• নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ড ও দাবি পরিশোধ না করার অভিযোগ (ধারাবাহিক প্রতিবেদন-১)

    বায়রা লাইফে প্রশাসকের বিরুদ্ধে বাড়ছে গ্রাহকদের ক্ষোভ

    এস জেড ইসলাম | ১২ ডিসেম্বর ২০২০ | ১:৫১ পিএম

    বায়রা লাইফে প্রশাসকের বিরুদ্ধে বাড়ছে গ্রাহকদের ক্ষোভ
    apps

    অনিয়মের জন্য প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। এরপরও নির্মূল করা যায়নি অনিয়মের আগাছা। বরং আগাছা নির্মূলে যার কাজ করার কথা সেই প্রশাসকও তাল মিলাচ্ছে অনিয়মের সাথে। ভূত তাড়ানোর কাজে ব্যবহার করা সর্ষের মধ্যেই যখন ভূত, তখন তা নামবে কিভাবে। প্রশাসক নিয়োগ করা দেশের প্রথম বীমা কোম্পানি বায়রা লাইফ নিয়ে এমনই অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।

    জানা গেছে, বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে একপ্রকার বাধ্য হয়ে গত ২৮ জুন প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশাসক নিয়োগ দেয় বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ। এসব অনিয়মের মধ্যে রয়েছে- গ্রাহকের জমাকৃত টাকা আত্মসাৎ, বীমাদাবি না দেয়া, মাত্রাতিরিক্ত হারে পলিসি তামাদি হওয়া, নির্দেশ অমান্য করে ব্যবস্থাপনা ব্যয় প্রতি বছর বাড়ানো, গ্রাহকদের সন্তোষজনক বোনাস না দেয়া, উদ্যোক্তাদের বাধ্যতামূলক ২ শতাংশ শেয়ারধারণ না করা, অতিরিক্ত পরামর্শক নিয়োগ দিয়ে আইন ভঙ্গ, ১৬ বছর পার হলেও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত না হওয়া, প্রতি বছর অ্যাকচুয়ারিয়াল ভ্যালুয়েশন না করা, অর্থদণ্ড করলেও তা পরিশোধ না করা ও দীর্ঘদিন যাবৎ মুখ্য নির্বাহী পদ খালি রাখা।

    এসব অনিয়ম দূর করে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং বীমা আইন-২০১০ এর ধারা ৯৫, ৯৬, ৯৭, ৯৮, ১০০, ১০১ ও ১০২ অনুযায়ী কোম্পানি পরিচালনা করতে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। প্রশাসকের মূল দায়িত্ব থাকে কোম্পানি দায় ও সম্পদের তালিকা করা, সম্পদকে তারল্যে রূপান্তর করা এবং গ্রাহকদের দাবি নিষ্পত্তি করা। কিন্তু নির্ধারিত এ দায়িত্ব থেকে সরে গিয়ে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বায়রা লাইফের প্রশাসক মো. হুমায়ুন কবির। এসবের বাইরে বিধিবহির্ভূতভাবে নিজের পদবির সাথে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদবি জুড়ে দিয়েও আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন সাবেক এ যুগ্ম সচিব।

    জানা গেছে, সম্প্রতি কয়েকটি অফিস আদেশ এবং অফিসিয়াল চিঠিপত্রে নিজেকে প্রশাসক ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন হুমায়ুন কবির, যা নীতি বিরুদ্ধ। কারণ সিইও হলো একটি চুক্তিভিত্তিক পদ, যা কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগ দেয়। অন্যদিকে প্রশাসক বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএর নিয়োগকৃত। এ নিয়োগের মাধ্যমে কোম্পানিতে পরিচালনা পর্ষদের সক্রিয়তাকে অবলোপন করা হয়। তাছাড়া কোম্পানির সার্বিক তদারকির দায়িত্বে সিইও পদক্ষেপ নিলেও প্রশাসক তা পারেন না। প্রশাসক আইডিআরএ কর্তৃক নির্দিষ্ট কিছু গণ্ডির মধ্যে তার কার্যক্রম পরিচালনা করেন।


    একজন সাবেক যুগ্ম-সচিব হয়েও আইনের প্রতি এমন অশ্রদ্ধা ও খামখেয়ালিপনায় নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে। তাছাড়া বিধি অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে কোম্পানির সম্পদ ও দায় পর্যালোচনা করে তার তালিকা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে দাখিল করার কথা থাকলেও তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন এ প্রশাসক। আবার প্রশাসকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ গ্রাহকের দাবি পরিশোধ করতেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ অনেক গ্রাহক প্রশাসকের বিরুদ্ধে আইডিআরএর কাছে তাদের অভিযোগ জমা দিয়েছেন। এমনকি অনেকে আইনি প্রক্রিয়াও শুরু করেছে বলে জানা যায়।

    Facebook Comments Box

    বাংলাদেশ সময়: ১:৫১ পিএম | শনিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২০

    bankbimaarthonity.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    December 2023
    S S M T W T F
     1
    2345678
    9101112131415
    16171819202122
    23242526272829
    3031  
  • ফেসবুকে ব্যাংক বীমা অর্থনীতি