নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | প্রিন্ট | 88 বার পঠিত
জুলাই মাস থেকে মেট্রোরেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট আরোপের তীব্র বিরোধিতা করছে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন গবেষণা এবং নীতি বিশ্লেষণী প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)।
তারা বলছে, মেট্রোরেলে ১৫ শতাংশ ভাড়া বেড়ে গেলে মেট্রোরেল ব্যবহারকারী ঢাকার স্বল্পবিত্ত ও মধ্যবিত্তের অনেকের জন্য মেট্রোরেলের নিয়মিত ব্যবহার সাধ্যের বাইরে চলে যেতে পারে। তাই ঢাকার ধনী-গরিবের গণপরিবহন মেট্রোরেলে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি করেছে আইপিডি।
রোববার (৭ এপ্রিল) আইডিপি পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান ও নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
মেট্রোর লাইনের উপরের তার সরাচ্ছেন ক্যাবল-ইন্টারনেট অপারেটররা
তারা বলেন, ঢাকা শহরে মেট্রোরেলের বিদ্যমান ভাড়া এশিয়ার অন্য অনেক দেশের তুলনায় এমনিতেই বেশি। ভারতের কলকাতা, পাকিস্তানের লাহোর, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর প্রভৃতি মেট্রোরেলে চলাচলের ব্যয় বাংলাদেশের মেট্রোরেলের বর্তমান ভাড়ার তুলনায় কম। তথাপি পিক আওয়ারে ঢাকার মেট্রোরেলে যাত্রীর বর্তমান চাহিদা ও মাত্রাতিরিক্ত চাপ দেখে বিভ্রান্ত হওয়ার সুযোগ নেই যে মেট্রোরেলের বর্তমান ভাড়া মানুষের নিয়মিত যাতায়াতের সাধ্যের মধ্যেই আছে। ঢাকায় মানসম্মত গণপরিবহনের তীব্র সংকট এবং মাত্রাতিরিক্ত যানজটের কারণে অনেক সাধারণ মানুষ দৈনন্দিন অন্য ব্যয় থেকে কাটছাঁট করেই সাধ্যের অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে মেট্রোরেলে নিয়মিত যাতায়াত করছেন। উত্তরা-মতিঝিলের মধ্যবর্তী রুটের অনেক স্বল্প আয়ের লোকেরা বিদ্যমান ভাড়াতেই মেট্রোরেল চড়ার সামর্থ্য না থাকায় একান্ত বাধ্য হয়েই এই রুটের মানহীন বাসে চলাচল করছেন।
বিবৃতিতে আইপিডি বলেছে, মেট্রোরেলের যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা দৈনিক ৫ লাখ হলেও এখন ঢাকায় প্রায় ৩ লাখ যাত্রী এটি ব্যবহার করছে। ফলে এখনো সক্ষমতার পুরো মাত্রায় মেট্রোরেলের ব্যবহার করতে পারছি না আমরা। এ অবস্থায় মেট্রোরেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব এটির ব্যবহারকে সংকুচিত করতে পারে। রাজধানী ঢাকার মতো মেগা সিটিতে যাতায়াত ও পরিবহনে মানসম্মত গণপরিবহন ব্যবস্থার সুযোগ মানুষের অন্যতম অধিকার। এসডিজির ধারণায় অন্যতম হচ্ছে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নগর যেখানে পরিষেবা ও নাগরিক সুবিধা সব আয়ের মানুষের সাধ্যের মধ্যে রাখাই রাষ্ট্রের অন্যতম লক্ষ্য। ফলে মেট্রোরেলের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উচিত বিদ্যমান মূল্য সংযোজন কর মওকুফ সুবিধা অব্যাহত রাখা। মেট্রোরেলে ভ্যাট বসাতে এনবিআরের প্রদেয় যুক্তি ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুসারে সব ধরনের করছাড় কমাতে হবে’ যথার্থ নয় এবং অগ্রহণযোগ্য। মেট্রোরেলের মতো গণপরিবহনে আইএমএফের নীতির অতি সরলীকরণ ও অপপ্রয়োগ একেবারেই কাম্য নয় বলে মনে করে আইপিডি।
এতে বলা হয়, দেশের ৮৭ শতাংশ ধনী এবং উচ্চ-মধ্যবিত্ত নাগরিক আয়কর দেন না বলে সম্প্রতি জানিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। ধনী-গরিবের গণপরিবহন মেট্রোরেলে ভ্যাটের মতো পরোক্ষ কর বসিয়ে রাজস্ব আদায় না করে ধনীদের আয়করের মতো প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করে আইপিডি। একইসঙ্গে মেট্রোরেলের ভাড়া সাধ্যের মধ্যে রাখতে গণমানুষের সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এবং এনবিআরের মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ের মাধ্যমে মেট্রোরেলের সাশ্রয়ী ভাড়া নিশ্চিত করার দাবির পাশাপাশি মেট্রোরেলে ভর্তুকি কমানোর বিকল্প কৌশল অনুসন্ধানের দাবি জানাচ্ছে জানাচ্ছে আইপিডি।
Posted ৮:২৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৪
bankbimaarthonity.com | rina sristy