• রাজধানীতে পোশাক ব্যবসায়ীদের মন ভাল নেই

    আদম মালেক | ০১ জুন ২০১৯ | ৪:১০ পিএম

    রাজধানীতে পোশাক ব্যবসায়ীদের মন ভাল নেই
    apps

    ঈদ উপলক্ষ্যে রাজধানীতে পোশাকের বাজারে মন্দাবস্থা বিরাজ করছে। দোকানগুলোতে গ্রাহকের আনাগোনা গেলবারের তুলনায়। ব্যবসায়ীরা অলস সময় কাটাচ্ছে। তাদের মন ভালো নেই।

    ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, গেল ঈদ-উল-ফিতরের তুলনায় এবারের ঈদে পেশাক বিক্রি অনেক কম। কোনো কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিক্রির পরিমান এক তৃতীয়াংশেরও কম। সার্বিক মন্দা অর্থনীতি, পোশাকের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, মাস শেষে ঈদের আগমনে চাকরীজীবিদের বেতন না পাওয়াকে পোশাক বিক্রি কম হওয়ার কারণ বলে মনে করছেন অনেক ব্যবসায়ী। আবার কোনো কোনো মার্কেটের পাশে মেট্রোরেল নির্মাণ কাজ চালু থাকায় সেখানে গাড়ি চলাচল বন্ধ। তাই গ্রাহকের উপস্থিতি কম।

    এদিকে বিক্রি বাড়াতে পোস্টার ব্যানার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণার আশ্রয় নেয় ব্যবসায়ীরা। গ্রাহক টানতে মূল্য ছাড় দেয়। কিন্তু কোনো চেষ্টা তদবির তেমন কাজে আসছে না। ফলে তাদের মাঝে এক ধরনের নিরাশা। মোকামের বকেয়া কিভাবে পরিশোধ করবেন তা নিয়েও অনেকে সন্দিহান। আজ রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে এ চিত্র পাওয়া যায়।

    কাওরান বাজার সুপার মার্কেটে পোশক বিপনী প্রতিষ্ঠান হালিমা ফ্যাশন। এ দোকনে বিক্রয় কর্মী রফিকুল ইসলাম বলেন, বেচা কেনা নেই। অনেক কমে গেছে। বিক্রির পরিমান গত ঈদের তুলনায় এক তৃতীয়াংশ কম। আগে যেখানে এক থেকে সোয়া লাখ টাকা বিক্রি হতো এখন বিক্রির পরিমান ৪০ হাজার টাকারও কম। মাল কিনি অল্প করে যাতে মওজুদ না বাড়ে।


    হতাশা প্রকাশ করেন ফার্মভিউ সুপার মার্কেটের রাজিব শাড়ি এন্ড বেডিং স্টোরের মো. মোরশেদ আলম। তিনি বলেন আমরা বসে বসে মাছি মারছি। মেট্রোরেলের কারণে গাবতলী ফার্মগেটে বিআরটিসি ছাড়া কোনো গাড়ি আসতে পারে না। তাছাড়া কাওরান বাজার ও খামার বাড়িতে দুটি বস্ত্র মেলা চলছে। এসব কারণে আমাদের বেচাকেনা আগের তুলনায় কম।

    পাশে সিজান পয়েন্ট মার্কেটের বেচাকেনার চিত্রও অভিন্ন। সেখানেও ব্যবসায়ীদের মাঝে তেমন উচ্ছ¡াস নেই। বিক্রি আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে বলে তাদের দাবি। এ মার্কেটের লেবাস গ্যালারীর মো. জসিমউদ্দিন জানান। আমরা ভালো নেই। গ্রাহক মাল কিনতে চায় না। আমাদেরকে বেশী দামে মাল কিনতে হয়। তাই বিক্রিও করতে হয় বেশী দামে। প্রতিটি পোশাকে আমাাদের ক্রয় মূল্য ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়ে। কোনো কোনো পোশাকের ক্ষেত্রে আরও বেশী। তাই গ্রাকহ দোকানে আসলেও দাম শুনে সরে পড়ে।

    চাঁদনী চক মাকেটের ‘লিবাস শো-রুম’ এর সিনিয়র কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন ফিরোজ বলেন,এবারের লাভ দিয়ে কর্মচারীদের বেতন-বোনাস হবে না। কীভাবে ব্যবসা চালাব সেটাই ভাবছি। গত ১০ বছরের মধ্যে এত খারাপ বেচাকেনা আর কখনোই হয়নি। মোকামে কাপড়ের যে পরিমাণ দাম বেড়েছে তাতে আমাদের দাম চাইতেই খারাপ লাগে। যে থ্রি পিচ গত বছর এক থেকে দেড় হাজার টাকা বিক্রি করেছি সেই থ্রি পিচ এখন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা বিক্রি করতে হয়।

    তিনি বলেন, কেমিক্যালের কারখানা বন্ধ করার জন্য কাপড়ের রং ও অন্যান্য খরচ বেড়েছে বলে তারা কাপড়ের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। গত বছর যে থ্রি পিস এক থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করেছি সেই থ্রি পিস এখন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা বিক্রি করতে হয়। দাম শুনলেই কাস্টমাররা দৌড়ে পালায়। নরসিংদী ও বাবুরহাট হলো আমাদের মূল মোকাম। সেই মোকামেই কাপড়ের দাম বেশি করেছে। যে কারণে ভরা ঈদ মৌসুমেও আমরা ব্যবসা চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।

    পাশের শো-রুম ‘নিউ হ্যাভেন ফ্যাশন’। এ শো-রুমের কর্মচারী মো. রফিকুল বললেন, বেচাবিক্রি এত খারাপ যে পার্টি বিদায় করতে পারছি না। আমাদের শো-রুম ফিক্সড প্রাইসের। তারপরও বিক্রি বাড়ানোর জন্য ১০ থেকে ১৫ ভাগ কমিশন দেয়া হয়েছে। কিন্তু কাস্টমার পাচ্ছি না।

    গত বছরও এমন সময় জমজমাট ব্যবসা ছিল। রমজান প্রায় শেষ এখনো ঈদের বেচাকেনা শুরুই করতে পারলাম না-হতাশার সুরে বললেন তিনি।

    Facebook Comments Box

    বাংলাদেশ সময়: ৪:১০ পিএম | শনিবার, ০১ জুন ২০১৯

    bankbimaarthonity.com |

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    শেখ হাসিনা মিউনিখের পথে

    ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

    November 2023
    S S M T W T F
     123
    45678910
    11121314151617
    18192021222324
    252627282930  
  • ফেসবুকে ব্যাংক বীমা অর্থনীতি