বিবিএনিউজ.নেট | শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০১৯ | প্রিন্ট | 623 বার পঠিত
প্রবাসীরা বর্তমানে বছরে গড়ে ১৪ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠান। এ পরিমাণ সহজেই ২০ বিলিয়ন করা সম্ভব। তবে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৬০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা প্রয়োজন, যা বিদ্যমান রেমিট্যান্সের চার গুণের বেশি। এছাড়া প্রবাসী বন্ডে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য বলা হয়েছে। এটি অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
প্রবাসীদের রেমিট্যান্স বৃদ্ধি করতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংককে পাঠানো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি চিঠিতে এ কথা বলা হয়েছে। উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ ও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল করতে রেমিট্যান্স আহরণ ৬০ বিলিয়নে উন্নীতের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হয় চিঠিতে বলে সূত্র জানিয়েছে।
এজন্য বেশকিছু পরামর্শও দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। এর মধ্যে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও ইউরোপের প্রবাসী অধ্যুষিত দেশগুলোয় বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর শাখা ও রেমিট্যান্স সংগ্রহের বুথ খোলার ব্যবস্থা করা।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত কয়েক বছরে বর্তমানে গড়ে ১৪ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসছে দেশে। এক গবেষণায় উঠে এসেছে সহজেই ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে এটি ২০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব। প্রবাসীদের ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনার মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। বৈধপথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বলা হয়। বিশেষ করে গ্রিস, সৌদি আরব, আফ্রিকা, কোরিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের রেমিট্যান্স আনতে ব্যাংকিং সেবার পরিধি বৃদ্ধি করার জন্য বলা হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকা, গ্রিস, ফ্রান্স, ওমান, সৌদি আরব ও ইউরোপের দেশগুলোয় প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা থেকে আরও রেমিট্যান্স আনা সম্ভব। এজন্য বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোয় ওইসব দেশের বিভিন্ন এলাকায় আরও শাখা ও এক্সচেঞ্জ হাউজ পরিচালনার অনুমতি দিতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে বলা হয়েছে- দক্ষিণ আফ্রিকা, কোরিয়া, ওমান, মালয়েশিয়াতে দেশীয় ব্যাংকের শাখা ও এক্সচেঞ্জ হাউজ খোলার জন্য। প্রবাসীদের সবাইকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় নিয়ে আসার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া দেশে প্রবাসীদের বিনিয়োগে বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। বর্তমানে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড ও ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন প্রবাসীরা। এসব বন্ডে প্রবাসীদের বিনিয়োগ এক শতাংশের মতো। এটি বৃদ্ধি করা সম্ভব। এজন্য প্রবাসীদের বিনিয়োগ করতে উৎসাহ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, গত অর্থবছরে (২০১৭-১৮) প্রবাসীরা বৈধভাবে ১৪ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। স্থানীয় মুদ্রায় তা এক লাখ ২৩ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা।
বৈদেশিক মুদ্রা তথা রেমিট্যান্স আসায় শীর্ষ দেশ হচ্ছে সৌদি আরব। গত অর্থবছরে দেশটি থেকে দুই দশমিক ৫৯ বিলিয়ন বা ২৫৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। একই সময়ে ওমান থেকে ৯৫ কোটি ৮১ লাখ ডলার, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ১৫ কোটি ৩১ লাখ, ফ্রান্স থেকে ১৩ কোটি ৪৪ লাখ, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৯ কোটি ৬২ লাখ, গ্রিস থেকে তিন কোটি ৯৪ লাখ, জার্মানি থেকে চার কোটি, স্পেন থেকে তিন কোটি ৯৯ লাখ, ব্রুনেই থেকে দুই কোটি ২৫ লাখ ও সাইপ্রাস থেকে এক কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছরে টাকার অঙ্কের হিসাবে রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। প্রবাসী রেমিট্যান্স বৃদ্ধি হলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতি আরও শক্তিশালী হবে, যা আমদানিসহ অন্যান্য বৈদেশিক ব্যয় পরিশোধে সহায়ক হবে।
Posted ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed