করেছে ৫ হাজার ৩১১ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে প্রায় ৩ হাজার ৭১ কোটি টাকা। গত জুনে এই ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

ফারমার্স ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালে যাত্রার পর ব্যাংকটি নিট মুনাফা করেছিল প্রায় ৪ কোটি টাকা। ২০১৪ সালে মুনাফা হয় ৩ কোটি, ২০১৫ সালে ২১ কোটি ও ২০১৬ সালে ২৩ কোটি টাকা। এরপর ২০১৭ সালে এসে লোকসান হয় ৫৩ কোটি টাকা।

প্রসঙ্গত, অনিয়ম-দুর্নীতিতে বিপর্যস্ত ফারমার্স ব্যাংককে টেনে তুলতে ২০১৭ সালের শেষের দিকে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর ব্যাংকটির পর্ষদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। তিনি ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। একই দিন ব্যাংকটির অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক চিশতীও পদচ্যুত হন। এরপর দায়িত্বে অবহেলা ও ব্যাংক পরিচালনায় ব্যর্থতার দায়ে ২০১৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর ব্যাংকের এমডি একেএম শামীমকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমানে ব্যাংকটির এমডি’র দায়িত্ব পালন করছেন এহসান খসরু।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৪ জানুয়ারি ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।