
বিবিএনিউজ.নেট | বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট | 673 বার পঠিত
দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরাশক্তি ভারত ও পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে উভয় দেশের শেয়ারবাজারে। ভারতীয় শেয়ারের পাশাপাশি মান হারিয়েছে রুপি। অন্যদিকে মার্কিন মুদ্রানীতি নিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) প্রধান জেরোমি পাওয়েলের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ এবং যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়া বৈঠকের ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা, যার ফলে মার্কিন বন্ডের পাশাপাশি ডলারও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। খবর ব্লুমবার্গ, রয়টার্স ও দ্য ডন।
চলতি মাসের মাঝামাঝি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলায় প্রায় অর্ধশত ভারতীয় সেনা নিহতের পর পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। হামলার পর পরই পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। পুলওয়ামা হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বিমান হামলাও চালিয়েছে ভারত। এরপর এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের লক্ষ্যবস্তুতে পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান থেকে হামলা চালানোর কথা জনিয়েছে।
মঙ্গলবার বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের এসঅ্যান্ডপি বিএসই সেনসেক্স ১ দশমিক ৪ শতাংশ হারিয়েছে। পাকিস্তানে ভারতীয় যুদ্ধবিমানের হামলার প্রভাবে ডলারের বিপরীতে রুপি দশমিক ৫ শতাংশ মান হারিয়েছে। পাশাপাশি দেশটির সার্বভৌম বন্ডেও পতন দেখা গেছে। তবে ভারতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কম বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। মুম্বাইয়ের ডিবিএস ব্যাংক লিমিটেডের কর্মকর্তা আশিষ বৈদ্য বলেন, ভারতের ওপর খুব বেশি নেতিবাচক প্রভাব না পড়ার অন্যতম কারণ অবশিষ্ট উদীয়মান বাজারগুলো তুলনামূলক ভালো করছে, তেলের দাম ও ইল্ড কম রয়েছে। এ সবকিছু রুপিকে সহায়তা করছে।
এদিকে ভারতীয় যুদ্ধবিমানের হামলার খবরে পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে মঙ্গলবার পাকিস্তানের কেএসই-১০০ সূচক ৭৮৫ দশমিক ১২ পয়েন্ট হারিয়ে ৩৮ হাজার ৮২১ দশমিক ৬৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া গতকাল লেনদেনের প্রথম আধা ঘণ্টায় ১৮৪ পয়েন্ট হারাতে দেখা গেছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দিতে শুরু করেছেন। টানা ৫৫ দিনের লেনদেনের মধ্যে সূচকে সবচেয়ে বড় পতন দেখা গেল বলে বাজার পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন। এছাড়া ৩২ অধিবেশনের মধ্যে প্রথমবারের মতো ৩৯ হাজার পয়েন্টের নিচে নামতে দেখা গেল সূচকটিকে।
যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য বিরোধ নিরসনের আভাসে উদীয়মান বাজারগুলোর শেয়ারবাজারের পূর্বাভাস উন্নত হয়েছে। জাপান ও অস্ট্রেলিয়ায় ইকুইটি সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। একই সময় চীনা ও হংকং শেয়ারদর শিথিল হয়ে পড়েছে।
তবে ফেডারেল রিজার্ভ সুদহার বৃদ্ধি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত বহাল রাখায় ডলার শক্তিশালী হয়েছে। বুধবার বিশ্বের প্রধান ছয়টি মুদ্রা ঝুড়ির বিপরীতে ডলার সূচক ৯৬ দশমিক ১১৩-এ দাঁড়িয়েছে। এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি ডলার সূচক সর্বনিম্ন ৯৫ দশমিক ৯৪৮-এ নেমে যেতে দেখা যায়।
মঙ্গলবার ফেড প্রধান পাওয়েল বলেন, ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি ও সাম্প্রতিক দুর্বল পরিসংখ্যান থেকে চলতি বছর মার্কিন অর্থনীতির জোরালো হওয়ার কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে আরো সুদহার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ফেড ধৈর্য ধরবে।
এদিকে চুক্তিহীন বিশৃঙ্খল ব্রেক্সিট এড়ানোর লক্ষ্যে ব্রিটিশ আইনপ্রণেতারা প্রধানমন্ত্রী টেরিসা মেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগের সময় কিছুটা হলেও পিছিয়ে নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। যার প্রভাবে ডলারের বিপরীতে দুর্বল হয়ে পড়েছে পাউন্ড। মঙ্গলবার পাউন্ডপ্রতি ১ দশমিক ৩২৪৮ ডলার বিনিময় হয়েছে। এর একদিন আগে ডলারের বিপরীতে ১ শতাংশ মান অর্জন করেছিল পাউন্ড।
টানা তিনদিন শক্তি অর্জনের পর মঙ্গলবার ডলারের বিপরীতে মান হারাতে দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ান ডলারকে। এক অস্ট্রেলিয়ান ডলারের বিপরীতে দশমিক ৭১৮২ ডলার বিনিময় হয়।
Posted ১:৩১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed