
সামসুদ্দীন চৌধুরী | মঙ্গলবার, ১৫ জানুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট | 1504 বার পঠিত
বীমা ব্যবসার জন্য সাধারণ গ্রাহকের আস্থা অর্জন কে চ্যালেঞ্জ নিয়ে ব্যবসায়িক সফলতা অর্জন করেছে ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। কোম্পানিটির প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ছে। তাই অল্প সময়ের মধ্যে অনেক সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এ বীমা কোম্পানি। ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের প্রধান কার্যালয়ে ব্যাংক বীমা অর্থনীতি সাথে আলাপকালে এ সব কথা বলেন কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা তালুকদার মোহাম্মদ জাকারিয়া হোসাইন ।
তিনি বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর জিডিপিতে বীমা অবদান অনেক। কিন্তু বাংলাদেশের জিডিপিতে বীমা কোম্পানির অবদান দশমিক ৯ শতাংশ। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি ছিল ১৩ লাখ ৫০ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। এখানে বীমা খাতের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অংশ ৯ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা। নন লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অংশ ২ হাজার ৭০২ কোটি টাকা। বাংলাদেশে হাজারে মাত্র চারজন মানুষ বীমা পলিসি করেন। উন্নত বিশ্বে এর সংখ্যা আরও অনেক।
তিনি আরো বলেন, যুক্তরাজ্যের জিডিপিতে বীমা খাতের অংশ ১১ দশমিক ৮ শতাংশ, হংকংয়ে ১১ দশমিক ৪ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৮ দশমিক ১ শতাংশ, জাপানে ৮ দশমিক ১ শতাংশ, সিঙ্গাপুরে ৭ শতাংশ, ভারতে দশমিক ১ শতাংশ, চীনে ৩ শতাংশ আর বাংলাদেশে মাত্র দশমিক ৯ শতাংশ।
২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের জিডিপিতে বীমা খাতের অবদান ৪ শতাংশে উন্নীত করার জন্য ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি কাজ করছে।
কোম্পানিটির প্রোফাইল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, অবলিখন মুনাফা, মোট সম্পদ, মোট দায়, গ্রোস প্রিমিয়াম, নেট প্রিমিয়াম, দাবী পরিশোধ, কর পরবর্তী মুনাফা, প্রাতিষ্ঠানিক আয়, পরিশোধিত মূলধন সমাপ্ত বছরে ব্যপক সফলতা অর্জন করেছে ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করছেন বিশিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তা আমিনুজ্জামান ভুইয়া ।
আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানীটি ১২ কোটি ২৫ লাখ টাকা অবলিখন মুনাফা আয় করেছে যা ২০১৬ অর্থবছরে ছিল ৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা যার প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৫৭.০৫ শতাংশ। পরিশোধিত মুলধনও ১৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা দাড়িয়েছে ২০১৭ অর্থবছরে। প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১০.০১ শতাংশ। এই বছরে কোম্পানীটির এফডিআর এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা যা এর আগে চিল ৭ কোটি ২ লাখ টাকা । অন্যদিকে মোট দায় ২৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা থেকে ২৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা হয়েছে।
মোট সম্পদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও অসাধারণ সফলতা দেখিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৭ সালে মোট সম্পদ হয়েছে ৬৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা যা এর আগের অর্থবছরে ছিল ৬৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা। গত বছর থেকে আলোচ্য বছরে এই খাতে প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ৯.৮১ শতাংশ।
কোম্পানির মোট প্রিমিয়ামও ২০১৬ সালে যা ছিল ৩১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, ২০১৭ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ কোটি ৪৩ লাখ টাকায়। যার প্রবৃদ্ধির হার ৩.৩৫ শতাংশ। নেট প্রিমিয়াম ২৩ কোটি টাকা থেকে এই বছরে বেড়ে দাড়িয়েছে ২৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা। যার প্রবৃদ্ধির হার ২২.৭৮ শতাংশ।
এছাড়াও কোম্পানীটি আলোচ্য বছরে ফায়ার ইন্স্যুরেন্স থেকে আয় করেছে ১২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। মেরিন কার্গো ও হাল ইন্স্যুরেন্স থেকে আয় করেছে ১৪ কোটি ১০ লাখ টাকা যা এর আগের বছরে ছিল মাত্র ২ কোটি ৯ লাখ টাকা যা প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৫৭৪.৬৪ শতাংশ। এছাড়াও মোটর বীমা থেকে আয় করেছে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকার। এছাড়া ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স করপূর্ববতী মুনাফা করেছে ৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা যা ২০১৬ অর্থবছরে ছিল ৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। কর পরবর্তী মুনাফা করেছে ৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
তবে কোম্পানীটি আলোচ্য অর্থবছরে শেয়ার হোল্ডারদের জন্য কোম্পানিটি বোনাস ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করেন। যা একটি বীমা কোম্পানির জন্য উজ্জল ভবিষ্যতের দিক নিদর্শন করে বলে মনে করেন বীমা বিশেষজ্ঞগণ। ১৪ জন পরিচালক দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানীটি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ক্রেডিট রেটিং এ ওয়ান রয়েছে। এই বছর প্রতিষ্ঠানটি রাষ্ট্রিয় কোষাগারে ৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা অগ্রিম আয়কর প্রদান করেছে।
Posted ১২:৫০ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৫ জানুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed