বিবিএনিউজ.নেট | সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০১৯ | প্রিন্ট | 462 বার পঠিত
ব্যাংক হিসাব খুলতে গেলে গ্রাহকদের কাছ থেকে ব্যাংকগুলো নিজেদের ইচ্ছামতো টাকা জমা রাখে। কোনো কোনো ব্যাংক গ্রাহককে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা রাখতে বাধ্য করে। এবার এ সীমা উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এখন থেকে গ্রাহকরা ন্যূনতম টাকা জমা রেখে ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবেন। এ ছাড়া নতুন হিসাব খুলতে গ্রাহককে মাত্র দুই পৃষ্ঠার ফরম পূরণ করতে হবে।
বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ব্যাংকের ব্যবহৃত ফরমগুলো সহজীকরণের জন্য গঠিত কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ বি এম রুহুল আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংক, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, বিভিন্ন ব্যাংকের প্রতিনিধি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে কমিটির একজন সদস্য কালের কণ্ঠকে বলেন, গ্রাহকদের ভোগান্তি কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এতে সময় ও শ্রম দুটিই কম হবে। শিগগিরই এসব বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পদক্ষেপ নেবে।
সূত্র মতে, ব্যাংক হিসাব খোলার সময় ব্যাংকগুলো নিজেদের ইচ্ছামতো গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা জমা রাখে। কোনো কোনো ব্যাংক দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত নতুন হিসাবে টাকা জমা রাখতে গ্রাহককে বাধ্য করে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা না থাকায় ব্যাংকগুলো এ স্বেচ্ছাচারিতা করছে। সরকার গঠিত কমিটি মনে করছে, এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সীমা বেঁধে দিতে পারে না ব্যাংকগুলো। তাই এখন থেকে গ্রাহক ন্যূনতম টাকা জমা রেখে নতুন হিসাব পরিচালনা করতে পারবেন। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংককে মৌখিকভাবে ব্যবস্থা নিতে বলেছে ‘ব্যাংকের ব্যবহৃত ফরমগুলো সহজীকরণের জন্য গঠিত কমিটি’।
বিভিন্ন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট বা হিসাব খুলতে গেলে গ্রাহককে প্রায় ১০০ ধরনের তথ্য দিতে হয়। এ ছাড়া গ্রাহকের ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র লাগে। পাশাপাশি ব্যক্তি চাকরি বা ব্যবসাসংক্রান্ত পরিচয়পত্র, ওয়াসা, বিদ্যুৎ, টেলিফোন বিলের কপি এবং একজন পরিচয় প্রদানকারীর প্রত্যয়ন দিতে হয়। এসবের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই বলে মনে করে কমিটি। এখন থেকে শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ছবি দিয়েই খোলা যাবে ব্যাংক হিসাব। এটি শিগগিরই আদেশ জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক সব ব্যাংককে নির্দেশনা পাঠাবে।
বর্তমানে ব্যাংকঋণ নিতে হলে ১৩ পাতার ফরম পূরণ করতে হয়। ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহককে কেওয়াইসিসহ (নিজের গ্রাহককে জানো) বিভিন্ন কারণে ১০০-এর বেশি তথ্য দিতে হয়। এখন থেকে আর বাহুল্য তথ্য দিতে হবে না। অপ্রয়োজনীয় তথ্য বাদ দিয়ে এটিকে ১৩ পাতা থেকে কমিয়ে ৫ পৃষ্ঠায় নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), সিআইডি, মানি লন্ডারিং এবং জঙ্গি অর্থায়নের বিষয়গুলো মাথায় রেখেই এটিকে পাঁচ পৃষ্ঠা করা হয়েছে।
জানা গেছে, কমিটি সব বিষয়ে একটি সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন তৈরি করে তা অনুমোদনের জন্য কেবিনেটে পাঠাবে। এরপর সেটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দেওয়ার পর তা দেশে কার্যরত সব ব্যাংকে পাঠানো হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
Posted ২:৩০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed