বিবিএনিউজ.নেট | ২৪ অগাস্ট ২০১৯ | ৩:০২ পিএম
যানজটে ভোগান্তিসহ বিভিন্ন কারণে জনপ্রিয় হচ্ছে বেসরকারি হেলিকপ্টার সার্ভিস। দেশের বড় বড় শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, জরুরি রোগী পরিবহন, বিয়ে থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিং, তৈরি পোশাক খাতের কারখানা পরিদর্শনসহ দ্রুত সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার সুবিধা থাকায় হেলিকপ্টারের ব্যবহার বাড়ছে।
এর বাইরে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো ঢাকা-মাওয়া, ঢাকা-যমুনা সেতুসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় রকমারি প্যাকেজ অফারের মাধ্যমেও হেলিকপ্টার ভ্রমণের ব্যবস্থা রেখেছে। ট্রাভেলিংয়ে জনপ্রতি খরচ কম পড়ায় ভ্রমণপিপাসুদের হেলিকপ্টার সার্ভিসে আগ্রহ বাড়ছে।
গত পাঁচ বছরে প্রাইভেট হেলিকপ্টারের ব্যবসা কয়েকগুণ বেড়েছে। দেশের সড়কপথের বেহাল দশা এবং সময় বাঁচাতে হেলিকপ্টারের চাহিদা বাড়ছে বলে জানিয়েছে সিভিল এভিয়েশন ও হেলিকপ্টার কোম্পানিগুলো। তবে যুগের পরিবর্তনে বর্তমান সময়ে হেলিকপ্টারের চাহিদা বাড়ায় অনেক কোম্পানি হেলিকপ্টার সার্ভিসের সঙ্গে যুক্ত হতে সিভিল এভিয়েশনে আবেদন করছে। তবে এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যায়নি সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।
সিভিল এভিয়েশনের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে ৯ কোম্পানির ৩১টি হেলিকপ্টার রয়েছে। এর মধ্যে বসুন্ধরা এয়ারওয়েজের রয়েছে চারটি হেলিকপ্টার, মেঘনা এভিয়েশনের ৪টি, আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশনের সাতটি, স্কয়ার এয়ারের তিনটি, সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইন্সের ছয়টি, পারটেক্স এভিয়েশনের দুটি, আইরো টেকনোলজিসের দুটি, বাংলা ইন্টারন্যাশনালের দুটি ও বিআরবি এয়ারের একটি। এছাড়া আরও একটি কোম্পানি ‘বিসিএল এভিয়েশন’ নতুন যুক্ত হলেও তাদের কার্যক্রম শুরু হয়নি।
কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হেলিকপ্টার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে হেলিকপ্টারে ভ্রমণের জন্য প্রতি ঘণ্টায় (ফ্লাইং আওয়ার) ৫০ হাজার থেকে এক লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ নিচ্ছে। কোথাও যাত্রাবিরতি (গ্রাউন্ড ওয়েটিং) করলে প্রতি ঘণ্টায় মাশুল দিতে হয় ছয় থেকে ৯ হাজার টাকা। এসব মাশুলের সঙ্গে সম্প্রতি পাস হওয়া বাজেটে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন করও (মূসক) আরোপ করা হয়েছে। তবে যে এলাকায় হেলিকপ্টার যাবে, তার ওপর ভাড়া কিছুটা কম-বেশি হতে পারে। এছাড়া কোম্পানিগুলোর মানের ওপর ভাড়ার হার নির্ভর করে। অর্থাৎ একই এলাকায় একেক কোম্পানির ভাড়া ভিন্নরকম হতে পারে। তবে কেউ হেলিকপ্টার ভাড়া নিলে ন্যূনতম এক ঘণ্টার জন্য নিতে হয়।
তথ্যমতে, বর্তমানে স্কয়ার এয়ারের ছয় আসনের হেলিকপ্টারগুলো সাধারণ কাজের জন্য ভাড়া প্রতি ঘণ্টার জন্য এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা। এর সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। কিন্তু এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের জন্য প্রতি ঘণ্টায় ৯০ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয় এবং সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। এছাড়া ভূমিতে অপেক্ষমাণ চার্জ প্রতি ঘণ্টার জন্য ছয় হাজার টাকা, সঙ্গে ১৫ শতাংশ ট্যাক্স।
সাউথ এশিয়ানের তিন আসনের এয়ারলাইনস সাধারণ কাজের জন্য হেলিকপ্টার ভাড়া প্রতি ঘণ্টার জন্য ৫৫ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু সিনেমার শুটিং, লিফলেট বিতরণসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক কাজের জন্য ভাড়া ৩০ শতাংশ বেশি। এছাড়া ভূমিতে অপেক্ষমাণ চার্জ প্রথম ঘণ্টার জন্য তিন হাজার টাকা এবং পরবর্তী প্রতি ঘণ্টার জন্য পাঁচ হাজার টাকা। এছাড়া পুরো খরচের ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হয়। এসব ভাড়ার ক্ষেত্রে জ্বালানি খরচ, ইন্স্যুরেন্সসহ বাকি সবকিছু কোম্পানিই বহন করে।
সিভিল এভিয়েশনের ফ্লাইট অপারেশন বিভাগ জানায়, দেশের আকাশপথে হেলিকপ্টার ব্যবহারে সরকারের নীতিমালার ভিত্তিতে ১০ প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। একটি এয়ারলাইনস সংস্থার লাইসেন্স পেতে যা যা দরকার, হেলিকপ্টারের লাইসেন্স পেতেও একই নিয়ম-কানুন। এনওসি, হেলিকপ্টার ইন্সপেকশন, অফিস ইন্সপেকশন, পাইলট, ক্রু লাইসেন্স ভেরিফিকেশন, ম্যানেজমেন্টের সক্ষমতা সবকিছু যাচাই-বাছাই করার পর এয়ার ওয়ার্দিনেস সার্টিফিকেট (এওসি) দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে সর্বপ্রথম সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইনস নামে একটি কোম্পানি বাণিজ্যিক লাইসেন্স নিয়ে এ ব্যবসা শুরু করে।
বাংলাদেশ সময়: ৩:০২ পিএম | শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed