| বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট | 100 বার পঠিত
বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশনের (বিএসইসি) সাবেক প্রধান প্রকৌশলী বর্তমানে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লি:-এর এমডি মো.তৌহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপরব্যবহার,জালিয়াতি ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে ৩৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত মো. তৌহিদুজ্জামান বিএসইসি’র প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালনকালে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিকে অসৎ উদ্দেশ্যে অন্যায়ভাবে লাভবান করানোর জন্য কাজ করেছেন। তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে এমডি পদে চাকরি গ্রহণ, সরকারের অনুমোদন ব্যতীত গাড়ী ক্রয়, ব্যবহার, কনসালট্যান্ট নিয়োগ, চুক্তি স্বাক্ষর ও কাজ না করেই বিল উত্তোলনের মাধ্যমে ৩৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাত করেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) আর এই অভিযোগে দন্ডবিধির ৪০৬/৪০৯/ ৪১৭/ ৪২০/ ৪৬৫/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় দুদকের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে সজেকা-১-এ একটি মামলা দায়ের করেন।
দুদকের মামলায় ঘটনার বিবরণ উল্লেখ্য করা হয়েছে,বিজ্ঞ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ঢাকার সি/আর মামলা নং ১২১০/২০২০ হতে উদ্ভূত বিজ্ঞ মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত, ঢাকার মেট্রো স্পেশাল মামলা নং ৩৬২/২২ এর আদেশ নং ০১। কোর্ট থেকে গত ২০২২ সালের ১৪ জুলাই নথি আসেন দুদক। প্রাপ্ত অভিযোগ পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২১ সালের ২ মার্চ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিএসইসি’র প্রধান কার্যালয়ে বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহবান করা হয়। উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ২০২১ সালের ৭ মার্চ দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রচারিত হয়। অভিযুক্ত মো. তৌহিদুজ্জামান উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে ৫ নং ক্রমিকের যোগ্যতা অনুসারে দরখাস্ত না করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র সৃজন তৈরি করে নিয়োগ পান। তিনি নিয়োগ পাওয়ার নিমিত্ত যথাসময়ে আবেদন না করেই উক্ত কর্পোরেশনের অসৎ কর্মচারীদের যোগসাজশে পরবর্তীতে দরখাস্ত জমা দেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে নিয়োগের জন্য যে সকল শর্ত বা যোগ্যতা চাওয়া হয়েছিল সেই সকল যোগ্যতার কোনটাই তার ছিল না। তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতার কোন সনদপত্র জমা দেননি। তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র সৃজনপূর্বক দরখাস্ত জমা দেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে প্রার্থীদের বয়স সীমা ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪২ বছর হতে হবে। কিন্তু তার জন্ম তারিখ ছিল ০১/০১/১৯৬৭ ইং। অর্থাৎ নির্ধারিত ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত বয়স হয়েছিল ৪৪ বছর। তিনি প্রকৃত সত্য গোপন রেখে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে জাল কাগজপত্র সৃজন তৈরি করেন। পরে ওইসব জাল কাগজপত্রকে জেনেশুনে খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ৪২ বছর বয়স দেখিয়ে চাকুরিতে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে তিনি প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন।
দুদকের মামলায় আরও উল্লেখ্য রয়েছে, অভিযুক্ত মো. তৌহিদুজ্জামান অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে বিএসইসি’তে যোগদানের পর থেকেই প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ এ পদায়ন হন। তিনি প্রগতি টাওয়ার নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পিপিআর, ২০০৮ এর বিধান লঙ্ঘন করে গাড়ী ক্রয়, ব্যবহার, কনসালটেন্ট নিয়োগ, ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি চুক্তি স্বাক্ষর ও কাজ না করা সত্তেও বিল প্রদানসহ নানা খরচ বাবদ কয়েক কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। তিনি দরপত্র ছাড়াই কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে পিপিআর, ২০০৮ এর বিধান লঙ্ঘন করে মিৎসুবিশি মোটরস্ কর্পোরেশনের সাথে অনেক উচ্চ মূল্যে ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এক্ষেত্রে তিনি সরকারের কোন অনুমোদন গ্রহণ করেননি। তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভেটিং নেননি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করেন এবং গোপনে এজেন্ট দেখিয়ে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতপূর্বক বাড়ী নং ৯, সড়ক নং ১০, সেক্টর-৩, উত্তরা, ঢাকাতে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ক্রয় এবং নামে-বেনামে কানাডাতে শ্বশুর বাড়ীর সদস্যদের নামে কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ করে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন।
Posted ৬:৫৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩
bankbimaarthonity.com | rina sristy