
| শনিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট | 896 বার পঠিত
উড়োজাহাজে পণ্য পরিবহনের জন্য ফ্রেইটার সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের কার্গো হোল্ডে কিছু পরিমাণে পণ্য পরিবহন করছে সংস্থাটি। নতুন এ উদ্যোগটি বাস্তবায়ন হলে বিমানের বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহন সেবা দেয়া হবে আলাদা উড়োজাহাজের মাধ্যমে আরো বড় পরিসরে। মূলত আয় বৃদ্ধির জন্যই উদ্যোগটি হাতে নিয়েছে বিমান। বিষয়টির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে এরই মধ্যে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
জানা গেছে, টিকিট বিক্রি বাদে বিমানের আয়ের সর্বোচ্চ উৎস হলো গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং। এর পাশাপাশি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের কার্গো হোল্ডে মালামাল পরিবহন বাবদও কিছু আয় করে থাকে সংস্থাটি। তবে এর পরিমাণ চাহিদার তুলনায় খুবই কম। এ অবস্থায় যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি আলাদা উড়োজাহাজে মালামাল পরিবহনের জন্য ফ্রেইটার সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে এয়ারলাইনস সংস্থাটি।
জানা গেছে, বহরের ১৩টি উড়োজাহাজ দিয়ে বর্তমানে ১৫টি আন্তর্জাতিক ও সাতটি অভ্যন্তরীণ গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান। এসব ফ্লাইটে যাত্রী ও যাত্রীদের ব্যাগেজ ছাড়াও বাণিজ্যিকভাবে মালামাল পরিবহন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশে আকাশপথে আমদানি ও রফতানিকৃত পণ্যের ১০ শতাংশ পরিবহন করছে বিমান। বাকি ৯০ শতাংশ মালামাল পরিবহন করছে বিভিন্ন বিদেশী এয়ারলাইনস।
এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে যুক্ত হওয়া বোয়িংয়ের তৈরি ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার হংস বলাকার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় প্রধানমন্ত্রী বিমান কর্মকর্তাদের পণ্য পরিবহনের জন্য কার্গো সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিতে বলেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ফ্রেইটার সার্ভিস চালুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে একটি কমিটিও গঠন করে বিমান। বিমানের রেভিনিউ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক পাঁচ সদস্যের এ কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন।
এ প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত আকাশপথে পণ্য পরিবহনের চাহিদা বাড়ছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশী কয়েকটি এয়ারলাইন এখন ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে কার্গো পরিবহনে ফ্রেইটার ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এ খাত থেকে আয় করতে হলে বিমানের পৃথক কার্গো উড়োজাহাজ প্রয়োজন। বিমানের বহরের প্রতিটি উড়োজাহাজ মূলত যাত্রী পরিবহনেই ব্যবহার করা হয়। এসব উড়োজাহাজে যাত্রী পরিবহনের পর খালি জায়গায় কার্গো মালামাল পরিবহন করা হয়। ফলে যাত্রীচাপ বেশি থাকলে কার্গো পরিবহনে সমস্যা হয়। ফ্রেইটার সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিতে একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির দেয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে পরবর্তী উদ্যোগ নেয়া হবে।
বিমান সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আয় হয়েছে ৩৮১ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৭৭ কোটি টাকা বেশি। এ সময়ে বিমান কার্গো পরিবহন করেছে ৩৩ হাজার ৫৪২ টন, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৮ শতাংশ কম। বিমানের আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের কার্গো নিষেধাজ্ঞার কারণে এ খাত থেকে প্রতিষ্ঠানটির আয় কমেছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কার্গো খাতে বিমানের আয় হয়েছে ২৪৪ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৩১৫ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিমান ৩৩ হাজার ৫৪২ টন পণ্য পরিবহন করে, যেখানে আগের অর্থবছরে (২০১৫-১৬) সংস্থাটির বহনকৃত পণ্যের পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার ৯৩১ টন।
Posted ৫:০৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed