ব্যাংক বীমা অর্থনীতি ডেস্ক | বুধবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট | 794 বার পঠিত
পুঁজিবাজারে উদ্যোক্তা পরিচালকরা দু’ভাবে শেয়ার কেনাবেচা করেন। একটি হচ্ছে ঘোষণার মাধ্যমে, আরেকটি হচ্ছে বেনামে। বাজারের বড় সমস্যা হচ্ছে বেনামে শেয়ার বিক্রি করা। এক্ষেত্রে আইন কী রয়েছে? যখন একটি কোম্পানির হিসাববছর শেষ হবে তার দুই মাস আগে থেকে নিরীক্ষিত প্রতিবেদন পর্ষদে অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত সময়ের ব্যবধানে শেয়ার বিক্রি করা যাবে না। কিন্তু যদি এর বাইরে উদ্যোক্তারা শেয়ার বিক্রি করতে চান, তাহলে আগে ঘোষণা দিতে হবে। কিন্তু অনেক সময় এসব নিয়ম মানা হচ্ছে না। আর এ বিষয়ে বিএসইসি কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও শোনা যায়নি। মঙ্গলবার এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।
মোশতাক সাদেকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমকালের বিজনেস এডিটর জাকির হোসেন, দ্য ডেইলি স্টারের বিজনেস এডিটর সাজ্জাদুর রহমান এবং আইসিএবির কাউন্সিলর মেম্বার সাব্বির আহমেদ-এফসিএ।
জাকির হোসেন বলেন, গত বছর বাজার তেমন ভালো অবস্থানে ছিল না। তখন বাজার ভালো না থাকার কারণ ছিল নির্বাচন। নির্বাচনের পর বাজার গতিশীল হতে দেখা গেছে। কিন্তু বর্তমানে ফের নিম্নগতিতে রয়েছে। কারণ বাজার যখন কমতে থাকে তখন বিনিয়োগকারীরা মনে করে বাজার আরও কমবে। আসলে বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশ আস্থাহীনতার কারণে স্থির হতে চায় না। তিনি বলেন, ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালে প্রায় ৩৬টি কোম্পানির উদ্যোক্তারা গোপনে ৫০ শতাংশের বেশি শেয়ার বিক্রি করেছেন। অর্থাৎ প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার। এক্ষেত্রে আইন কী রয়েছে? যখন একটি কোম্পানির হিসাববছর শেষ হবে তার দুই মাস আগে থেকে নিরীক্ষিত প্রতিবেদন পর্ষদে অনুমোদিত না হওয়া পর্যন্ত এই সময়ের ব্যবধানে শেয়ার বিক্রি করতে পারবে না। দ্বিতীয়ত. যদি এর বাইরে স্পন্সররা শেয়ার বিক্রি করতে চায়, সেক্ষেত্রে আগে ঘোষণা দিতে হবে। আসলে এখানে নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। যখন এই বিষয়গুলো জানা গেছে, তখন বিএসইসি কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে বলে শোনা যায়নি।
সাব্বির আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারে স্পন্সররা দুভাবে শেয়ার কেনাবেচা করে। একটি হচ্ছে ঘোষণার মাধ্যমে, আরেকটি হচ্ছে বেনামে। বাজারের বড় সমস্যা হচ্ছে বেনামে শেয়ার বিক্রি করা। বিএসইসির এ বিষয়ে কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে। অর্থাৎ কারা বিক্রি করছে এবং ওই কোম্পানির মালিকানায় কারা রয়েছে। ওই ধরনের কোম্পানির মালিকদের ধরে আইনের আওতায় এনে শাস্তির বিধান করতে হবে।
সাজ্জাদুর রহমান বলেন, বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থার অভাব রয়েছে। নির্বাচনের পর বাজার ইতিবাচক দেখা গেছে। টার্নওভার ১০ হাজার থেকে ১১ হাজার কোটি এবং বেশিরভাগ শেয়ারের দাম বেড়েছে। কিন্তু হঠাৎ বাজারের এমন কী হলো টার্নওভার কমে যাচ্ছে এটাই উদ্বেগের বিষয়। এতে বোঝা যাচ্ছে, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমে যাচ্ছে। আসলে এখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বেশি সুবিধা নিচ্ছে। আবার গত অক্টোবরে আইসিবি দুই দশমিক ৫০ হাজার কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করেছে বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য। কথা হচ্ছে এখন আইসিবি যদি ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন না করে সেক্ষেত্রে ২০১০ সালে বিপর্যয়ের পর বিনিয়োগকারীদের আস্থার যে অভাব ছিল, সেটি আবার ফিরে আসতে পারে। যদি সেটি হয় তাহলে বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ছাড়া বাজার গতিশীল হবে না। আবার অনেক কোম্পানি পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সময় ভালো ইপিএস দেখায়, কিন্তু পরে প্রথম প্রান্তিক ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইপিএস অনেক কমে যায়, বা অনেক ক্ষেত্রে নেতিবাচক হয়ে যায়। আসলে এখানেই বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন থেকে যায়। যেহেতু এটি অডিট ফার্মের মাধ্যমে করা হয়, সেখানে কতটুকু স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়, সেটিই দেখার বিষয়। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে বস্ত্র খাতের অনেক কোম্পানি পুঁজিবাজারের এসেছে। ওইসব কোম্পানির মধ্যে অনেকগুলোর দাম ফেস ভ্যালুর নিচে রয়েছে। অর্থাৎ ওইসব কোম্পানিতে যারা বিনিয়োগ করেছে, তারা তো শেষ হয়ে যাওয়ার মতো। কিন্তু কোম্পানিগুলোর কোনো শাস্তি হচ্ছে না। সূত্র: শেয়ার বিজ কড়চা
Posted ৪:৫১ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed