বিবিএনিউজ.নেট | বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৯ | প্রিন্ট | 387 বার পঠিত
তৈরি পোশাক রপ্তানি কিছুটা মন্দার কবলে পড়েছে। প্রচলিত-অপ্রচলিত কোনো বাজারেই সুখবর নেই। সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) রপ্তানি কমেছে সবচেয়ে বেশি হারে। ২৮ জাতির এই জোটে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রপ্তানি কমেছে ৩ দশমিক ২১ শতাংশ। টাকার অঙ্কে রপ্তানি কমেছে প্রায় এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, প্রথম প্রান্তিকে কানাডায় রপ্তানি কমেছে ২ শতাংশ। অবশ্য একক প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্রে বেড়েছে দশমিক ৪৬ শতাংশ। অপ্রচলিত বাজার শ্রেণির প্রায় সব দেশেই রপ্তানি কমেছে। এ সময়ে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিযোগীদের রপ্তানি বেড়েছে। বিশ্ববাজারে ভিয়েতনামের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১১ শতাংশ। ভারতের ২ দশমিক ২৫ শতাংশ ও পাকিস্তানের ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেড়েছে।
নিজেদের দৈন্যদশার বিপরীতে প্রতিযোগীদের ভালো অবস্থার কারণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন উদ্যেক্তারা। কী কারণে বাজারের এই পরিস্থিতি এবং সমাধানে কী করা যেতে পারে, তার পথ খুঁজছেন তারা। সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে রপ্তানিতে উৎসে কর এক শতাংশ থেকে কমিয়ে আগের অবস্থায় অর্থাৎ শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশে আনা হয়েছে। সরকারের কছে আর কী কী নীতি সহায়তা চাওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন তারা। একাধিক উদ্যোক্তার সঙ্গে কথা বলে এসব কথা জানা গেছে।
বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক সমকালকে বলেন, পোশাক খাতের পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। নিকট ভবিষ্যতে পরিস্থিতি উন্নতির কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না তিনি। রপ্তানি আদেশ কমছেই। কেন রপ্তানি আদেশ কম- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কম দামের সুবিধায় নতুন নতুন দেশে রপ্তানি আদেশ চলে যাচ্ছে। নিজস্ব কাঁচামাল এবং সরকারের দেওয়া প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধায় প্রতিযোগীদের উৎপাদন খরচ তুলনামূলক কম। আবার ডলারের বিনিময়ে এসব দেশ দফায় দফায় স্থানীয় মুদ্রাকে অবমূল্যায়ন করছে। ফলে ডলারের তুলনায় নিজেদের মুদ্রা বেশি পাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। বাংলাদেশে উৎপাদন খরচ বেশি। ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হারও অনুকূলে নয়। এসব কারণে প্রতিযোগী দেশগুলো তুলনামূলক কম দামে পোশাক সরবরাহ করতে পারছে।
ইইউর সবচেয়ে বড় বাজার হচ্ছে জার্মানি। গত দুই বছর যুক্তরাষ্ট্রের চাইতে জার্মানিতে রপ্তানির পরিমাণ বেশি ছিল। বছরে জার্মানিতে ৬০০ কোটি ডলারের বেশি রপ্তানি হয়। গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে দেশটিতে রপ্তানি হয় ১৫০ কোটি ডলারের বেশি পোশাক। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে কম হয়েছে সাত শতাংশ বা ১১ কোটি ডলার। এ সময়ে ১৩৯ কোটি ডলারের পোশাক গেছে জার্মানিতে। ইউরো অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ৬৭ শতাংশ হারে রপ্তানি কমেছে লিথুয়ানিয়ায়। চেক প্রজাতন্ত্রে কমেছে ৬২ শতাংশ। বুলগেরিয়ায় ৩৫ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া ইতালি, বেলজিয়াম ও স্পেনসহ বেশিরভাগ বাজারেই রপ্তানি কমেছে। সব মিলিয়ে গেল তিন মাসে ৪৯৫ কোটি ডলারের পোশাক গেছে ইইউতে। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৫১১ কোটি ডলারের কিছু বেশি। রপ্তানি কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে ইইউর অংশ এক শতাংশ কমে গেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে ৬২ দশমিক ৪৩ শতাংশ থেকে কমে এ হার এখন ৬১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
কানাডায় রপ্তানি কম হয়েছে দেড় শতাংশ। এক কোটি ডলার কমে রপ্তানি হয়েছে ২৫ কোটি ডলার। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে সামান্য হলেও রপ্তানি বেড়েছে। দেশটিতে গেছে ১৪৯ কোটি ডলারের পোশাক। আগের একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৪৮ কোটি ডলার। প্রচলিত বাজারের পাশাপাশি অপ্রচলিত বা নতুন বাজারেও রপ্তানির চিত্রও প্রায় অভিন্ন। আলোচ্য তিন মাসে অপ্রচলিত রপ্তানি কম হয়েছে ৪০ শতাংশ। চীনে রপ্তানি কম হয়েছে দুই শতাংশ। একই হারে কমেছে গুরুত্বপূর্ণ বাজার অস্ট্রেলিয়ায়ও। এ ছাড়া ব্রাজিলে ২৭ শতাংশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় ১১ শতাংশ হারে রপ্তানি কমেছে। #
Posted ৮:১৬ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed