রবিবার ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি প্রাণের

বিবিএনিউজ.নেট   |   মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   661 বার পঠিত

মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি প্রাণের

মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির অভিযোগ উঠেছে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান প্রাণ গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান প্রাণ এক্সপোর্ট লিমিটেডের বিরুদ্ধে। মূলত সরকারের প্রাপ্য রাজস্ব কম দিতে এইচএস কোড জালিয়াতি করা হয়েছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।

জানা যায়, প্রাণ এক্সপোর্ট লিমিটেড যে পণ্য আমদানি করেছে, সেটির সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ১৫০ শতাংশ। কিন্তু এ শুল্ক ২০ শতাংশ হারে পরিশোধের লক্ষ্যে অন্য একটি পণ্যের এইচএস কোড ব্যবহার করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রাণের আমদানি করা পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের শুল্ক-কর মিলে পণ্যের দামের অনুপাতে মোট ২৮৯ দশমিক ২১ শতাংশ (টিটিআই) রাজস্ব পরিশোধ করার কথা। এতে মোট রাজস্বের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৬৬ লাখ ৪৭ হাজার টাকার মতো। কিন্তু এইচএস কোড জালিয়াতি করে এ রাজস্ব দেখানো হয়েছে মাত্র ৮৯ দশমিক ৪২ শতাংশ। ফলে কোম্পানিটির রাজস্ব ফাঁকির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৩৮ লাখ ২৯ হাজার টাকা।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ সূত্রে জানা যায়, নেদারল্যান্ডস থেকে মল্ট কম্পাউন্ড আমদানির ঘোষণা দেয় প্রাণ এক্সপোর্ট লিমিটেড। গত ১০ এপ্রিল সে পণ্য বন্দরে পৌঁছে। কিন্তু দেশে আসার পর রাসায়নিক পরীক্ষায় জানা যায়, প্রাণের আমদানি করা ওই ১১ হাজার টন পণ্য ছিল প্রকৃতপক্ষে নন-অ্যালকোহলিক বিয়ার। এক্ষেত্রে দুটি পণ্যের এইচএস কোড আলাদা। মল্ট কম্পাউন্ডের এইচএস কোড নম্বর ১৯০১৯০৯৯। আর নন-অ্যালকোহলিক বিয়ারের এইসএস কোড নম্বর ২২০২৯১০০। এ দুটির সম্পূরক শুল্কহারে বিস্তর ব্যবধান। বাংলাদেশে নন-অ্যালকোহলিক বিয়ার আমদানি নিষিদ্ধ না হলেও শুল্কহার অনেক বেশি। মূলত সম্পূরক শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার লক্ষ্যে কোম্পানিটি ভুল এইসএস কোড প্রদর্শন ও মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে মল্ট কম্পাউন্ডের আড়ালে নন-অ্যালকোহলিক বিয়ার আমদানি করেছে বলে কাস্টমসসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

তবে প্রাণ এ ধরনের আমদানির সঙ্গে কখনও সংশ্লিষ্ট নয় বলে দাবি করেছেন প্রাণ আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসান খান চৌধুরীর। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাণ এ ধরনের কোনো পণ্যের ব্যবসা করে না। আপনাকে যদি কেউ তথ্য দিয়ে থাকে, সেটা ভুল দিয়েছে, অথবা কাস্টমস দিয়ে থাকলেও সঠিক দেয়নি। প্রাণ কোমল পানীয়র ব্যবসা করে। কোন ধরনের বিয়ারের ব্যবসা করে না। যদিও আমার হাতে এ রিপোর্ট নেই। রিপোর্ট হাতে থাকলে বলতে পারতাম কী সমস্যা হয়েছে। আমার জানামতে, প্রাণ এ ধরনের কোনো কাজ করেনি।

বিল অব এন্ট্রি অনুযায়ী ১১ হাজার মেট্রিক টন পণ্যের আমদানির মূল্য দেখানো হয়েছে ২৩ হাজার ৪৩৫ ইউরো, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২১ লাখ ১০ হাজার টাকা। এ মূল্যের ওপর ২৫ শতাংশ হরে সাধারণ শুল্ক ও ২০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক দেখিয়েছে প্রাণ। এছাড়া তিন শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি), ১৫ শতাংশ ভ্যাট, পাঁচ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি), চার শতাংশ অগ্রিম বাণিজ্য ভ্যাটসহ (এটিভি) মোট টিটিআই দেখানো হয়েছে ৮৯ দশমিক ৪২। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যে পণ্য আমদানি করা হয়েছে তার সম্পূরক শুল্ক ১৫০ শতাংশ। এ হিসাবে মোট সম্পূরক শুল্ক আসার কথা ৪৪ লাখ ১৬ হাজার টাকা, কিন্তু কোম্পানিটি মাত্র পাঁচ লাখ ৮৭ হাজার টাকা এসডি দিয়ে পণ্য ছাড় করার পরিকল্পনা করেছিল বলে কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট শাখার দায়িত্বে থাকা উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শাহিনুর কবির পাভেল বলেন, আমার কাছে এ বিষয়ে এখনও কোনো ফাইল আসেনি। তাই বিস্তারিত জানাতে পারছি না। তবে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনার কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য এলে রাসায়নিক পরীক্ষায় ধরা পড়বে। ঘোষণাবহির্ভূত কিছু এলে কাস্টমসের আইন অনুযায়ী সঠিক এইচএস কোড মোতাবেক শুল্ক আদায় করার পাশাপাশি জরিমানাও
করা হবে।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১২:১৮ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11457 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।