বিবিএনিউজ.নেট | ২১ জুলাই ২০১৯ | ১১:১২ এএম
পুঁজিবাজারে পতনের ধাক্কায় সময়মতো ফি পরশোধ না করায় বিদায়ী অর্থবছর শেষে বন্ধ হয়ে গেছে আরও ৮৪ হাজার বিও অ্যাকাউন্ট। ১৩ জুলাই পর্যন্ত বাতিল হওয়া অ্যাকাউন্ট সংখ্যা ছিল এক লাখ ১০ হাজার। নতুন করে প্রায় ৮৪ হাজার বিও বাতিল হওয়ায় চলতি বছরে বন্ধ হওয়া বিও অ্যাকাউন্ট সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ৯৩ হাজার ৩৫৪টিতে। এদিকে গত চার বছরে বাতিল হওয়া অ্যাকাউন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে পাঁচ লাখে।
স্মরণকালের (২০১০ সালের) ভয়াবহ ধসের পর আর স্বরূপে ফিরতে পারেনি পুঁজিবাজার। মাঝেমধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও আবারও পতনের ধাক্কা লেগেছে বাজারে। ফলে বাজার বিমুখ হয়ে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা, যার ধাক্কা লেগেছে বিও অ্যাকাউন্টে। গত চার বছরে নবায়ন না করায় বন্ধ হয়ে গেছে সাড়ে পাঁচ লাখের বেশি বিও অ্যাকাউন্ট। ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী কোম্পানি সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
সেকেন্ডারি মার্কেটের মন্দা পরিস্থিতি সেই সঙ্গে আইপিও বাজারের নাজুক পরিস্থিতির জন্য এসব অ্যাকাউন্ট ঝরে গেছে বলে মনে করেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৫ সালের জুন শেষে মোট বিও’র সংখ্যা ছিল ৩২ লাখ চার হাজার ৬০২টি। ২০১৬-এর জুন শেষে বিও সংখ্যা দাঁড়ায় ৩১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৪১টিতে। ২০১৭-এর জুন শেষে অ্যাকাউন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ লাখ ৬৯ হাজার ৭৬৫টিতে। আর ২০১৯ সালের সর্বশেষ হিসাবে এ সংখ্যা যা নেমে এসেছে ২৬ লাখ ৫১ হাজার ৯৭৮টিতে।
তথ্যমতে, যেসব অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে গেছে এর উল্লেখযোগ্য সংখ্যকই প্রাইমারি মার্কেট বা আইপিওতে আবেদনধারী বিও। এছাড়া সেকেন্ডারি মার্কেটে সুবিধা করতে না পেরে পুঁজিবাজার ছেড়ে গেছেন অনেক বিনিয়োগকারী। অনেক স্বল্পসংখ্যক শেয়ারধারীও অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রতি বছর প্রধানত দুই কারণে অসংখ্য বিও বাতিল হয়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে বাজারের মন্দা পরিস্থিতি, অন্যটি প্রাইমারি মার্কেট থেকে বিনিয়োগকারীদের সুবিধা না পাওয়া। তবে এ বছর বিও বাতিল হওয়ার জন্য প্রাইমারি মার্কেটের নাজুক পরিস্থিতি দায়ী করেন তারা। যে কারণে বিনিয়োগকারীরা অনেক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, যেসব অ্যাকাউন্ট বাতিল হয়েছে তার বেশিরভাগই প্রাইমারি মার্কেটে আবেদনের জন্য খোলা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে আইপিওতে প্রতিযোগিতা বেড়েছে, সেই জন্য অনেকে তাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছেন। এটা প্রতি বছরই হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।
সর্বশেষ হিসাবে দেশের পুঁজিবাজারে মোট বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ৫১ হাজার ৯৭৮টি। এর মধ্যে পুরুষ বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ১৯ লাখ ৪৬ হাজার ১৯৭টি। আর নারীদের বিও রয়েছে সাত লাখ পাঁচ হাজার ৭৮১টি।
নিয়মানুযায়ী জুন মাসে বিও ফি পরিশোধ না করলে সেসব অ্যাকাউন্ট এমনিতেই বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু যেসব হিসাবে শেয়ার কিংবা টাকা থাকে সেসব হিসাব বন্ধ হয় না। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) ডিপোজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা, ২০০৩-এর তফসিল-৪ অনুযায়ী, বিও হিসাব পরিচালনার জন্য ডিপোজিটরি অংশগ্রহণকারী বা বিনিয়োগকারীকে নির্ধারিত হারে বার্ষিক হিসাবরক্ষণ ফি দিয়ে হিসাব নবায়ন করতে হয়। এর আগে পঞ্জিকা বর্ষ হিসেবে প্রতি বছর ডিসেম্বরে এই ফি জমা নেওয়া হতো। তবে ২০১০ সালের জুন মাসে বিএসইসি বিও হিসাব নবায়নের সময় পরিবর্তন করে বার্ষিক ফি প্রদানের সময় জুন মাস নির্ধারণ করে। এ সময়ে বিও নবায়ন ফি ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়। এরপর বিএসইসির জারি করা ২০১১ সালের ১৮ এপ্রিল এক সার্কুলারে ৩০ জুনের মধ্যে বিও হিসাব নবায়নের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। না হলে তা বাতিল করা হবে বলে ওই সার্কুলারে বলা হয়েছিল। বর্তমানে বিও নবায়ন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫০ টাকা। সূত্র: শেয়ারবিজ।
বাংলাদেশ সময়: ১১:১২ এএম | রবিবার, ২১ জুলাই ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed