বিবিএনিউজ.নেট | রবিবার, ১২ মে ২০১৯ | প্রিন্ট | 575 বার পঠিত
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে ঐতিহাসিক এক অধ্যায়ের শুরুর দিন আজ। ২০১৮ সালের এ দিনেই বাংলাদেশের প্রথম নিজস্ব স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের জনএফ কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে। বাংলাদেশের গর্বিত অভিষেক হয়েছিল বিশ্বের অভিজাত স্যাটেলাইট ক্লাবে।
রোববার বর্ষপূর্তির দিন থেকে দেশের সরকারি-বেসরকারি মালিকানার সব টিভি চ্যানেল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ থেকে সম্প্রচার শুরু করছে। অবশ্য বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান হবে ১৯ মে। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১-এর বিপণন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পাশাপাশি বিভিন্ন সেবার ওপরে নির্মিত তথ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হবে।
মূলত এ স্যাটেলাইটের মাধ্যমেই বাংলাদেশের সব অঞ্চল টেলিযোগাযোগ সেবার আওতায় চলে আসে। হাতিয়া, সন্দ্বীপের মতো দুর্গম অঞ্চল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহার করে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থান্তান্তর করা হলে সেখানেও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হবে। শুধু দেশের ভেতরে নয়, দেশের বাইরেও লাভজনক বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার করা হবে।
এরই মধ্যে নেপাল ও ফিলিপাইন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে ব্যান্ডউইডথ কেনার আগ্রহ দেখিয়েছে। বিষয়টি এখন আলাপ আলোচনার পর্যায়ে চলছে। যেভাবে শুরু হয়েছিল
স্যাটেলাইটের পথচলা : নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য প্রথম বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেলিকম ইউনিয়নের (আইটিইউ) কাছে আবেদন করা হয়। এর পর ২০১২ সালে এ স্যাটেলাইট নির্মাণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনালকে পরামর্শক নিয়োগ করা হয়।
আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ফ্রান্সের কোম্পানি থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেসকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নির্মাণের জন্য নিয়োগ করা হয়। এর পর ২০১৫ সালে রাশিয়ার কোম্পানি ইন্টার স্পুটনিকের কাছ থেকে ১৫ বছর মেয়াদে কক্ষপথ ভাড়া নেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১-এর কক্ষপথের অবস্থান দাঁড়ায় ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নির্মাণে মোট ব্যয় হয় প্রায় ২ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নির্মাণ চলাকালেই এটি উৎক্ষেপণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি স্পেস এক্সের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় ২০১৮ সালে। ‘যোগাযাগ ও সম্প্রচারধর্মী’ এ স্যাটেলাইলটে রয়েছে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার।
কভারেজ এরিয়া : এ স্যাটেলাইটের কভারেজ এরিয়ার দেশগুলো হলো বাংলাদেশ ও তার অন্তর্ভুক্ত বঙ্গোপসাগর এরিয়া, ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান এবং কাজাখস্তানের কিছু অংশ, ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়া। ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রসমূহ : বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১-এর পর্যবেক্ষণ, পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য দুটি ভূ-উপগ্রহকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এর একটি গাজীপুরে ও অন্যটি রাঙামাটির বেতবুনিয়ায়। ভূ-উপগ্রহকেন্দ্র দুটির নামকরণ করা হয়েছে যথাক্রমে ‘সজীব ওয়াজেদ ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র, গাজীপুর’ ও ‘সজীব ওয়াজেদ ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র, বেতবুনিয়া’।
দুটি উপগ্রহকেন্দ্রের মধ্যে গাজীপুর প্রধান কেন্দ্র হিসেবে পরিচালিত হবে এবং বেতবুনিয়া বিকল্প পরিচালনাকেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। সেবা : বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মূলত কমিউনিকেশন ও ব্রডকাস্টিং স্যাটেলাইট। এর মাধ্যমে ডিটিএইচ (ডাইরেক্ট টু হোম), ভিডিও সম্প্রচার, ভিস্যাট নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট, কমিউনিকেশন ট্র্যাংক, ই-লার্নিং, টেলিমেডিসিন ইত্যাদি সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
Posted ৩:৩৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১২ মে ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed