মঙ্গলবার ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানের ১০ বিও হিসাব ফ্রিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   67 বার পঠিত

বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানের ১০ বিও হিসাব ফ্রিজ

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জীশান মীর্জা এবং ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে দুটি ব্রোকারেজ হাউজে থাকা আরো চারটি বিও হিসাব (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) রাখার নির্দেশ দিয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর আগে পাঁচটি ব্রোকারেজ হাউজে তাদের ছয়টি বিও হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। ফলে, এ পর্যন্ত বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও মেয়ের ১০টি বিও হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হলো।

গত ২৩ ও ২৬ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী জীশান মীর্জা, বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর এবং ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে বিভিন্ন সম্পত্তির দলিল, ঢাকাস্থ ফ্ল্যাট ও কোম্পানির শেয়ার জব্দ করার আদেশ দেন।

ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি পুঁজিবাজারের ইলেকট্রনিক্স শেয়ার সংরক্ষণাগার সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বিএসইসি এ নির্দেশ দিয়েছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে গত ২৭ মে সিডিবিএলকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেয় বিএসইসি। এর ফলে অবরুদ্ধকরণ আদেশ কার্যকর থাকা অবস্থায় অর্থ অবরুদ্ধ হিসাবগুলোতে জমা করা যাবে না বা কোনো অবস্থাতেই উত্তোলন করা যাবে না।
লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেডে বেনজীর আহমেদের দুটি বিও হিসাব রয়েছে। শান্তা সিকিউরিটিজ লিমিটেডে তার স্ত্রী জীশান মীর্জা এবং তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে বিও হিসাব রয়েছে। এছাড়া, আইএফআইসি সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও ড্রাগন সিকিউরিটিজ লিমিটেডে বেনজীর আহমেদের, সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিসেস লিমিটেড ও ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডে তার স্ত্রী জীশান মির্জার, ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডে বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীরের এবং ডাইনেস্টি সিকিউরিটিজ লিমিটেডে ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে বিও হিসাব রয়েছে।

বিও হিসাব অবরুদ্ধকরণ প্রসঙ্গে বিএসইসির নতুন নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কোর্টের আদেশ নম্বর-২ এর পরিপ্রেক্ষিতে শান্তা সিকিউরিটিজের গ্রাহক জীশান মীর্জা ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীর এবং লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের গ্রাহক বেনজীর আহমেদের বিও হিসাব পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হলো। বিজ্ঞ আদালতের আদেশ মোতাবেক উক্ত বিও হিসাবগুলোর ওপর অবরুদ্ধকরণ আদেশ কার্যকর থাকা অবস্থায় কোনো অবস্থাতেই অর্থ উত্তোলন করা যাবে না।

এদিকে, চলতি বছরের গত ২৬ মে সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদের নামে, তার স্ত্রীর নামে ও মেয়ের নামে থাকা ১১৯টি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজধানীর গুলশানে ৪টি ফ্ল্যাট ও সাভারের একটি জমি। বাকি ১১৪টি সম্পত্তি রয়েছে মাদারীপুর জেলায়। এর আগে গত ২৩ মে ৮৩টি দলিলে ক্রয়কৃত সম্পত্তি ক্রোক করা হয়। সেই সঙ্গে ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও তার সিকিউরিটিজের (শেয়ার) টাকা অবরুদ্ধ করা হয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জীশান মীর্জা, বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীর বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন। ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার পাশে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের ২ লাখ শেয়ার রয়েছে। পূর্বাচলে আছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি।

অথচ, গত ৩৪ বছর ৭ মাসের দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদ বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় ১ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো। তাই, এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ এপ্রিল সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

এদিকে, প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা (অপ্রদর্শিত অর্থ) সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে, উল্লিখিত পরিমাণ কর দিয়ে অভিযুক্ত বেনজীর আহমেদ কি তার সম্পদ বা অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করতে পারবেন? তবে, বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ফৌজদারি মামলায় পড়ে যাওয়ায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ কালো টাকা সাদা করার সুযোগ পাবেন না।

তিনি আরো বলেন, এই টাকা কেইসে (মামলায়) পড়ে গেছে, এটা কীভাবে সাদা হবে? এখন ফৌজদারি মামলা চলছে।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৯:২৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।