• বল সুন্দরী বরই চাষে বদলে গেছে আজিজের ভাগ্য

    বিবিএনিউজ.নেট | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ২:২৭ পিএম

    বল সুন্দরী বরই চাষে বদলে গেছে আজিজের ভাগ্য
    apps

    বরগুনার তালতলী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজ হাওলাদার বল সুন্দরী কুল বা বরই চাষে পাল্টে গেছে তার ভাগ্য। তার বরই বাগান দেখে আগ্রহী হচ্ছে উপজেলার অনেক কৃষক। এই উপক‚লীয় এলাকায় তিনিই প্রথম এই বল সুন্দরী বরই চাষ শুরু করেন।

    জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম বাদুরগাছা নামক প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ হাওলাদারের একমাত্র ছেলে আব্দুর রাজ্জাক। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সাইখ সিরাজের ভক্ত। তার মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠান দেখে ফলের বাগান করার প্রবল ইচ্ছা ছিল রাজ্জাকের ।

    এইচএসসি পাস করার পর ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের গ্রাহক সেবা সহকারী পদে চাকরি পান রাজ্জাক। ২০২০ সালে মার্চ মাসে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে ছুটিতে বাড়িতে আসেন।

    এ সময় বাবা আব্দুল আজিজ হাওলাদার ছেলের পরামর্শে বাড়ির পাশে ৪০ শতাংশ জমিতে কুল চাষের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। গত বছর মে মাসে রংপুর ও মাগুরা থেকে সাড়ে তিনশ’বল সুন্দরী কুলের চারা এনে ওই জমিতে রোপণ করেন তিনি। আব্দুল আজিজ হাওলাদারের অক্লান্ত পরিশ্রম ও পরিচর্যায় মাত্র সাত মাসের মাথায় গত ডিসেম্বরে সবকটি গাছেই থোকায় থোকায় কুল ধরে। এখন প্রতিটি গাছে ঝুলছে থোকায় থোকায় পাকা কুল। এই কুলে এক বছরেই পাল্টে দিয়েছে কৃষক আজিজের ভাগ্য।


    প্রথম বছর কুল চাষে ৬০ হাজার টাকা ব্যয় করে প্রথম বছরেই তিনি বিক্রি করেছেন ৮০ হাজার টাকা। তবে এই কুল চাষে তেমন খরচ নেই বলে জানান কৃষক আব্দুল আজিজ। শুধু চারা সংগ্রহ করতেই সমস্যা। ফলন ভালো হওয়ায় তিনি এ বছর আরো ৩৩ শতাংশ জমিতে এ কুল চাষ করবেন। ইতিমধ্যে তিনি চারা সংগ্রহ করে জমি প্রস্তুত করেছেন। তার দেখাদেখি ওই এলাকার অনেক কৃষক এ কুল চাষে আগ্রহী হয়েছেন। অনেকে তার মাধ্যমে রংপুর ও মাগুরা থেকে চারা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান কৃষক আজিজ।

    শনিবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অস্ট্রেলিয়ান জাতের বল সুন্দরী গাছের প্রতিটিতে থোকায় থোকায় কুল ঝুলছে। সুস্বাদু বাহারি রংয়ের কুল তিনি গাছে থেকে পেড়েই বিক্রি করছেন।

    পোকা ও পাখির আক্রমণ থেকে রক্ষায় বাগানের চারিপাশে মশারী জালের বেড়া দিয়েছেন। বল সুন্দরী কুল চাষ করে তিনি এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। এ বছর তার কুল বিক্রি প্রায় শেষ।

    কৃষক আব্দুল আজিজ হাওলাদার বলেন, ছেলের অনুপ্রেরণায় আমি কুল চাষের জন্য ৩৯ শতাংশ জমিতে বল সুন্দরী কুলের চাষ করেছি। ভাবিনি প্রথম বছরেই এতো ফলন হবে।

    এ বছর ৮০ হাজার টাকার কুল বিক্রি করেছি। তিনি আরো বলেন, আরো ৩৩ শতাংশ জমি প্রস্তুত করেছি। তাতেও বল সুন্দরী কুলের চারা রোপণ করবো। আশা করি আমি অনেক লাভবান হবো। আমার কুল বাগান দেখে অনেক কৃষক বল সুন্দরী কুল চাষে আগ্রহী হয়েছেন। ইতিমধ্যে ১৩ জন কৃষক চারা সংগ্রহ ও পরামর্শের জন্য আমার কাছে এসেছেন।

    তালতলী উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আরিফুর রহমান বলেন, অস্ট্রেলিয়ান জাতের বল সুন্দরী কুল দেখতে সুন্দর। খেতেও সুস্বাদু। এ অঞ্চলে এই কুল চাষ নেই বললেই চলে। তিনি আরো বলেন, আব্দুল আজিজই প্রথম বল সুন্দরী কুল তালতলীতে চাষ করেছেন।

    ভালো ফলনও হয়েছে। তার কুল বাগান দেখে অনেক কৃষক এ কুল চাষে আগ্রহী হয়েছেন। কৃষক আব্দুল আজিজসহ যারা কুল চাষে আগ্রহী তাদের সকলকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে বলে জানান তিনি।

    Facebook Comments Box

    বাংলাদেশ সময়: ২:২৭ পিএম | সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

    bankbimaarthonity.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    রডের দাম বাড়ছে

    ১৩ জানুয়ারি ২০১৯

    December 2023
    S S M T W T F
     1
    2345678
    9101112131415
    16171819202122
    23242526272829
    3031  
  • ফেসবুকে ব্যাংক বীমা অর্থনীতি