বুধবার ১৪ মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

Ad
x

সংশোধিত আইনসহ লোকবল পেলে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে : এফআরসি চেয়ারম্যান

আদম মালেক   |   বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০   |   প্রিন্ট   |   442 বার পঠিত

সংশোধিত আইনসহ লোকবল পেলে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে : এফআরসি চেয়ারম্যান

ক্রমেই বড় হচ্ছে কর্মযজ্ঞের পরিধি। কিন্তু জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে সুশাসন না থাকায় আর্থিক খাতে কাক্সিক্ষত সুফল আসছে না। তবে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং আইনের সংশোধনসহ পর্যাপ্ত লোকবল পেলে এসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যাবে বলে জানিয়েছেন ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ হামিদ উল্লাহ ভূঁইয়া

তিনি বলেন, প্রত্যেক নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিজস্ব সীমার মধ্যে কাজ করে। কিন্তু ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কাজ করতে হয়। এসবের মধ্যে রয়েছে ব্যাংক বীমা আর্থিক প্রতিষ্ঠান এনজিও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানীতে নিবন্ধিত ১ লাখ ৭৪ হাজার কোম্পানী। তবে নিবন্ধিত কোম্পানিসমূহের মধ্যে অন্তত এক লাখ প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ২০০৮ সালে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অর্ডিন্যান্স জারি হয় এবং ২০১৫ সালে তা আইনে পরিণত হয়। আর ২০১৭ সালে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল গঠিত হয়। কাউন্সিল সীমিত কিছু লোকজন নিয়ে কাজকর্ম চালিয়ে আসছে। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় কমপক্ষে ১৫ দিন সময়ের প্রয়োজন। তাই ১৫০ জন লোক চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে তালিকা দিয়েছে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেই লোক নিয়োগ হবে।
এফআরসি চেয়ারম্যান বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু করপোরেট গভর্ন্যান্স সেভাবে উন্নত হয়নি। নতুন লোকবল এলে অন্তত ৮০ জন বার্র্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে কাজ করবে।

তিনি মনে করেন, বিদ্যমান আইনে জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট এসব প্রতিষ্ঠানে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। এই আইনে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। আইনটির মাধ্যমে অনিয়মে জড়িত প্রতিষ্ঠানকে শাস্তির আওতায় আনার কোনো সুযোগ নেই। তাই প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তির শাস্তি নিশ্চিতে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল। ২০১৫ সালে যখন আইন প্রণীত হয়, তখন সংসদ সদস্যদের মধ্যে অনেক ব্যবসায়ী ছিলেন, তাদের বিরোধিতার কারণে প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তি শাস্তির বিধান রেখে আইন হয়নি। এদিকে এ আইনে অনিয়মে জড়িত অডিট ফার্মকে ৫ বছর কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান থাকলেও তাও কার্যকর হচ্ছে না।

এর কারণ হিসেবে হামিদ উল্লাহ ভূঁইয়া মনে করেন, দণ্ড প্রয়োগকারী কর্মকর্তার কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। দীর্ঘদিন পর ফৌজদারি ক্ষমতা প্রয়োগে নির্বাহী পরিচালক নিয়োগ হলেও তিনি এখনো যোগদান করেননি। তবে আগামী ৩ জানুয়ারি তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। এছাড়া অডিট ফার্মের শাস্তি না হওয়ার আরেক কারণ হলো- ফার্মগুলোকে জেল-জরিমানা দিলে প্রতিষ্ঠানগুলোর আপিল করার জন্য এ সেক্টরে কোনো আপিল আদালত নেই। এ মুহ‚র্তে কোনো অডিট ফার্মকে সাজা দেয়া হলে প্রতিষ্ঠানটিকে দেশে বিদ্যমান আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে। এতে মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা বাড়বে। কিন্তু দীর্ঘদিন চেষ্টার পরও কোনো আপিল বোর্ড গঠিত হয়নি।

চেয়ারম্যান দাবি করেন, হিসাব নিরীক্ষায় ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্ট স্ট্যান্ডার্ড (আইএফআরসি-৯) আমরা গ্রহণ করলেও বাংলাদেশ ব্যাংক তা কার্যকরে উৎসাহ দেখাচ্ছে না। যদি বাংলাদেশ ব্যাংক এ নীতি প্রয়োগ করে, তাহলে অনেক ব্যাংকের অতিমূল্যায়িত সম্পত্তি ৩০ শতাংশ হ্রাস পাবে। এসব ব্যাংক পুঁজিবাজারে থাকায় পুঁজিবাজারও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পুঁজিবাজারে অন্যসব কোম্পানির ক্ষেত্রে এ নীতি কার্যকর হলে পুঁজিবাজারে আরো ধস নামবে।

হামিদ উল্লাহ্ ভূ্ইঁয়ার অভিযোগ, হিসাব নিরীক্ষায় আমরা এখনো অনেক কোম্পানির সহযোগিতা পাই না। তারা আমাদের এড়িয়ে যায়। এসবের মধ্যে বীমা কোম্পানিগুলো শীর্ষে। কোম্পানিগুলোর কাছে বার্ষিক প্রতিবেদন চাইলেও তারা দেয় না। তবে আমরা সকল নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাথে সমন্বয় করে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চাই। এ প্রতিষ্ঠানটি সরকার নির্ধারিত কর্মপরিধিতে আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন হামিদ উল্লাহ্ ভূঁইয়া।

Facebook Comments Box

Posted ১:১৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11672 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।