শুক্রবার ৮ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩ কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

ব্যাংকের মুনাফার ভাগ পায় না শেয়ারহোল্ডাররা

বিবিএনিউজ.নেট   |   মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   614 বার পঠিত

ব্যাংকের মুনাফার ভাগ পায় না শেয়ারহোল্ডাররা

ঋণে বাড়তি সুদ আদায় করলেও, ব্যাংকের মুনাফা বাড়লেও সুফল পাচ্ছে না পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকের কোটি কোটি টাকা মুনাফা হলেও নগদ বঞ্চিত হচ্ছে কম্পানির অংশীদার বা শেয়ারহোল্ডাররা। স্টক বা বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে মুনাফার পুরোটাই রেখে দিচ্ছে ব্যাংক। যদিও কোনো ব্যাংক বোনাস ও নগদ দুভাবেই লভ্যাংশ ঘোষণা করছে। ব্যাংকের বোনাস লভ্যাংশে কার্যত বিনিয়োগকারীরা লাভবান হচ্ছে না বলে মনে করছেন পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টরা।

২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে। কিন্তু মুনাফা বাড়লেও নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে হাতে গোনা কয়েকটি ব্যাংক। আর বেশির ভাগ ব্যাংক মুনাফার পুরো অংশ রেখে দিয়ে কম্পানির পেইড-আপ বা পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধি করেছে। পুরো অংশ রেখে দেওয়ার এসব ব্যাংকে মুনাফার তুলনায় লভ্যাংশ প্রদান অনুপাত (ডিভিডেন্ড পে আউট রেশিও) শূন্য।

সূত্র বলছে, ব্যাংক মুনাফা দেখালেও কার্যত অভ্যন্তরীণ অবস্থা ভালো নয়। খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় প্রভিশনিং রাখতে গিয়ে সংকটে ব্যাংক। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক বিনিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ দিতে গেলে সংকট আরো বাড়বে। বোনাস লভ্যাংশ দিয়ে অবস্থান টিকিয়ে রাখলেও আর্থিক খাতের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে ভালো হবে। যদিও পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখকর খবর নয়।

ব্যাংক সূত্র জানায়, বছর বছর খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পাওয়ায় নগদ অর্থের সংকটে ভুগছে ব্যাংক। খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণে আইনে ব্যত্যয় না ঘটাতে মুনাফা থেকে অর্থ জোগান দিচ্ছে। এতে নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার মতো সক্ষমতা ব্যাংকের নেই। খেলাপি ঋণ বাড়লেও প্রভিশনিং না করেই মুনাফা দেখানো হচ্ছে। আর উচ্চ মুনাফা থেকে প্রভিশনিং করছে ব্যাংক। পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বোনাস লভ্যাংশ দেওয়া আইনে বিধান থাকলেও এতে বিনিয়োগকারীরা সরাসরি উপকৃত হন না। বোনাস শেয়ারে কম্পানির পরিশোধিত মূলধন বাড়ে কিন্তু মুনাফায় বা শেয়ারপ্রতি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। নগদ লভ্যাংশ না পেয়ে বিনিয়োগকারীরাও নাখোশ হয়, শেয়ারের দামও প্রভাবিত হয়। কিন্তু পুঁজিবাজারে ব্যাংক খাতের কম্পানির জন্য বোনাস শেয়ার ইস্যু দীর্ঘ মেয়াদে ভালো, এতে কম্পানির ভিত শক্ত হয়।

২০১৮ সালের হিসাব প্রকাশ করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংক। খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি, বাড়তি ঋণ সমন্বয় ও ঋণের বাড়তি চাহিদায় বছরজুড়ে আর্থিক টানাপড়েন আর সংকটের মধ্যে পার করেছে ব্যাংক। তার পরও বছর শেষে তালিকাভুক্ত ১৬টি ব্যাংকের মুনাফা আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে। অর্থাৎ কম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ১৪টি ব্যাংকের ইপিএস বা মুনাফা কমেছে।

২০১৮ সাল শেষে শেয়ারগ্রাহকদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ব্যাংক। এতে দেখা গেছে, একটি ব্যাংক ধারাবাহিক লোকসানে থাকায় লভ্যাংশ দিতে পারেনি আর একটি মুনাফা করলেও পর্যাপ্ত না হওয়ায় কোনো লভ্যাংশই দেয়নি।

২৮টি ব্যাংকের মধ্যে চারটি শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আর আটটি ব্যাংক নগদ ও বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। অর্থাৎ নগদ অর্থের সঙ্গে বোনাস লভ্যাংশ দিয়ে মূলধন বৃদ্ধি করেছে কম্পানি। কিন্তু ১৬টি ব্যাংক মুনাফা করলেও একটি টাকাও শেয়ারহোল্ডারদের দেয়নি। যদিও এসব ব্যাংক সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে। কিন্তু বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে দায় সেরেছে আর ক্যাটাগরিও ঠিক রেখেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম বলেন, ‘নন-পারফর্মিং লোনের বিপরীতে প্রভিশন না রাখায় মুনাফা বেড়েছে ব্যাংকের কিন্তু প্রভিশন রাখতে গিয়ে আর্থিক সংকটে পড়ছে। একটা টাকা নগদ লভ্যাংশ দিলেও সেটা মূলধনকে প্রভাবিত করবে। আর এটা দিতে গেলে পুরো ব্যাংকিং সিস্টেমেই প্রভাব পড়বে।’

ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, ‘ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে চলছে এটা ঠিক। তার একটি প্রমাণ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেওয়া। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ কম্পানি ও বিনিয়োগকারী উভয়ের জন্য ক্ষতিকর।’

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৩:৪১ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।