
বিবিএনিউজ.নেট | শনিবার, ২২ জুন ২০১৯ | প্রিন্ট | 643 বার পঠিত
বাজেটে নতুন করে ৫ শতাংশ ভ্যাট প্রস্তাবে অস্থির হয়ে উঠেছে গরম মসলার বাজার। অর্থমন্ত্রীর বাজেট ঘোষণার পর পরই বেড়ে গেছে প্রায় সব ধরনের মসলার দাম। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দাম আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে আমদানি করা গরমমসলায় ৬০ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু আগামী অর্থবছর থেকে মসলা আমদানিতে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। এ কারণে বাজেট ঘোষণার পর থেকে জিরা, দারচিনি, মিষ্টি জিরা, এলাচ, জয়ত্রি ও গোলমরিচের দাম বেড়ে গেছে। এর মধ্যে জিরার দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি প্রায় ১০ টাকা। এছাড়া এলাচ, জয়ত্রি, দারচিনি ও গোলমরিচের দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশ গরমমসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাফেজ মো. এনায়েত উল্লাহ এ বিষয়ে বণিক বার্তাকে বলেন, আগে গরমমসলা আমদানিতে ৬০ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে হতো। নতুন বাজেটে আরো ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের ঘোষণা এসেছে। এ কারণে গরমমসলার দাম কিছুটা চড়া। তবে মসলার মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিশ্ববাজারে মসলার উৎপাদন সংকট ও বুকিং বৃদ্ধিকেও দায়ী করেন তিনি।
খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়তে এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২৫০ টাকায়। কিন্তু বাজেট ঘোষণার পর শনিবার থেকে এলাচের দাম বেড়ে প্রতি কেজি ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৩৫০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। কোরবানির ঈদের জন্য চাহিদা বাড়তে থাকায় পণ্যটির দাম আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন মসলা ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে কয়েক দিনের ব্যবধানে জয়ত্রির দাম ১০০ টাকা বেড়ে লেনদেন হচ্ছে ২ হাজার ৪৫০ টাকায়, জিরা মানভেদে ১০-১৫ টাকা বেড়ে ৩২০-৩৫০, মিষ্টি জিরা ২০ টাকা বেড়ে ১৩০-১৪০, গোলমরিচ ২০ টাকা বেড়ে ৩৭৫ ও দারচিনি ২০ টাকা বেড়ে ৩২০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিনই আগের দিনের তুলনায় বেশি দামে পণ্য বিক্রির জন্য দাম হাঁকছেন ব্যবসায়ীরা।
খাতুনগঞ্জের মসলা ব্যবসায়ী মেসার্স এবি ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী অমর কান্তি দাশ বলেন, গরমমসলা আমদানিতে ভ্যাট বসানো হয়েছে।
এতে মসলার দামে কিছুটা প্রভাব পড়বে, এটা সাময়িক। মসলা আমদানিতে ঠিক কী পরিমাণ শুল্ক লাগবে, সেটি কয়েক দিনের মধ্যে জানা যাবে। এরপর বাজার স্থিতিশীল হয়ে আসতে পারে।
মসলা আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, দেশের অধিকাংশ গরমমসলাই আমদানিনির্ভর। আগে মসলা আমদানিতে ৬০ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে হতো। তবে নতুন করে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করায় আমদানি খরচ বেড়ে যাবে। এতে আমদানি করা বিদেশী গরমমসলার দামে প্রভাব পড়বে। এক্ষেত্রে আসন্ন কোরবানির ঈদে মসলার চাহিদা বাড়তে থাকায় হঠাৎ করেই গরমমসলার বাজারে সাময়িক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
খাতুনগঞ্জের একাধিক মসলা ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, বাজেটে ভ্যাট আরোপ ছাড়াও কোরবানির ঈদ সামনে রেখে অনেকেই গরমমসলার বাজারে বিনিয়োগ করছে। কেউ কেউ চিনি ও ভোজ্যতেল ছেড়ে মসলায় বিনিয়োগ শুরু করেছে। হঠাৎ করেই মসলার বাজারে বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়ায় বাজারও অস্থিরতার দিকে যাচ্ছে। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে মসলার বাজারে কৃত্রিম দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় ঝুঁকিও তৈরি হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
Posted ১২:২৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২২ জুন ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed