বুধবার ১৪ মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

Ad
x

রাজস্ব প্রশাসনে বড় ধরণের সংস্কারের পদক্ষেপ

  |   সোমবার, ২১ জানুয়ারি ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   901 বার পঠিত

রাজস্ব প্রশাসনে বড় ধরণের সংস্কারের পদক্ষেপ

ব্যাংকিং, রাজস্ব খাতসহ সার্বিক অর্থনীতির নানা সমস্যা চিহ্নিতকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যাতে করে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এসব সমস্যা কিংবা বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলা করা যায়। জানা গেছে, অর্থমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর আহম মুস্তফা কামাল ব্যাংকিং ও রাজস্ব খাতসহ সংশ্লিষ্ট দফতর প্রধানদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করছেন। বিগত সময়ে খাতগুলোর নানা অসামঞ্জস্যগুলো দূর করাই তার মূল লক্ষ্য। সে লক্ষ্যে তিনি প্রয়োজনীয় ‘হোমওয়ার্ক’ও সম্পন্ন করেছেন। এখন বিদ্যমান সংকট ও সম্ভাবনাগুলো অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া চলছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত দশ বছরে বাংলাদেশের আর্থিক খাত ছিল ঘটনাবহুল। এসময়ে শেয়ার কেলেংকারি থেকে শুরু করে হলমার্ক, বিসমিল্লাহ, অ্যাননটেক্স, ফারমার্স, বেসিক ব্যাংকে ঋণ কেলেংকারির ঘটনা ঘটে। বেড়ে যায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ। বর্তমানে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের হার মোট বিতরণকৃত ঋণের সাড়ে ১১ শতাংশ। যেখানে এই হার প্রতিবেশী দেশ ভারতে ৭ এবং নেপালে ২ শতাংশ। অর্থমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণের পরই খেলাপি ঋণ যাতে না বাড়ে সে ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

জানা গেছে, কেন খেলাপি ঋণ বাড়ছে, ইচ্ছেকৃত ও অনিচ্ছাকৃত খেলাপি, ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্ক ইত্যকার বিষয়গুলো নিয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। এমনকি ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনের বিষয়টিও সামনে এসেছে। ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ব্যাংক কোম্পানি আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধনসহ আনুষঙ্গিক অসমামঞ্জস্যগুলো দূর করার জন্য একটি কমিশন গঠনেরও প্রক্রিয়া চলছে। এর সমন্বয় করবেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগের একজন পদস্থ কর্মকর্তা।

সূত্র জানায়, ব্যাংকিং খাতে দু’ধরণের খেলাপি গ্রাহক রয়েছে। এরমধ্যে ইচ্ছেকৃত ও অনিচ্ছাকৃত খেলাপি রয়েছে। জ্বালানি সংকট ও আনুষঙ্গিক সেবা সুবিধার অভাবে কেউ কেউ খেলাপি হচ্ছেন। তাদের ওপর দন্ডসুদ চাপিয়ে দেওয়া হলেও ইচ্ছেকৃত খেলাপিরা দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ ‘বিশেষ সুবিধা’ নেয়ার পরও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেননি। তবে নতুন অর্থমন্ত্রীর কড়া মন্তব্যের পর ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে কেউ কেউ সুদে বড় ছাড় নিয়ে হিসাব নিয়মিত করছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ হারও খেলাপি হওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে। বিশেষত ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাত, ভোক্তা পর্যায়ে সুদ বেশি আরোপ করা হচ্ছে। কিস্তি পরিশোধে বিলম্বের কারণে দন্ড সুদ আরোপিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ব্যবসা করছে, কিন্তু পরিস্থিতির শিকার হয়ে ব্যাংকের কিস্তি পরিশোধ করতে বিলম্ব হচ্ছে, এমন গ্রাহকরা দন্ড সুদে আরো বেকায়দায় পড়ে যাচ্ছেন। অথচ ইচ্ছেকৃত খেলাপিদের সুদ মওকুফসহ নানা সুবিধা দেওয়ার পরও তারা নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করছে না। প্রকারান্তরে সিঙ্গেল ডিজিট সুদ হারও কার্যকর হচ্ছে না।

এদিকে ব্যাংকিং খাতের ন্যায় রাজস্ব প্রশাসনেও বড় ধরণের সংস্কার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) শক্তিশালী করা এবং রাজস্ব আয় বাড়ানোর প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। রাজস্ব প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা এক শ্রেণির ‘সন্দেহভাজন’ কর্মকর্তাদের চিহ্নিতকরণ, প্রস্তাবিত ভ্যাট আইন, শুল্ক কাঠামো প্রভৃতি বিষয়ে সম্ভাব্য পরিবর্তন কিংবা পর্যালোচনার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। গত ছয় মাসে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পিছিয়ে থাকায় সামনের দিনগুলোতে আদায় বাড়াতে প্রয়োজনীয় কৌশল কি হতে পারে— সে বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন কোম্পানি কিংবা খাতে দেওয়া বিশেষ ‘সুবিধা’গুলো সার্বিক অর্থনীতিতে কি ধরণের ভূমিকা রাখছে তাও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। রাজস্ব আদায় কম হওয়ার এটিও একটি কারণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।

সূত্রমতে, বিশেষ পছন্দে বছরের পর বছর কোন কোন খাতে বড় ধরণের ভ্যাট-ট্যাক্স অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা এবং আদায় বাড়াতে আরও কি ধরণের উদ্যোগ নেয়া যায়, সে উপায় বের করা হবে। সার্বিকভাবে উচ্চ প্রবৃদ্ধির একটি সুষম অর্থনীতি গড়ে তোলার প্রয়াসেই নতুন পদক্ষেপ নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।

Facebook Comments Box

Posted ৩:৫২ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২১ জানুয়ারি ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11671 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।